দুই নেতার সংগঠনে পরিণত হয়েছে উপমহাদেশের বৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। দীর্ঘ পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি। এতে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে সংগঠনটির কার্যক্রম।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় হতাশা দেখা দিয়েছে পদ প্রত্যাশীদের মাঝে। এক সময় মিছিল-মিটিংসহ নেতাদের বাসায় ধরনা দিতে পদ প্রত্যাশীরা ছিলেন সক্রিয়। কিন্তু বর্তমানে তাদের অনেকে ছাত্র রাজনীতির সূতিকাগার খ্যাত মধুর ক্যান্টিনেই নিয়মিত আসেন না। ফলে স্থবিরতা বিরাজ করছে সংগঠনটিতে। ছাত্রলীগের বিগত কমিটির নেতাদের মধ্যে পদ ভাগাভাগি নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি আটকে আছে বলে জানা গেছে।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৫ ও ২৬ জুলাই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশনের মাধ্যমে সাইফুর রহমান সোহাগ সভাপতি ও এস এম জাকির হোসাইন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। একই দিন আজিজুল হক রানাকে সহ-সভাপতি, আসাদুজ্জামান নাদিমকে যুগ্ম-সম্পাদক এবং মোবারক হোসাইনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের ১১(ক) ধারায় উল্লেখ করা হয়, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ হবে ২৫১ সদস্যবিশিষ্ট। সেই লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে গত বছরের ৫-১০ অক্টোবর পর্যন্ত পদ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবন বৃত্তান্তও গ্রহণ করা হয়। তবে আলোর মুখ দেখেনি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। জানা যায়, ২০১১ সালে বিগত কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচিত হওয়ার পর চার মাস তিন দিনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু বর্তমান নেতারা নির্বাচিত হওয়ার পর খুব শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনো পূর্ণ করা হয়নি। কবে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ আগের সুরেই বলেন, শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।
এদিকে গত বছরের ১৮ জুন আবিদ আল হাসানকে সভাপতি ও মোতাহার হোসাইন প্রিন্সকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি গঠন করা হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই কমিটির মেয়াদ এক বছর। কিন্তু দীর্ঘ ছয় মাস অতিক্রান্ত হলেও এই শাখায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। এ ছাড়া গত বছরের ৩০ মে মিজানুর রহমানকে সভাপতি ও মহিউদ্দিন আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর এবং বায়েজিদ আহমেদ খানকে সভাপতি ও সাব্বির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই কমিটির মেয়াদও এক বছর। কিন্তু দীর্ঘ সাত মাস পার করলেও মহানগরের কমিটি দুটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি।