মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

রবিবারের মধ্যে তফসিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী রবিবারের মধ্যে প্রথম ধাপে অন্তত ৪০০ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী। এবারই প্রথম ইউনিয়ন পরিষদে দলীয়ভাবে ভোট হতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং করা সংশোধিত নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণবিধি দু-একদিনের মধ্যে হাতে পাবেন বলে আশা করেন এ নির্বাচন কমিশনার। গতকাল ইসি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। তবে বৃহস্পতিবারও তফসিল দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা। ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস। তাই ২০  থেকে ২৩ মার্চের মধ্যে প্রথম দফার ভোট করার প্রস্তাব এসেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রথম ধাপে একদিনে ভোট করার পরামর্শ দিয়েছে। এ ছাড়া ১০-১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তফসিল ঘোষণা করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে ২৩ মার্চের মধ্যে ভোট করা সম্ভব হয়। দেশের সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে প্রথম ধাপের ভোট হবে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে। তবে বাকি ইউপির অধিকাংশগুলোর নির্বাচন  শেষ করতে হবে এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে। এক্ষেত্রে নির্বাচন অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সুবিধাজনক সময়ের সঙ্গে ভোটের সময় কোনো ধরনের ‘সাংঘর্ষিক’ অবস্থান না রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের মতামত নিচ্ছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। জাবেদ আলী বলেন, দু-একদিনের মধ্যে বিধিমালা পেলেই তা দ্রুত গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। রবিবারের মধ্যে প্রথম ধাপের তফসিল দেওয়া হতে পারে। দেশের সাড়ে চার হাজার ইউপির মধ্যে প্রথম ধাপে অন্তত ৪০০ ইউপির ভোট করার কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, প্রায় সাত শতাধিক ইউপি দিয়ে শুরু করব ভেবেছিলাম, এখন ৪০০ ইউপি দিয়ে শুরু করতে চাই। পর্যায়ক্রমে নির্বাচন উপযোগী ইউপির নির্বাচন যথাসময়ে করা হবে চলমান এসএসসি পরীক্ষা মধ্য মার্চে শেষ হবে। প্রথম ধাপের ভোটে এ পরীক্ষার কোনো অসুবিধা হবে না। তবে ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা রয়েছে। ভোটকেন্দ্র, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কথা বিবেচনায় রেখে পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে ভোট করার কথা জানান জাবেদ আলী। তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে ইউপি ভোট হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে উপযুক্ত গ্যাপে নির্বাচন করব আমরা।

এইচএসসি পরীক্ষার ফাঁকেও চলবে ইউপি ভোট

এসএসসি পরীক্ষার পর মার্চে প্রথম ধাপে একদিনে ৪০০ ইউপিতে ভোট করবে ইসি। পরে এপ্রিল-জুনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফাঁকে রুটিনের বিঘ্ন না ঘটিয়ে হবে সিংহভাগ ইউপির ভোট। এ ছাড়া এইচএসসি, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা  বোর্ডের পরীক্ষার ফাঁকে বাকি ধাপে নির্বাচন উপযোগী ইউনিয়ন পরিষদের ভোট করতে সংশ্লিষ্টদের মতামত নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। গত রবিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ইউপি ভোটকে সামনে রেখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর ও  বোর্ড চেয়ারম্যানদের শীর্ষ কর্মকর্তা-প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেছে। সংশ্লিষ্টরা আলোচনা করে তাদের মতামত নিয়ে ভোটের তারিখ করবে ইসি। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. জাবেদ আলী বলেন, প্রথম ধাপের ভোটের জন্য দ্রুত তফসিল ঘোষণা করা হবে। বাকি কয়েক হাজার ইউপির ভোট পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে করতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সুবিধা বিবেচনা করেই প্রয়োজনীয় বিষয়ে ইসি সচিবালয় কমিশন সভায় উপস্থাপন করবে। তা পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।

বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে  রেখে আমাদের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলোই তুলে ধরেছি। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার রুটিন শিগগিরই দেওয়া হবে। ইউপি নির্বাচনের কথা বিবেচনায় রেখে রুটিন সাজানোর পরামর্শ এসেছে। এইচএসসি পরীক্ষা জুন পর্যন্ত চলে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা মে মাসের মধ্যে শেষ হয়। সম্ভাব্য রুটিন নিয়ে আলোচনা করে তা কমিশনকে জানানো হতে পারে। পরীক্ষার রুটির পাওয়ার পরই কমিশন ভোটের তারিখ সাজাবেন বলে মনে করেন তারা। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মাঝখানে একদিনে কয়েকশ ইউপির ভোট করে বাকিগুলোর সিংহভাগ এপ্রিল-জুনে পরীক্ষার ফাঁকে শেষ করা হবে। অন্তত ৫ দিনের গ্যাপ পেলে ভোট করতে অসুবিধা হবে না। যাতে কোনো পরীক্ষাও পেছানোর দরকার পড়বে না। ইতিমধ্যে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে; তা চলবে ৯ মার্চ পর্যন্ত। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২১ মার্চের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে ঘোষিত রুটিনে। ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের পরীক্ষা শুরুর কথা রয়েছে। গত বছর ১১ জুন পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা হয়েছে; ১৩ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়েছে। এর আগে ২০১১ সালে ২৯ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল এবং ৩১ মে  থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত ভোট হয়েছে সিংহভাগ ইউপিতে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর