‘বসুন্ধরার বুকে এই বরষাধারা’, ‘তোমার দিল কি দয়া হয় না’, ‘চঞ্চল মন আমার শোনে না কথা’- এ ধরনের গানে গানে ঝড় তুললেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত বাউল পবন দাস। মঞ্চ থেকে ভেসে আসছে পবন দাস বাউলের সুরের জাদু আর আর্মি স্টেডিয়ামের দর্শক-শ্রোতাদের মাঝে চলছে নৃত্যের উম্মোদনা। করতালি আর নাচের উম্মোদনার মধ্য দিয়ে এই শিল্পীকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন দর্শক-শ্রোতারা। ৬০ হাজার দর্শক-শ্রোতাকে সুরের মূর্ছনায় দোলায়িত করছিলেন উপমহাদেশের বিখ্যাত এই বাউল। গানের ব্যাকরণ জানে না দর্শক-শ্রোতারা, বোঝে না সরগম, উদারা, মুদারা, তারা। জানে না তাল, লয়, মান, মাত্রা, সমফাঁক, রাগ আর খেয়ালের খেলা। জানে শুধু সুরের লহরীতে উম্মোদ হতে। সুরের সুধায় উম্মোদ হওয়ার আগ্রহ বাঙালির চিরন্তন। রক, জ্যাজ, ব্ল–জ, হিপহপের উম্মোদনা যখন সারা বিশ্বকে কাঁপিয়ে তুলছে ঠিক তখনই রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে নিজের গানে নিজেকে খুঁজে ফেরার পালা। মাটির সুরে, প্রাণের সুরের খেয়ালে অবগাহিত হওয়ার অঘোষিত প্রতিযোগিতা। শিকড়ের টানে আর আনন্দের চেয়ে কোনো উচ্ছ্বাস থাকতে পারে না। আর পবন দাস বাউল মঞ্চে আসার পর সে উল্লাসের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়।
মাছরাঙা টেলিভিশন ও সান ইভেন্টসের আয়োজনে শুরু হওয়া রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট, আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব, ২০১৫’-এর গতকাল দ্বিতীয় রাতের আসরে দর্শক-শ্রোতা তথা সংগীতপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস, উল্লাস আর উম্মোদনায় এমনটাই লক্ষ্য করা গেছে। ছুটির দিন হওয়ায় বিভিন্ন স্থান থেকে বিকাল থেকেই ছিল দর্শক-শ্রোতার উপচেপড়া ভিড়। আবালবৃদ্ধবনিতার প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে এক মহামিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল এ আসর। পবন দাস বাউলের পরিবেশনা শেষে মঞ্চে আসেন বাংলার ফোকসম্রাজ্ঞী খ্যাত শিল্পী মমতাজ। মঞ্চে আরও পরিবেশনা নিয়ে আসেন আয়েশা জেবীন দিপা, বিউটি খাতুন, দিতি সরকার, মরিয়ম আখতার কণা ও মাসুমা সুলতানা সাথী। এর আগে দ্বিতীয় রাতের আসরের উদ্বোধন করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ। আজ শেষ হবে এ ফোক ফেস্টিভ্যাল।