সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

তবুও মাঠে শতাধিক বিদ্রোহী

সাময়িক বহিষ্কার করল আওয়ামী লীগ, নিষ্ক্রিয় করার চিন্তা বিএনপির

মাহমুদ আজহার, গোলাম রাব্বানী ও রফিকুল ইসলাম রনি

তবুও মাঠে শতাধিক বিদ্রোহী

শেষ দিনেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেনি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীরা। বুঝানোর পাশাপাশি বহিষ্কার খড়গের হুমকিও কাজে আসেনি। সব কিছু উপেক্ষা করে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান দুই দলের অন্তত ৮০ জন প্রার্থী। এর মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্তত ৭১ এবং বিএনপির ২৯ জন। গতকাল রাতে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের ‘সাময়িক’ বহিষ্কার করা হয়েছে। শিগগিরই তাদের কাছে চিঠি চলে যাবে। অন্যদিকে বিএনপি আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে চায়। বিদ্রোহীরা নিষ্ক্রিয় না হলে শেষদিকে  এসে বহিষ্কার খড়গ আসতে পারে তাদের ওপর।

নির্বাচন কমিশন জানায়, এবার ১৯টি দল মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা ২৩১  পৌরসভায়, বিএনপির ধানের শীষ ২২৪ ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল ৮৫ পৌরসভায় দলীয় প্রার্থীদের বরাদ্দ প্রতীক। ২৩৪ পৌরসভায় দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন মেয়র পদে নয় শতাধিক। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে লড়ছেন সহস্রাধিক নির্দলীয় প্রার্থী।

গতকাল রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের যে কোনো পদে থেকে যারা পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। দলের আগামী কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে চূড়ান্ত বহিষ্কার করা হবে। তিনি বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বারবার সতর্ক করার পরও তারা দলের নির্দেশনা অমান্য করেছেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হলো। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক টিম বিএনপির পদধারী বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিষ্ক্রিয় করার ক্ষেত্রে কাজ করবে। যদি এরপরও তারা নির্বাচনী মাঠে থাকে, তাহলে স্থানীয় বিএনপি যে সুপারিশ করবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি জানান, ‘সর্বোচ্চ ২০ জন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকতে পারেন। কয়েকটিতে আমাদের বিকল্প প্রার্থীও রয়েছেন।’ এটা নির্বাচনী কৌশল বলেও মনে করেন তিনি।

বিদ্রোহীদের সাময়িক বহিষ্কার করল আওয়ামী লীগ : শেষ দিনেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি আওয়ামী লীগের ৭০ জনের বেশি বিদ্রোহী প্রার্থী। দলের কঠোর বার্তা সত্ত্বেও যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি তাদের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ দলের অবস্থান তুলে ধরে। খুব শিগগিরই দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।

