শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে চরাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ

মো. রফিকুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে চরাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ

মাসের পর মাস চিকিৎসক না থাকায় চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চরাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষ। যথাযথ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চলছে চরম অরাজকতা। এতে চরাঞ্চলে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। চরাঞ্চলে উপেক্ষিত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও। সরকার সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়নের স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে তুলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছেন এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে দুই-তিন বছর কাজ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর, সুন্দরপুর, দেবীনগর, চরবাগডাঙ্গা, নারায়ণপুর, আলাতুলী, শাহজাহানপুর এবং শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকরা যোগদানের পর প্রেষণে জেলা সদর হাসপাতালে, কেউবা ছুটি নিয়ে বা কর্মস্থলে না গিয়ে মাস গেলেই বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন। আর স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চরাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহজাহানপুর ও চরবাগডাঙ্গা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা ঝুলতে দেখা যায়। মাঝে-মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ওবাইদুল হক ও মাকসুদা নূর অফিসে গিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসেন এমন অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম জানান, উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বিষয়টি বারবার জানালেও চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিয়মিত হয়নি। চরবাগডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান ওমর আলী জানান, এখানকার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইচ্ছা ও খেয়াল খুশিমতো অফিস করেন। ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হন দরিদ্র মানুষ। এদিকে সদর উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা অফিসার ডা. আবদুর রাজ্জাক জানান, লোকবলের অভাব ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে চরাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবার মনিটরিং কাজে কিছুটা বিঘœ ঘটছে। তবে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরতরা অর্থের বিনিময়ে তদবির করে চরাঞ্চল ছেড়ে শহরে চলে যাওয়ায় চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।  এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. মো. আলাউদ্দিন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে লোকবল ও চিকিৎসক সংকট থাকায় জরুরি চিকিৎসা চালিয়ে যেতে কয়েকজন মেডিকেল অফিসারকে সাময়িকভাবে এখানে আনা হয়েছে। তবে অন্যান্য পদে কর্মরতদের ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত না যাওয়ার বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। অন্যদিকে পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডা. আবদুস সালাম জানান, চরাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। আর লোকবলের অভাবে কার্যকর করা যাচ্ছে না মনিটরিং ব্যবস্থা।

সর্বশেষ খবর