মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে ‘টেনশনে’ বড় দুই দলের মেয়র প্রার্থীরা

চার পৌরসভায় ফ্যাক্টর স্বতন্ত্ররা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের চার পৌরসভায় বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা ‘টেনশনে’ পড়েছেন। মেয়র পদে জয়ী হতে বড় বাধা এবং ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছেন রাউজানে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ), সীতাকুণ্ডে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ) ও স্বতন্ত্র (জামায়াত), চন্দনাইশে এলডিপি ও পটিয়ায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী।

মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগকারী রাউজানের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা, সীতাকুণ্ডে বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগকারী নায়েক (অব.) শফিউল আলম, সিরাজ উদ দ্দৌলা ছুট্টু, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জামায়াত নেতা তাওহিদুল হক চৌধুরী, পটিয়ায় সাবেক মেয়র ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান সামশুল আলম মাস্টার ও চন্দনাইশে এলডিপি প্রার্থীর মো. আইয়ুবের কারণে নৌকা-ধানের শীষের প্রার্থীরা ‘টেনশনে’ পড়েছেন বলে জানান স্থানীয় ভোটার ও সংশ্লিষ্টরা। এসব পৌরসভায় মেয়র পদে নৌকা-ধানের শীষের সঙ্গে চলবে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সীতাকুণ্ড, পটিয়া, চন্দনাইশ ও রাউজানের ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র এবং অন্য দলের শক্তিশালী মেয়র প্রার্থীর কারণে টেনশনে রয়েছেন বড় দুই দলের প্রার্থীরা। এ চার পৌরসভায় বিদ্রোহী ও হেভিওয়েট প্রার্থীরা প্রচারণায় তুঙ্গে আছেন। এদের মোকাবিলায় বড় দুই দলের প্রার্থীরা হিমশিম খাচ্ছেন। রাউজানে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র সফিকুল ইসলাম বেবীর ছেলে ‘জগ’ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা বলেন, ‘আমার বাবা গ্রামের সাধারণ মানুষের সঙ্গে ছিলেন এখনো আছেন। গ্রামের মানুষের সেবা করারও চেষ্টা করেন।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত হলে তরুণ হিসেবে এলাকায় নবীন-প্রবীণ সমন্বয় ঘটিয়ে পৌর এলাকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করব। আমি বাবার মতো সাধারণ মানুষের সঙ্গে থেকেই কাজ করে যেতে চাই।’ বিএনপির প্রার্থী আবদুল্লাহ আল হাসান বলেন, ‘এখানে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছাড়াও বিদ্রোহী প্রার্থীও রয়েছেন। এর পরও রাউজানে বিএনপির অবস্থান ভালো। তবে কিছুটা শঙ্কিত প্রভাব বিস্তারের কারণে। শতভাগ ভোটার উপস্থিত হতে পারলে জয়ী হব বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতিতে নয়, কাজেই বিশ্বাস করি।’ এখানে আওয়ামী লীগের দেবাশীষ পালিত, বিএনপির আবদুল্লাহ আল হাসান ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানার মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। সীতাকুণ্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থী (জামায়াত, মোবাইল) তাওহিদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমিই জয়ী হব।’ মেয়র প্রার্থী (আওয়ামী লীগ) বদিউল আলম বলেন, ‘দেখা যাক, মাঠে তো প্রচারে আছি। ভোটাররাই প্রমাণ করবেন যোগ্য কে।’ আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগকারী স্বত্বন্ত্র প্রার্থী (নারকেল গাছ) নায়েক সফিউল আলম বলেন, ‘ভোটাররা আমাকে আগের মতোই পুনরায় মেয়র নির্বাচিত করবেন। কাজের ধারাবাহিকতা রাখার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে চাই।’ সীতাকুণ্ডে আওয়ামী লীগের বদিউল আলম, বিএনপির সৈয়দ আবুল মনসুর ও জামায়াতের (স্বতন্ত্র) তাওহিদুল হক চৌধুরীর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। এখানে ছয় মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আরও আছেন বিএনপির আবুল মুনছুর (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র সিরাজ উদ দ্দৌলা ছুট্টু (জগ) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুন্নবী ভূঁইয়া (লাঙ্গল)। একইভাবে রাঙ্গুনিয়া, বাঁশখালী, সাতকানিয়া ও চন্দনাইশে নৌকা-ধানের শীষের দ্বিমুখী এবং পটিয়ায় নৌকা, ধানের শীষ ও নাঙ্গলের ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

বারইয়ারহাটে আওয়ামী লীগের নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে বিএনপির মাইনুদ্দিন লিটনের, রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী লীগের শাহজাহান শিকদারের সঙ্গে বিএনপির হেলাল উদ্দিন শাহের, সন্দ্বীপে আওয়ামী লীগের জাফর উল্লাহ টিটুর সঙ্গে বিএনপির আজমত উল্লাহ বাহাদুর, বাঁশখালীতে আওয়ামী লীগের সেলিমুল হক চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপির কামরুল ইসলাম হোসাইনীর, চন্দনাইশে এলডিপির মো. আইয়ুবের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মাহবুবুল আলম খোকার, সাতকানিয়ায় আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ জোবায়েরের সঙ্গে বিএনপির রফিকুল আলমের, মিরসরাইয়ে আওয়ামী লীগের গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে বিএনপির এ জেড এম রফিকুল ইসলাম পারভেজের দ্বিমুখী এবং পটিয়ায় আওয়ামী লীগের অধ্যাপক হারুন অর রশীদ ও বিএনপির তৌহিদুল আলমের সঙ্গে জাতীয় পার্টির সাবেক মেয়র শামসুল আলম মাস্টারের ত্রিমুখী লড়াই হবে। এদিকে দলীয় প্রার্থীদের জয়ী করতে বড় দুই দলের কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা ১০ পৌরসভার মাঠে নেমেছেন। কর্মী সমাবেশের মাধ্যমে প্রার্থীদের জয়ী করতে শীর্ষ নেতারা দিকনির্দেশনাও দিয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর