সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ক্ষতিকর আইডি ধরতে সহায়তা দেবে ফেসবুক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভুয়া ও ক্ষতিকারক আইডি চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রের জন্য হুমকি বা সমাজের জন্য ক্ষতিকারক কিংবা আপত্তিকর ছবি, তথ্য যারা পোস্ট বা ট্যাগ করে তাদেরকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখবে সরকার।

আর এক্ষেত্রে সব ধরনের সহায়তা দেবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে চিহ্নিত হওয়া ভুয়া ও ক্ষতিকারক আইডি কেন্দ্রীয়ভাবে বন্ধে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবে সরকার। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকা সফররত ফেসবুকের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে পুলিশ ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অংশ নেন। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ফেসবুক খুলে দেওয়া হবে। বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের কয়েকটি মাধ্যম বন্ধ রাখার কারণ জানতে চান ফেসবুক কর্তৃপক্ষের ওই কর্মকর্তারা। তাদের জানানো হয় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। বাংলাদেশে চলা আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নানারকম অপপ্রচার চালায়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা থাকায় কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধ করা হয়। সূত্র জানায়, ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন সময় ফেসবুক ব্যবহার করে নাশকতাকারীরা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুককে ব্যবহার করে থাকে। তারা ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলে। কেউ কেউ আবার গ্রুপ আইডি খুলে নামে-বেনামে সরকার সংশ্লিষ্ট নানা ধরনের আপত্তিকর, মানহানিকর, ক্ষতিকারক ছবি পোস্ট করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুয়া তথ্য প্রচার করে। এতে ফেসবুক ব্যবহারকারী অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। এসব আইডি চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ফেসবুকের কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে সেসব আইডি বন্ধ করারও আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে এ জন্য সরকারের তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনাকে আরও শক্তিশালী করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের (দক্ষিণ এশিয়ার পলিসি ম্যানেজার) দিপালী লেবারহেন এবং রাজনৈতিক ও আইন উপদেষ্টা বিক্রম লাংহে প্রতিনিধিত্ব করেন। এ ছাড়া বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হকসহ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। কবে নাগাদ ফেসবুক খুলে দেওয়া হবে-এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু এটুকু বলব, ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে নিরাপত্তার প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের যুব সমাজ অনেক ট্যালেন্টেড। এ যুব সমাজের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অনেক আশা-ভরসা। যারা বিকল্প পথে ফেসবুক খুলছেন সেটি ভিন্ন বিষয়। তবে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অফিশিয়ালভাবে শিগগিরই খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর