শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

হতাশা কাটিয়ে জমছে বিকিকিনি

মোস্তফা মতিহার

হতাশা কাটিয়ে জমছে বিকিকিনি

অষ্টম দিনে গতকাল একুশে গ্রন্থমেলা চিরায়ত রূপ ফিরে পেয়েছিল। বিকাল ৩টায় মেলার দ্বার উন্মোচনের পর থেকে দ্বার বন্ধের সময় পর্যন্ত বিকিকিনিতে মহাব্যস্ত ছিলেন বিক্রয় কর্মীরা। প্রতিটি স্টলেই ছিল বইপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়। এ দিন খুব কম দর্শনার্থীই বই না কিনে খালি হাতে ফিরেছেন। বরং প্রতি দর্শনার্থীর হাতেই শোভা পেয়েছে নতুন বই। গতকাল মেলায় এসেছিলেন মতিঝিল মডেল স্কুলের এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী আশাপূর্ণা। বেশ কয়েকটি বই কেনার পর এই প্রতিবেদকের সঙ্গে তার কথা হয়। আশাপূর্ণা বলেন, হুমায়ূন আহমেদ আমার প্রিয় লেখক। তার বইয়ের টানেই মেলায় ছুটে এসেছি। এখন আমার পরীক্ষা চলছে, তবুও প্রাণের টানেই মেলায় ছুটে আসা। পাশাপাশি ইমদাদুল হক মিলনের বইও তার পছন্দের তালিকায় রয়েছে বলে জানান। এদিকে বাংলা একাডেমি সূত্র জানায়, তাদের বইয়ের বিক্রি গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। এবার প্রথম সপ্তাহে বাংলা একাডেমি ১৭ লাখ ৫ হাজার ৮০ টাকার বই বিক্রি করেছে। গত বছর একই সময়ে বাংলা একাডেমি ২২ লাখ ৬১ হাজার ৪১৮ টাকার বই বিক্রি করেছিল।

২১ প্রকাশনীকে কৈফিয়তপত্র : মেলার নিয়ম-নীতি ভেঙে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বরাদ্দকৃত স্থান পাল্টে ইচ্ছামতো স্টল নির্মাণ করা প্রকাশকদের কাছে কৈফিয়ত চেয়ে কারণ দর্শাও নোটিস (শোকজ) দিয়েছে বাংলা একাডেমি। নোটিস পাওয়া প্রকাশনাসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শোভা প্রকাশনী, অ্যাডর্ন পাবলিকেশনস, অন্বেষা প্রকাশনী, শব্দশিল্প, সালাউদ্দিন বইঘর, পার্ল পাবলিকেশনস, তাম্রলিপি প্রকাশনী, সুবর্ণ প্রকাশনী, গদ্যপদ্য, বিজ্ঞান একাডেমি। এসব প্রকাশনাগুলোকে আগামী বইমেলায় ব্ল্যাক লিস্টেড করা হবে বলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান জানিয়েছেন।

এদিকে ২১ প্রকাশকের কেউই বাংলা একাডেমির কারণ দর্শানো নোটিসের কথা স্বীকার করেননি। এ ব্যাপারে অন্বেষা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি এই ধরনের কোনো চিঠি পাইনি। আমাদের বইমেলা করার ইতিহাসে এ ধরনের কোনো ঘটনা নেই। এখানে অন্বেষার নামটি যুক্ত করে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি যারা এ কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।’

নতুন বই : অষ্টম দিনে মেলায় এসেছে ৭৫টি নতুন বই। এর মধ্যে গল্প ২, উপন্যাস ১৯, প্রবন্ধ ৫, কবিতা ১৫, গবেষণা ২, শিশু সাহিত্য ৭, জীবনী ৩, মুক্তিযুদ্ধ ১, বিজ্ঞান ২, ভ্রমণ ২, ইতিহাস ৩, রম্য/ধাঁধা ২ ও অন্যান্য ১২টি বই। উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে— বিদ্যা প্রকাশ থেকে ফখরে আলমের তিনটি বই যথাক্রমে সুন্দরবনের মানুষ, রিপোর্টারের ডায়েরি, পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিবেদন; অবসর থেকে আল মাহমুদের ‘নির্বাচিত সেরা সাত’; আদর্শ থেকে তুষার আবদুল্লাহর ‘এনার্জি রিপোর্টিং’; কথাপ্রকাশ এনেছে আবুল কাসেম ফজলুল হকের ‘বাংলাদেশের প্রবন্ধ সাহিত্য’; অন্বেষা এনেছে মোস্তফা মামুনের ‘আবরার শিশির এবং জয়ীতা’; পার্ল পাবলিকেশনস এনেছে আনিসুল হকের ‘কৌতুক যৌতুক’; বেঙ্গল পাবলিকেশন্স থেকে এসেছে শাহনাজ মুন্নীর ‘থেমেছে শহর’; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশ করেছে মুহাম্মদ ইব্রাহীমের ‘জীবনস্মৃতিতে মানুষ দেশবিজ্ঞান-১ম খণ্ড’।

মূল মঞ্চের আয়োজন : বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : পাঠ্যপুস্তক রচনা, অতীত থেকে বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুব্রত বড়ুয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রতন সিদ্দিকী, মলয় ভৌমিক ও নূরুন্নাহার মুক্তা। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক অজয় রায়।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় প্রবীর সরদারের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’র শিল্পীরা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী ফাতেমা-তুজ-জোহরা, ইয়াকুব আলী খান, ইয়াসমিন মুশতারী, লীনা তাপসী খান, সুমন মজুমদার ও বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী।

সর্বশেষ খবর