বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
কঠোর নিরাপত্তায় চট্টগ্রাম কারাগার

৩২ নম্বর সেলে জেএমবি প্রধানসহ ৬০ জঙ্গি

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

দুর্ধর্ষ ও স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কারাবন্দী জঙ্গি সদস্যদের। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ৩২ নম্বর সেলের বন্দী জেএমবি প্রধান জাবেদ ইকবালসহ ৬০ জনের প্রতি রয়েছে কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারি। এদের মধ্যে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ১৭, হুজির ৬, হিজবুত তাহরীর ১৮ ও হামজা ব্রিগেডের ১৯ জন রয়েছে। জঙ্গি গ্রুপ হামজা ব্রিগেডে অর্থায়নের অভিযোগে ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানাসহ তিন আইনজীবীও রয়েছেন। তিনি রয়েছেন মহিলা ওয়ার্ডে। এর মধ্যে ১৯৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি জেএমবি নেতা কক্সবাজারের জাবেদ ইকবাল ওরফে মোহাম্মদ ওরফে আমান উল্লাহ ওরফে আবু হুরবার রয়েছে। এ ছাড়া হেফাজত ইসলামের নেতা মুফতি ইজাহার ও হারুন ইজহারও রয়েছেন।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, কারাগারে জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে রয়েছে হামজা ব্রিগেড সদস্য ১৯ জন (অর্থায়নের অভিযোগে আইনজীবী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানাসহ তিন আইনজীবী), জেএমবি সদস্য-১৭ জন, হিজবুত তাহরির-১৮ জন ও হুজির ৬ জন। সবাই রয়েছে ৩২ নম্বর সেলের মধ্যে। তিনি বলেন, সেল এলাকায় দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও কর্মচারী ছাড়া সাধারণ বন্দীদের যাতায়াতে বিধি-নিষেধ রয়েছে। তাদের স্বজনদের দেখাশোনা করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সাধারণ বন্দীদের মতো ইচ্ছে করলে যে কেউ জঙ্গি সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ নেই। ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানাকে রাখা হয়েছে মহিলা ওয়ার্ডে। তবে কারাগারের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে কঠোর নজরদারি ও প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। এতে ভিতরে ও বাইরে রয়েছে অতিরিক্ত প্রহরাও। কারাগার সূত্রে জানা গেছে, হামজা ব্রিগেড, জেএমবি সদস্য, হিজবুত তাহরির সদস্য ও হুজির ৬০ জন সদস্য কারাগারের ৩২ নম্বর সেলের বিভিন্ন ফ্লোরে কড়া নজরদারিতে রয়েছে। আসামিদের মধ্যে রয়েছে শত বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাতক্ষীরার শামীম হোসেন গালিব, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সীতাকুণ্ডের আইয়ুব আলী ও ঠাকুরগাঁওয়ের শাহাদাৎ আলী ওরফে শাহাদাৎ হোসেন ওরফে মাসুম বিল্লাহ। স্বাভাবিকভাবে কারাবন্দী জঙ্গি সদস্যদের ওপর আলাদাভাবে নজর রাখা হয়। তাদেরকে সাধারণ বন্দীদের ওয়ার্ডে রাখা হয়নি। কারাগারে থাকা জেএমবি, হুজি ও হিজবুত তাহরীর সদস্যদের জঙ্গি সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের ওপর রাখা হয় বিশেষ নজর। কারাগারের ৩২ সেলে ভাগ করে রাখা আরও জঙ্গি সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন জেএমবি নেতা জাবেদ ইকবাল, শাহাদাত আলী, শামীম হোসাইন, মোশাররফ হোসাইন, সাফিজুর রহমান, খোরশেদ আলম, আরিফুল আলম, মাসুম বিন আবদুল হাই, এরশাদ হোসাইন ও ওবাইদুর রহমান। হরকাতুল জিহাদের (হুজি) সদস্যদের মধ্যে আছেন আবুল কালাম, আবদুল্লাহ আল মামুন, মাহফুজুর রহমান অপু, আল ফারাহ রুম্মান, সালেহ উদ্দিন ও মনির হোসাইন। হিজবুত সদস্যদের মধ্যে আছেন রাজু খন্দকার ওরফে রাজু, হাবিবুন নবী, আশিকুর রহমান ওরফে রানা, মোবারক হোসেন, শেখ ওমর শরীফ ওরফে মারুফ রাসেল, তন্ময় সুফিয়ান ওরফে তন্ময়, সাফায়েরত ইয়াছির ইকবাল, আরিফুল ইসলাম, রায়হানুল ইসলাম, ইফতেখারুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম শহিদ, রাকিব ইসরাত মোহাম্মদ ইরতিজা, ইসমাইল হোসাইন, শরফুল আউয়াল, আবদুল আওয়াল জাহিদ ও ইমতিয়াজ হোসাইন ওরফে আহসান আলী রিয়াজ। হামাজা ব্রিগেডের মধ্যে আছেন শামসুদ্দিন, রাকিব হোসাইন, নাছির, আনোয়ার, আজিজুল হক, আবদুল খালেক, হাবিবুর রহমান তাহসান, আমির হোসাইন ওরফে ইসহাক, আমিনুল ইসলাম হামজা, মোবাশ্বের সামাদ, মনিরুজ্জামান মজুমদার ওরফে মাসুদ, আবদুল্লাহ, ফয়জুল হক ফয়েজ ও আবদুল হাইসহ ৫৯ জন জঙ্গি সদস্য। এ ছাড়াও বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে হেফাজত নেতা মুফতি ইজহার ও হারুন ইজহারকে।

সর্বশেষ খবর