মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভা বৈঠক

তিন বছরে মালয়েশিয়ায় যাবেন ১৫ লাখ কর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ লাখ কর্মী যাচ্ছেন মালয়েশিয়ায়। আগামী তিন বছরে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ‘জি টু জি প্লাস’ পদ্ধতিতে এ কর্মী পাঠাতে মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ  ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে দুই দেশের সম্মতিতে এ সমঝোতা স্মারক সই হবে। এ সমঝোতা স্মারক কার্যকর হলে ২০১২ ও ২০১৪ সালের এ-সংক্রান্ত চুক্তি বা সমঝোতাগুলো বাতিল হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আগের বি টু বি (বিজনেস টু বিজনেস) এবং জি টু জি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় এবার সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জি টু জি প্লাস’ পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানো হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বড় অর্জন হলো সোর্স কান্ট্রি হিসেবে বাংলাদেশকে মালয়েশিয়া তালিকাভুক্ত করেছে। এর ফলে সেবা, উৎপাদন, নির্মাণ খাতে কর্মী পাঠানো যাবে। আগে এটা প্লানটেশনে সীমাবদ্ধ ছিল। এ চুক্তির আওতায় কাজ নিয়ে মালয়েশিয়ায় যেতে মাথাপিছু ৩৪ থেকে ৩৭ হাজার টাকা খরচ হবে এবং এ টাকা নিয়োগকর্তাই বহন করবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এ প্রক্রিয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে স্বচ্ছতার জন্য কিছু নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতে মালয়েশিয়া সরকার নিয়োগকর্তার সক্ষমতা ও চাহিদা যাচাই করে চাকরির সব সুবিধা নিশ্চিত করবে। তাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কর্মীদের বেতন সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরিশোধ করা হবে। নিয়োগ কর্তৃপক্ষকে ঢাকায় মালয়েশিয়া হাইকমিশন থেকে সত্যায়িত হতে হবে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে, সরকারি পর্যায়ে (জি টু জি) কর্মী পাঠানোর জন্য ইতিমধ্যে আগ্রহীদের যে তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হয়েছে, সেখান থেকেই বাছাই করে বি টু বির মাধ্যমে শ্রমিক নেবে মালয়েশিয়া। প্রত্যেক শ্রমিককে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে, এরপর তিনি আরও এক বছর কাজ করার সুযোগ পাবেন। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির বড় বাজার মালয়েশিয়ায় বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে জি টু জি পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে শুরু করে মালয়েশিয়া। সে অনুযায়ী শুধু সরকারিভাবে মালয়েশিয়ার ‘প্লানটেশন’ খাতে শ্রমিক পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু ‘প্লানটেশন’ খাতে কাজ করতে আগ্রহীর সংখ্যা কম হওয়ায় আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। যার ফলে গত তিন বছরে মাত্র সাত হাজার শ্রমিক পাঠানো গেছে মালয়েশিয়ায়। পরবর্তীতে জিটুজি পদ্ধতি সংস্কার করে এতে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়; যা জি টু জি প্লাস নামে পরিচিত। এদিকে গতকালের বৈঠকে উত্থাপিত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন আইন-২০১৬-এর খসড়া ফেরত দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আইনটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ফেরত পাঠানো হয়। মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে এ খসড়ার যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে মন্ত্রিসভায় ওঠানো হবে।

সর্বশেষ খবর