ভোটযুদ্ধে থাকা সাময়িক বহিষ্কার হওয়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন— জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী এনায়েতুর রহমান আকন্দ স্বপন, কালাই পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী সাজ্জাদুর রহমান কাজল, নড়াইল পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী সোহরাব হোসেন বিশ্বাস ও নড়াইল পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন, কালিয়া পৌরসভায় বর্তমান মেয়র বি এম ইমদাদুল হক টুলু, ফকির মুশফিকুর রহমান লিটন, শেখ লায়েক হোসেন এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহেলী পারভীন নিরী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভায় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র কারিবুল হক রাজিন, পাবনা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোর্থী বর্তমান মেয়র তোফাজ্জল হোসেন তোফা, সাঁথিয়া পৌরসভায় বিদ্রোহী নফিজ উদ্দিন, চাটমোহরে বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা রেজাউল করিম দুলাল, ভাঙ্গুড়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ খান, ফরিদপুর পৌরসভায় জাহাঙ্গীর আলম, বাগেরহাট পৌরসভায় বিদ্রোহী মীনা হাসিবুল হাসান শিপন, মেহেরপুরের গাংনীতে বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার মিরপুরে বিদ্রোহী প্রার্থী আতাহার আলী, কুমারখালিতে বিদ্রোহী প্রার্থী জাকারিয়া খান, খোকসায় বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলম মাসুম মোর্শেদ শান্ত ও আলাউদ্দিন পিন্টু, গোপালগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুশফিকুর রহমান লিটন, যশোর পৌরসভায় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম কামরুজ্জামান চুন্নু, চৌগাছা পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম সাইফুর রহমান বাবুল, মনিরামপুর পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী জিএম মজিদ, অভয়নগরের নওয়াপাড়া পৌরসভায় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র ফারুক হোসেন, সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র আরাফাত হোসেন, বাগেরহাট সদরে বিদ্রোহী মিনা হাসিবুল হাসান শিপন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিদ্রোহী আবদুর রহিম, পাবনার চাটমোহরে বিদ্রোহী মির্জা রেজাউল করিম দুলাল, ভাঙ্গুড়ায় বিদ্রোহী আজাদ খান, ফরিদপুরে বিদ্রোহী জাহাঙ্গীর আলম ও আসাদুজ্জামান মিয়া, সুজানগরে তোফাজ্জল হোসেন তোফা ও আফসার আলী,  টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভায় বিদ্রোহী হুমায়ুন খালিদ, গোপালপুর পৌরসভায় বিদ্রোহী বেলায়েত হোসেন, রাজশাহীর মুণ্ডুমালা পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী আহসানুল হক স্বপন, পুঁঠিয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী জিএম হীরা বাচ্চু, নওহাটা পৌরসভায় বিদ্রোহী হাফিজুর রহমান হাফিজ, লালমনিরহাট সদর পৌরসভায় বিদ্রোহী এস এম ওয়াহেদুল হাসান পারভেজ, পাটগ্রাম পৌরসভায় বিদ্রোহী ওয়াজেদুল ইসলাম শাহিন, নীলফামারীর জলঢাকায় বিদ্রোহী প্রার্থী জাপা থেকে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী বর্তমান মেয়র ইলিয়াছ হোসেন বাবলু, কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভায় বিদ্রোহী সাজেদুল ইসলাম, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভায় বিদ্রোহী দেবাশীষ সাহা, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী সাদেকুর রহমান ভুইয়া, হবিগঞ্জ সদরে বিদ্রোহী মিজানুর রহমান মিজান, শায়েস্তাগঞ্জে বিদ্রোহী আতাউর রহমান মাসুম, মৌলভীবাজার বড়লেখায় বিদ্রোহী আবদুল নূর, ময়মনসিংহ ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভায় বিদ্রোহী দেলোয়ার হোসেন রিপন, ফুলপুরে বিদ্রোহী সাবেক মেয়র শাহজাহান আলী, গৌরীপুরে বিদ্রোহী শফিকুল ইসলাম ছবি ও আবু কাউসার চৌধুরী, ত্রিশালে বিদ্রোহী এ বি এম আনিসুজ্জামান এবং মুক্তাগাছায় বিদ্রোহী দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী, বরগুনায় দুই বিদ্রোহী প্রার্থী হলো শাহাদত্ হোসেন ও শাহজাহান। 

