সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাংলাদেশি পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক ধরল পাকিস্তান

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কম দামে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানি হচ্ছে- এমন অভিযোগ তুলে বাংলাদেশি এই পণ্যের ওপর প্রায় ১৯ শতাংশ এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে পাকিস্তান। এরই মধ্যে তারা এ ব্যাপারে বাংলাদেশের জবাব চেয়ে নোটিস জারি করে বলেছে, ৩০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে শুনানিতে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় ১৮০ দিন পর এ ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।

এন্টি  ডাম্পিং শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের অভিযোগ সত্য নয় উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, তারা শুনানিতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে ওই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে গতকাল বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মনোজ কুমার রায় সচিবালয়ে তার নিজ কক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে শুনানিতে অংশ নিতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে গত ৮ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরেকটি বৈঠক করে। ওই বৈঠকে পাকিস্তানের অভিযোগ নিয়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, পাকিস্তান কনস্ট্রাকশন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের মূল্য নির্ধারণ করেছে যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও আইনবিরোধী। এক্ষেত্রে ডব্লিউটিও-এর আইন হচ্ছে : রপ্তানিকারক দেশের বাজার মূল্য যাচাই করে পণ্যের সাধারণ মূল্য যাচাই করা হচ্ছে প্রথম অগ্রাধিকার। প্রথম অগ্রাধিকারে কোনো বাজার মূল্য না পাওয়া গেলে তৃতীয় কোনো রপ্তানিকারক দেশে পণ্যটির বাজার মূল্য যাচাই করা হচ্ছে দ্বিতীয় অগ্রাধিকার। সেটিও না পাওয়া গেলে সর্বশেষ পদক্ষেপ হচ্ছে কনস্ট্রাকশন পদ্ধতিতে অর্থাৎ উৎপাদন খরচ, লাভ ইত্যাদি যোগ করে পণ্যের সাধারণ মূল্য নির্ধারণ করা। পাকিস্তান প্রথম ও দ্বিতীয় অগ্রাধিকার যাচাই না করেই কনস্ট্রাকশন পদ্ধতি অনুসরণ করেছে যা ডব্লিউটিও নীতিবিরোধী। জানা গেছে, পাকিস্তানের দুটো শিল্প প্রতিষ্ঠান সিতারা পার অক্সাইড লি. এবং ডেসকম অক্সিকেম লি.-এর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির জাতীয় ট্যারিফ কমিশন (এনটিসি) চলতি বছরের এপ্রিলে তদন্ত শুরু করে।

তারা বাংলাদেশের তিন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান তাসনিম কেমিক্যাল লি., সামুদা কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লি. এবং এএসএম কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লি.-এর বিরুদ্ধে কম মূল্যে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানির অভিযোগ তুলে এ ব্যাপারে প্রশ্নমালা পাঠায়। পরে গত ১৬ অক্টোবর পাকিস্তানের এনটিসি ১৯ দশমিক ৩২ শতাংশ এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে একটি নোটিস জারি করে। নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কম দামে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানি হওয়ার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে তারা নিশ্চিত হয়েছে। এর ফলে তাদের দেশীয় কোম্পানির স্বার্থ ক্ষুণœ হচ্ছে। নিজেদের প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষায় সাময়িকভাবে তারা বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত ওই পণ্যটির ওপর ১৯ দশমিক ৩২ শতাংশ শুল্ক সাময়িক এন্টি ডাম্পিং হিসেবে আরোপ করেছে। এর ফলে তাদের কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা হবে বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়।

সর্বশেষ খবর