শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

বই, লেখালেখি নিয়ে যা বললেন গুলতেকিন

প্রতিদিন ডেস্ক

বই, লেখালেখি নিয়ে যা বললেন গুলতেকিন

গুলতেকিন খান। একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক। অনেকেই তাকে চেনেন প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সাবেক স্ত্রী হিসেবে। এবার নতুন পরিচয়ে আত্মপ্রকাশ করছেন তিনি। অমর একুশে বইমেলায় তার একটি কবিতার বই এসেছে। লেখালেখি করছেন বহু বছর ধরেই। কিন্তু বই প্রকাশ এবারই প্রথম। গত সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তার ‘আজো, কেউ হাঁটে অবিরাম’ শীর্ষক বইয়ের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন হয়।

বাংলা একাডেমির শামসুর রাহমান সেমিনারকক্ষে বইটির প্রকাশনা উৎসব  অনুষ্ঠিত হয়। এতে কবি গুলতেকিন খান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, হুমায়ূন আহমেদের ভাই ও রম্য লেখক আহসান হাবীব, কবি তুষার দাশ, হুমায়ূনের বড় মেয়ে নোভা আহমেদ। এ সময় সবাই গুলতেকিন ও তার কবিতা নিয়ে নিজ নিজ অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল একটি লিখিত বক্তব্য পাঠান; যা পাঠ করেন তাম্রলিপির প্রকাশক এ কে এম তরিকুল ইসলাম রনি। ৩৫টি কবিতা দিয়ে মোট ছয় ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে এ কাব্যগ্রন্থটি। বিভাগগুলো হলো— ভরে যাক সবার খামার, রাত্রিকে বাঁধো আজ, বাজুক স্কুলের ঘণ্টা, আস্তিনজুড়ে মাখিয়েছি কাদা ধুলো, ফ্রেমে বাঁধলেই শিল্প এবং জানতো না, জানতো না। গুলতেকিন খান বলেন, ‘আমি লিখে যাচ্ছি, সেটা আমার নিজের মতো। বই বেরিয়েছে এবার প্রথম। যদি এর দু-একটা লাইন, কোনো একটা কবিতা কারও ভালো লাগে, তাতেই আমি খুশি হব। আমার এর বেশি কিছু চাওয়ার নেই।’

লেখালেখি, অনুপ্রেরণা আর নতুন বই নিয়ে কথা বলেছেন একটি সহযোগী দৈনিকের সঙ্গে। তাতে তিনি বলেন, ‘নিজেকে কবি বলার স্পর্ধা আমার নেই। লেখালেখির মধ্যেই থাকব। তবে মাঝেমধ্যে বই আকারে সেগুলো প্রকাশ করব কিনা, তা এখনো ভাবিনি। ১৯৭৩ সালে আমার লেখা একটি ছড়া দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হয়। তখন স্কুলে পড়ি। সে সময় থেকেই ছড়া লিখতাম। ’৭৩ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত দৈনিক বাংলার বাণী, পূর্বদেশ ও ইত্তেফাকে আমার অনেক ছড়া ছাপা হয়েছিল। দাদা প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁর অনুপ্রেরণায় আমি ও আমার অন্যান্য ভাইবোন লেখালেখির চর্চা করতাম। কিন্তু কেউই শেষ পর্যন্ত দাদার মতো লেখালেখিতে জড়াননি।’ এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘১৯৭৬ সালে হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে বিয়ে। তারপর বিদেশে চলে যাওয়া। এসব কারণে আর লেখালেখি সেভাবে হয়নি। পুরনো ছড়াগুলোও হারিয়ে গেছে। তবু মাঝেমধ্যে লিখতাম। ২০০০ সালের পরও কিছু লিখেছি। একটি খাতায় তা লিখতাম। একসময় তা-ও হারিয়ে যায়। তাম্রলিপির প্রকাশককে বলেছিলাম, যদি কখনো বই করি, তবে তাকেই বলব। সেভাবেই এবার বই বের হলো। বইটি আমি আমার দাদাকে উৎসর্গ করেছি। কেননা আমার অনুপ্রেরণা আমার দাদাই। তার সমর্থন আমাকে লেখার জন্য উৎসাহিত করেছে। দাদার মতো আমাদের পরিবারের অন্য কেউ লেখালেখিতে আসেনি। এটা নিয়ে দাদার দুঃখ ছিল।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে গুলতেকিন খান বলেন, ‘আসলে আমি ছন্দ ভালোবাসি। সব কিছুর মধ্যেই ছন্দ আছে। আমি মনে করি, সব কিছুর মধ্যে ছন্দ থাকা উচিত। সেট সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে যেমন থাকা উচিত, জীবনের ক্ষেত্রে তো বটেই। সব কিছু মিলিয়ে আমার কবিতায় আমি ছন্দকে গুরুত্ব দিয়েছি। বিদেশি লেখকদের মধ্যে টি এস এলিয়ট, অডেন, ডব্লিউ বি ইয়েটসের লেখা ভালো লাগে। আর দেশের কবিদের মধ্যে অলক দাশগুপ্ত, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, জীবনানন্দ দাশ, আল মাহমুদের কবিতা ভালো লাগে। তবে কাউকে অনুসরণ করি, তা নয়। লেখার সময় হয় তো কারও কবিতার টানটা চলে আসে। বইটি প্রকাশ পেয়েছে, এতে আমি খুশি। দাদা বেঁচে থাকলে তার দুঃখ কিছুটা হলেও দূর হতো। দেখা যাক, পাঠক কীভাবে নেন। ইতিবাচক বা নেতিবাচক সব মন্তব্যই আমার কাছে অনুপ্রেরণা হবে। লেখালেখি আরও ভালো করার চেষ্টা করব।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর