সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিশ্ববাসীর কাছে মাথা উঁচু করে চলব --- প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্ববাসীর কাছে মাথা উঁচু করে চলব ---

প্রধানমন্ত্রী

বিমান বাহিনীর বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিতে গতকাল আধুনিক ইয়াক-১৩০ কম্ব্যাট প্রশিক্ষণ বিমান এবং অগাস্টা এ ডব্লিউ-১৩৯ মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ হেলিকপ্টার অন্তর্ভুক্তির অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তুলতে হবে অজেয় রূপে। তিনি মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের কথা জাতিকে মনে রাখার তাগিদ দিয়ে ও বিশ্ববাসীর কাছে মাথা উঁচু করে চলার প্রত্যয় ঘোষণা করে বলেছেন, আমরা কারও কাছে হার মানি না, পরাজিত হই না। সেভাবে আমাদের নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।

গতকাল সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রাশিয়ার তৈরি কমব্যাট প্রশিক্ষণ বিমান ইয়াক-১৩০ এবং ইতালির তৈরি অনুসন্ধান ও উদ্ধার হেলিকপ্টার অগাস্টা এডব্লিউ-১৩৯ এর অন্তর্ভুক্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ঢাকার কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু তা কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে না। যদি আমাদের মধ্যে আত্নবিশ্বাস থাকে, সেই আত্নবিশ্বাস আর আত্নমর্যাদা বোধ নিয়েই বাংলাদেশের জনগণ এগিয়ে যাবে। বিমানবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ সরঞ্জাম ও ব্যবস্থাপনা এ বাহিনীর ‘দক্ষতা ও অপারেশনাল কার্যক্ষমতা’ আরও বৃদ্ধি করবে। তিনি বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আপনাদের যতটুকু সহায়তা দেওয়া সম্ভব, বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে কোনো কার্পণ্য করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। বিমানবাহিনীতে শিগগিরই পাঁচটি নতুন এমআই-১৭১ এসএইচ হেলিকপ্টার এবং ১২টি পিটি-৬ প্রশিক্ষণ বিমান যুক্ত করার কথাও বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে পৌঁছালে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার এবং ঘাঁটির অধিনায়ক এয়ার কমোডর এম ওবায়দুর রহমান তাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করে  ২১ নম্বর স্কোয়াড্রন লিডার উইং কমান্ডার হাসান আশরাফুজ্জামানের হাতে ইয়াক-১৩০ এবং ১ নম্বর স্কোয়াড্রন লিডারের হাতে অগাস্টা এডব্লিউ-১৩৯ এর অন্তর্ভুক্তির আদেশ তুলে দেন। কুচকাওয়াজ শেষে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীতে নতুন সংযোজিত এই প্রশিক্ষণ বিমান এবং হেলিকপ্টারের ডিসপ্লে দেখেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ফ্লাই বাই ওয়ার’ প্রযুক্তিতে নিয়ন্ত্রিত ইয়াক-১৩০ বিমান আধুনিক ও বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ সুবিধার পাশাপাশি যুদ্ধকালীন আকাশ প্রতিরক্ষা, প্রয়োজনে আক্রমণ এবং সেনা ও নৌ বাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা দিতে সক্ষম। এই বিমানের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় এক হাজার ৬০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার এ বিমান ভ‚মি থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১২ হাজার মিটার উচ্চতায় টানা তিন ঘণ্টা ২০ মিনিট উড়তে পারে।

অটো পাইলট প্রযুক্তি সম্বলিত অনুসন্ধান ও উদ্ধার হেলিকপ্টার অগাস্টা এড?ব্লিউ-১৩৯ প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও উপকূল ও সমুদ্র এলাকায় উদ্ধার কাজ চালিয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া উপকূল এবং সমুদ্রসীমায় সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীকে কৌশলগত সহায়তাও দিতে পারে এই হেলিকপ্টার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিমানবাহিনীর বৈমানিকদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নততর যুদ্ধবিমান পরিচালনায় উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে অ্যাডভান্সড জেট ট্রেইনিংয়ের বিমানও সংগ্রহ করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিমানবাহিনীর উন্নয়নে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর কথাও প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে তুলে ধরেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টারে যুদ্ধবিমান ওভারিহলিং কার্যক্রম দেখেন। অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা, ভারপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আনোয়ার হোসেন, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব, এমপিগণ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মইনুল ইসলাম এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর