শনিবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
বাণিজ্যমেলা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি ও নতুন বাজার খুঁজতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি ও নতুন বাজার খুঁজতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসাবান্ধব। আমরা ব্যবসা করতে ক্ষমতায় আসিনি। দেশের উন্নয়নে কাজ করতে এসেছি। ব্যবসায়ীদের জন্য পরিবেশ সৃষ্টিতে কাজ করতে এসেছি। তাই পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। আমাদের উত্পাদিত পণ্যের জন্য বিশ্বে নতুন নতুন বাজার খুঁজতে হবে। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা আছে তা বিশ্লেষণ করতে হবে। সে অনুযায়ী রপ্তানিযোগ্য পণ্য উত্পাদনে দৃষ্টি দিতে হবে। বাংলাদেশ ২০৫০ সালে পশ্চিমা দেশগুলোকেও উন্নয়নে ছাড়িয়ে যাবে। গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ২০১৬-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে একসময় যারা কটাক্ষ করত, এখন তারা প্রশংসা করছে। ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে নিম্নমধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করেছে, কিন্তু বাঙালি জাতি নিম্ন থাকবে না। উঁঁচু স্তরে যাবে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে। বক্তব্যের শুরুতে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের পণ্যের অনেক সুনাম রয়েছে। পাট একসময় রপ্তানি হতো বিভিন্ন দেশে। মসলিন একসময় খুব নাম-করা ছিল। তাই আমাদের এখন যেসব পণ্য আছে, সেগুলো বহুমুখীকরণ করতে হবে। চাহিদা অনুপাতে রপ্তানিযোগ্য পণ্য উত্পাদনে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের নতুন নতুন বাজার খুঁজতে হবে। ইতিমধ্যে আমাদের রপ্তানিযোগ্য পণ্য অনেক বেড়েছে। ৭২৯টি পণ্য ১৯২টি দেশে আমরা রপ্তানি করছি। ২০০৫-০৬ সালে আমাদের রপ্তানি ছিল ১০.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এখন ৩১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে পারলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৬০ বিলিয়ন ডলার হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের পণ্যের মান বাড়াতে হবে, ব্র্যান্ডিংয়ের প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে। পণ্যের মান বাড়লেই চাহিদা বাড়বে। এখন সেদিকেই দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে। জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি। আমরা বিজয়ী জাতি। মাথা উঁচু করেই আমরা নিজেদের গড়ে তুলব। এ জন্য আরও ব্যবসা-শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।

বরাবরের মতো এবারও মেলার ২১তম আসরের আয়োজন করে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। উদ্বোধনী বক্তৃতার পর ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্যমেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করেন। এ সময় মেলার বাইরে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রধানমন্ত্রী মেলাস্থল ত্যাগ করার পরই সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা হয়তো এক একটি পণ্য বিশেষভাবে ধরে বসে থাকি। শুধু মনে করি, এটাই বুঝি চিরদিন বাজার পাবে, রপ্তানি পাবে। এটা কিন্তু ঠিক না। আমাদের দেশের পণ্যের অনেক সুনাম আছে। পাট একসময় রপ্তানি হতো বিভিন্ন দেশে। মসলিন একসময় খুব নাম-করা ছিল। তাই আমাদের যেসব পণ্য আছে, সেগুলো বহুমুখীকরণ করতে হবে। আমাদের নতুন নতুন বাজার খুঁজতে হবে। বক্তব্য শেষে বাণিজ্যমেলার সফলতা কামনা করে শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বোস। আরও বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ প্রমুখ। এবার বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ২১টি দেশ অংশ নেবে। এ বছর নতুন সাতটি দেশ মরিশাস, ঘানা, নেপাল, হংকং, জাপান, মরক্কো ও ভুটান মেলায় অংশ নিচ্ছে। মেলায় প্রবেশের জন্য পূর্ণবয়সীদের ফি ৩০ আর শিশুদের জন্য ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার মেলায় থাকছে ১১১টি প্যাভিলিয়ন, ৫৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ৮০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ও ২৭৬টি স্টল।

সর্বশেষ খবর