শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে আপস নয় : জয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে আপস নয় : জয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, স্বাধীনতা- বিরোধীদের সঙ্গে কোনো আপস নয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কোনো আপস হবে না। দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, আসুন দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধ হই। উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত আর জাতীয় স্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাই। গতকাল বিকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার’ শীর্ষক এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত। বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধকালীন ক্রিকেটার রকিবুল হাসান প্রমুখ। জয় বলেন, আমার চাওয়া এই বিজয়ের মাসে যুদ্ধাপরাধী-রাজাকার ও জঙ্গিবাদের সমর্থক বাদে সব বাঙালি ভবিষ্যতের জন্য ঐক্যবদ্ধ হই। শুধু তাদের বাদ দেব যারা রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস যুদ্ধাপরাধী। সেই সঙ্গে সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদ। তাদের আমি চাই না। আর যারা যুদ্ধাপরাধীদের ফিরিয়ে এনে রাষ্ট্রীয় পতাকা দিয়েছেন, জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন তাদেরও আমরা চাই না। এ ছাড়া আসুন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আমার আশা বাংলাদেশের সব বাঙালি মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, নাস্তিক— আমরা সবাই বাংলাদেশের জন্য এক হব। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ চলছে। অনেকেই এ বিচার বন্ধের জন্য চেষ্টা করেছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের মধ্যেই কত সন্দেহ! কাদের মোল্লার যখন যাবজ্জীবন হলো— আমাদের মধ্যেই এত মানুষ হতাশ হলেন। অনেকেই বলতে লাগলেন যে, আওয়ামী লীগের জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে। এটি কি বিশ্বাস করা সম্ভব আওয়ামী লীগ, জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা করে ফাঁসি দেবে না? সবচেয়ে  বেশি সাকার বিচার নিয়ে হতাশা ছিল, ভয় ছিল অনেকের। কেননা, এতে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ছিল। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম বিচার কবে হবে, রায় কবে হবে। একবার যখন ফাঁসির রায় এসে গেছে, তখন বোধহয় আর সন্দেহ ছিল না, এবার ফাঁসি হবেই হবে। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ফাঁসির রায় কার্যকর করবেনই। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই সেটা রুখে দেবে। তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, বিচার কাজ চলছে, অর্ধেক যুদ্ধাপরাধীর রায়ও হয়েছে। বাকিগুলোও যেন সমাপ্ত করতে পারি, সে জন্য স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় না থাকলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধ হয়ে যাবে। বোমা হামলা হবে-জঙ্গিবাদ বৃদ্ধি পাবে। কেউই নিরাপদ থাকবে না। এ জন্য স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। যখনই নির্বাচন হোক—আগামীতেও নির্বাচন আছে; নির্বাচনে যারা স্বাধীনতার পক্ষের নেতৃত্ব দেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তাদেরই ক্ষমতায় আনতে হবে। তবেই দেশের উন্নয়ন হবে। সুশীল সমাজের সমালোচনা করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমাদের বুদ্ধিজীবী সুশীলরা একটি শব্দ ব্যবহার করেন, ন্যাশনাল কনসান্স। তারা চান ন্যাশনাল ডায়ালগ করতে। আমার প্রশ্ন যারা যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছে, পুনর্বাসন করেছে, আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৩ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে—এদের সঙ্গে কী আমাদের কনসান্স হবে? আজকে এই হলরুমে প্রায় এক হাজার মানুষ উপস্থিত আছেন, সবাই কী একটি বিষয়ে একমত হবেন? শুধু সমস্যা নিয়ে বললেই হবে না। সমস্যা সমাধানের পথও দেখিয়ে দিতে হবে। আমি সমালোচনা-আলোচনার চেয়ে কাজে বিশ্বাসী। যারা আমাদের বুদ্ধি দিতে আসেন, তাদের বলব, আপনারাও একটু কাজ করেন।

সর্বশেষ খবর