শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

চিকিৎসক ও জনবল সংকটে রাজবাড়ী হাসপাতাল

হিমাংশুকুমার সাহা, রাজবাড়ী

চিকিৎসক ও জনবল সংকটে রাজবাড়ী হাসপাতাল

রাজবাড়ী আধুনিক সদর হাসপাতালে ১৫০টি পদের মধ্যে ৭৯টিই শূন্য। ২০০৩ সালে হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যার অনুমোদন দেওয়া হয়। আজ পর্যন্ত শুধু অবকাঠামোর কাজ সম্পন্ন হলেও এখন পর্যন্ত ১০০ শয্যা হাসপাতালের কোনো জনবল নিয়োগ হয়নি। এমনকি ৫০ শয্যা হাসপাতালের জনবলও নেই। ১০০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর শুধু রোগীর ওষুধ আর খাবার বরাদ্দ রয়েছে। নামে আধুনিক সরকারি হাসপাতাল হলেও সেবার মান করুণ ও নানা সমস্যায় জর্জরিত।

হাসপাতালসূত্রে জানা যায়, ২৪ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২৩ জন মেডিকেল অফিসার, ৪৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করে। কিন্তু পদ সৃষ্টির পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি না থাকায় জনবল নিয়োগ হয়নি। চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ হাসপাতালে ১৫০টি পদের মধ্যে এখন ৭৯টিই শূন্য। মেডিকেল অফিসারের ৪২টির মধ্যে ৩২, সিনিয়র কনসালট্যান্টের ১০টির মধ্যে ৬ ও জুনিয়র কনসালট্যান্টের ১১টির মধ্যে ৮টি পদ শূন্য। এ ছাড়াও প্যাথলজি ১, রেডিওলজি ১, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগে ১টি করে পদ শূন্য। রেডিওলজি কনসালট্যান্ট না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কার্ডিওগ্রাফার পদ শূন্য থাকায় সাধারণ স্টাফ দিয়ে ইসিজি করানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত জরুরি বিভাগে কোনো চিকিৎসকের পদ নেই। বিভিন্ন স্থান থেকে চিকিৎসক এনে জরুরি বিভাগে সেবা দেওয়া হয়। এমনকি বেশির ভাগ সময়ই জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা প্রদানের দায়িত্ব পালন করেন হাসপাতালের দুজন সুইপার। হাসপাতালে কোনো নৈশপ্রহরী নেই। ফলে মাঝেমধ্যেই রোগীদের মোবাইল ফোন সেটসহ বিভিন্ন মূল্যবান দ্রব্য হারানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। যখন তখন গবাদিপশু ও কুকুর-বিড়ালের উপদ্রব দেখা দেয়। এমনকি রাতের বেলায় নেশাখোর ও বখাটেদেরও উৎপাত চলে। একজন রোগীর জন্য প্রতিদিন ১২৫ টাকা বরাদ্দ হলেও খাবারের মান যথেষ্ট নয়। সরেজমিন দেখা যায়, সকালে একটি ডিম আর কলা দিলেও দুপুর ও রাতে খাবার অনুপযোগী চাষের পাঙ্গাশ কিংবা সস্তায় কেনা মাছ-মাংস দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলে এসব খাবার না খেয়ে ফেরত দিয়ে বেশির ভাগ রোগীই বাইরের খাবার খান। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী সেবা নিতে আসেন। আর প্রতিদিন ১৫০ জনের বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। তবে জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুল হক বলেন, ‘হাসপাতালে জনবল কম রয়েছে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত চিঠি দিয়ে আসছি। তবে স্বল্প জনবল নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ খাবারের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমার নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বলে থাকি।’

সর্বশেষ খবর