সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
বিজয় দিবসের বরাদ্দ

সেতু বিভাগের ভাগবাটোয়ারা

মানিক মুনতাসির

মহান বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নিতে বরাদ্দকৃত অর্থের ভাগবাটোয়ারায় মেতেছে সেতু বিভাগ। পাঁচ লাখ টাকার কাজ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকায়। অনুষ্ঠানস্থলে অর্ধেক দিন দায়িত্ব পালন করবেন এমন ১০ জন কর্মকর্তার সম্মানী ধরা হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। আবার তাদের জন্য আপ্যায়ন বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, আবার অন্যান্য খরচের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক লাখ টাকা। আর এ টাকার জোগান দেওয়া হবে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের পক্ষে দুটি ট্রাকের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দনভাবে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ তিনটি প্রকল্পের বাস্তবভিত্তিক প্রোটো টাইপ মডেল নির্মাণসহ গাড়ি সজ্জিতকরণের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক দরপ্রস্তাব দাখিলের আহ্বান জানানো হয়। এতে দুটি মাত্র দরপ্রস্তাব জমা হয়। এর মধ্যে পিক্সেল গ্রাফিক্স অ্যান্ড প্রিন্টার্স ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৮৫০ টাকা এবং আর এ এস আর্কিটেক্ট ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ২৫৫ টাকার দরপ্রস্তাব জমা দেয়। নিয়ম অনুযায়ী সর্বনিæ দরদাতাকে কাজ দেওয়া কথা থাকলেও এক্ষেত্রে তা হয়নি। তিন গুণ বেশি দরদাতা প্রতিষ্ঠান আর এ এস আর্কিটেক্টকেই ১০ লাখ টাকায় কাজ দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের অতিরিক্ত খরচ হবে পাঁচ লাখ টাকা। কেননা সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দিলে পাঁচ লাখের কম টাকা দিয়েই কাজটি করা যেত। এদিকে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের ১০ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য সম্মানী বাবদ রাখা হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। তাদের একবেলা খাবারের জন্য আপ্যায়ন বাবদ রাখা হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, সবকিছু আলাদাভাবে বরাদ্দ রাখার পরও অন্যান্য খাত দেখিয়ে আরও এক লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এতে সর্বমোট ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বরাদ্দের পুরো অর্থই খরচ করা হবে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে। অথচ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাই বলছেন, এ কাজের জন্য খুব বেশি হলে পাঁচ লাখ টাকার প্রয়োজন। ফলে আট লাখ টাকা সরকারের অপচয় হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়রুল ইসলাম বলেন, এত ছোট বিষয় আমার জানা নেই। তবে দুটি প্রতিষ্ঠানের জমা দেওয়া দরপ্রস্তাব ও ছবি তিনি দেখেছেন। এর মধ্যে সর্বনিæ দরদাতা প্রতিষ্ঠানের জমা দেওয়া ডিজাইন হাতে আঁকা যা অস্পষ্ট। অন্য প্রতিষ্ঠানটির জমা দেওয়া ছবিটি গ্রাফিক্স করা। এ কারণে দরের তারতম্য হতে পারে বলে তার ধারণা। তবে এ বিষয়ে যারা দরপত্র প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

সর্বশেষ খবর