দারুণ স্বাদের জন্য পানিফলকে বগুড়ার শিবগঞ্জে বলা হয় ‘সিঙ্গারা’। সেই পানিফল বা সিঙ্গারা চাষ করে মডেলে পরিণত হয়েছেন মোকামতলা ইউনিয়নের ভাগখোলা গ্রামের সানারুল।
তিনি বাবার দেখানো পথ অনুসরণ করে ২ বিঘা জমি থেকে এখন ১২ বিঘা জমিতে চাষ করছেন পানিফল। সানারুল জানান, তার বাবা মোজাম্মেল হক প্রায় ৪০ বছর আগে ১ বিঘার একটি পুকুর অন্য মানুষের কাছ থেকে নিয়ে পানিফলের চাষাবাদ শুরু করেন। বাবার দেখানো পথ ধরে কিশোর বয়সেই ২ বিঘা জমিতে পানিফলের চাষাবাদ শুরু করেন সানারুল। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সফলতা তার হাতের মুঠোয় এসে ধরা দিয়েছে। সানারুল প্রায় ২০ বৎসর পানিফলের চাষাবাদ করে আসছেন। তিনি জানান, বর্তমানে ১২ বিঘা জলাশয়ে পানিফলের চাষাবাদ করছেন। প্রতিবিঘায় খরচ হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। প্রতিবিঘা থেকে আয় হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ১২ বিঘা জলাশয় থেকে এ বছর তিনি প্রায় ৫০০ মণ পানিফল বিক্রি করবেন। বর্তমানে প্রতিমণ পাইকারি পানিফলের মূল্য ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। তবে শুরুতে এ ফল ১ হাজার ২০০ টাকা মণ হিসাবে পাইকারি বিক্রয় হয়, যা খুচরা বাজারে ২০০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। ফল যখন বেশি পরিমাণে বাজারে আসে তখন ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে প্রতিমণ বিক্রি হয়, যা বাজারে ১ হাজার ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। সানারুল জানান, তিনি ৩ বিঘা জমি পত্তন নিয়ে আবাদ করে ২ ছেলে, ২ মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছেন। বাবা-মা ছেলে-মেয়ে-স্ত্রীসহ সানারুল পানিফল চাষ করে এখন অনেক সুখী। শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহব্বত হোসেন বলেন, উপজেলার মোকামতলায় পানি ফলের চাষ হচ্ছে। ৭ থেকে ৮ মাস মেয়াদি এ ফলের বীজ রোপণ করতে হয় জ্যৈষ্ঠ মাসে। অল্প খরচে স্বল্প পানিতেই এ ফল চাষ করা যায়। এক থেকে দেড় ফুট পানি থাকাকালীন পুকুর বা বিলে চাষিরা বীজ বপণ করেন। ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যেই পানিফল গাছে ধরে। আশ্বিন মাস থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত এ ফল বিক্রি করেন চাষিরা। এটা খুব পুষ্টিকর ফল। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-সি।