নিষ্ক্রিয় করতে খালেদার নির্দেশ : কেন্দ্রকে উপেক্ষা করে বিএনপির অন্তত ২৯ জন বিদ্রোহী প্রার্থী গতকাল শেষ দিনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। তাদের নিষ্কিয় করার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলের সাংগঠনিক টিম এ নিয়ে কাজও শুরু করেছে। শেষ দিনেও বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে দূরে সরাতে ঘাম ঝরায় দলটি। নানাভাবে বুঝিয়ে কিংবা পদ-পদবি দেওয়ার কথা জানানোর পরও ২৯ জন বিদ্রোহী প্রার্থী ভোটযুদ্ধে লড়ার ঘোষণা দেন। কেন্দ্রকে নিজেদের অপারগতার কথা জানান। জানা যায়, খুব শিগগিরই সাংগঠনিক টিমের নেতারা নির্বাচনী মাঠে যাবেন। দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে প্রচারণার পাশাপাশি কথা বলবেন বিদ্রোহীদের সঙ্গে। এরপরও যদি বিদ্রোহীরা নিষ্ক্রিয় না হন, সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বহিষ্কারের খড়গও আসতে পারে বিদ্রোহীদের ওপর। তবে কয়েকজন বিদ্রোহীকে ‘বিকল্প প্রার্থী’ হিসেবে মনে করে বিএনপি। সেখানে দলীয় প্রার্থীর বাইরে বিদ্রোহী প্রার্থীকে গোপনে বিএনপির সমর্থন দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ ধরনের কয়েকটি পৌরসভা চিহ্নিতও করা হয়েছে।  বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল অন্তত ৪৫ জন। এর মধ্যে গতকাল শেষ দিনেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি ২৯ জন। তারা হলেন— মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এরাজ আলী, কুমিল্লার দাউদকান্দিতে নূরুল আমিন সরকার, বগুড়ার শিবগঞ্জে এস এম তাজুল ইসলাম, নন্দীগ্রামে কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল ও পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি ফজলুল হক কাশেম, চট্টগ্রামের পটিয়ায় ইব্রাহিম সওদাগর, রাঙামাটি সদরে রবিউল হক রবি, কুষ্টিয়ার মিরপুরে মিজানুর রহমান, নড়াইলের কালিয়ায় ইকরামুল হক, সাতক্ষীরা সদরে নাসির ফারুক খান মিঠু, জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে আলমগীর চৌধুরী বাদশাহ, কালাইয়ে আনিসুর রহমান তালুকদার, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় চাঁন মাহমুদ, ভালুকায় মফিজউদ্দিন সরকার, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে রতন মৃধা, নরসিংদীর মনোহরদীতে ডা. আবদুল খালেক, নারায়ণগঞ্জের তারাবোতে শফিকুল ইসলাম চৌধুরী, টাঙ্গাইলের সখীপুরে সানোয়ার হোসেন সজিব, রাজশাহীর নওহাটায় রফিকুল ইসলাম, কাটাখালীতে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, তানোরে ফিরোজ সরকার, আড়ানীতে নজরুল ইসলাম, চারঘাটে কায়েম উদ্দিন, নাটোরের গোপালপুরে মঞ্জুরুল ইসলাম বিমল, গুরুদাসপুরে আমজাদ হোসেন, পাবনা সদরে কামরুল হাসান মিন্টু, সুজানগরে কামাল বিশ্বাস, শেরপুরের শ্রীবর্দীতে আবু রায়হান এবং হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে  আবদুল মজিদ। এ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক বলেন, বিদ্রোহীদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা চলছে। বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এ নিয়ে কাজ করছেন। এরপরও যদি কেউ নিষ্ক্রিয় না হন, তাদের ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। প্রয়োজনে বহিষ্কারও করা হবে। আমি যতদূর জানি, দু-একজনের ব্যাপারে দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ খতিয়ে দেখবে ইসি : দলের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাধ্য করার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. জাবেদ আলী। তবে এক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা ‘স্পষ্ট’ করেননি এ নির্বাচন কমিশনার। গতকাল  পৌর  ভোটে  মেয়র প্রার্থীদের অনেক ‘বিদ্রোহী’ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের ‘হিড়িকের’ মধ্যে এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের চাপ দিচ্ছে— এমন অভিযোগের বিষয়ে জাবেদ আলী বলেন, আমাদের কাছে সব দলের প্রার্থীই একই রকম। যদি কোনো প্রার্থী কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হন, আমাদের কাছে সমস্যা নজরে আনা হয়— তা দূর করতে ব্যবস্থা নেব। তবে প্রার্থীকে লিখিত আবেদন জানাতে হবে। নির্বাচনী আইন-বিধি মেনে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি বলে উল্লেখ করেন জাবেদ আলী। বর্তমান ইসির প্রতি বিএনপি ‘অনাস্থা’ প্রকাশ করলেও সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানান সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবার জন্য আমরা কাজ করব। যে  কোনো প্রার্থী আমাদের কাছে একই কদর পাবেন। সব দল ও প্রার্থী একই ট্রিটমেন্ট পাবেন।

সর্বশেষ খবর