বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
উদ্ভাবন

সৌরচালিত ই-বাইক নিয়ে আলোড়ন

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

সৌরচালিত ই-বাইক নিয়ে আলোড়ন

নেত্রকোনা জেলার প্রত্যন্ত এলাকার কৃষকের সন্তান আতিকুর রহমান শরীফ আলোড়ন তুলেছেন জ্বালানিবিহীন সৌরচালিত ই-বাইক উদ্ভাবন করে। এমন ছেলেকে নিয়ে গর্ব মা-বাবা ছাড়াও এখন গ্রামবাসীর।

জেলার পূর্বধলা উপজেলার খলিসাপুর গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান আতিকুর রহমান শরীফ (৩০)। তিনি ভোকেশনাল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং (গ্লাস) ও বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) সমাপ্ত করেন ঢাকার উত্তরা ইউনিভার্সিটি থেকে। পড়াশোনা শেষ করে এলাকায় এসে প্রায় চার মাস চেষ্টা করে তৈরি করেন এই ই-বাইক। এটি চালাতে কোনো জ্বালানির প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না মবিল কিংবা ডিজেলের। শুধু সৌরশক্তিতেই ঘণ্টায় ৮৫-৯০ কিলোমিটার গতিতে চলে এই বাইক। সৌরশক্তির বিকল্প হিসেবে রয়েছে ইলেকট্রিক চার্জেরও ব্যবস্থা। বাবা মো. মিজানুর রহমান ও মা সেলিনা রহমানের চার সন্তানের মধ্যে শরীফ দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু তৈরি করা ছিল তার নেশা। বিএসসি পাস করে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তিনি গবেষণায় মগ্ন হন। উদ্ভাবন করেন এই ই-বাইক। এটি ১০ টাকার চার্জে সারা দিন চলে। অন্যান্য মোটরবাইকের মতোই এর সুবিধা। শিক্ষক বদরুজ্জামান ও কৃষক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘আমাদের গ্রামের একজন ছেলে এমন কিছু তৈরি করেছে, যার সুবিধা আমরা গ্রামে বসেই ভোগ করছি। আমরা গ্রামবাসী মনে করি, ঘরে ঘরে এমন সন্তান জন্ম নিক।’ তারা বলেন, সেই সঙ্গে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এগুলো জাতীয়ভাবে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে। তারা আরও বলেন, শরীফের জন্য আমরা গ্রামবাসী আজ অনেক গর্বিত। আমাদের গ্রাম বিদ্যুতে আলোকিত হচ্ছে। শহরের মানুষ চিনতে পারছে। নেত্রকোনার সিনিয়র সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল বলেন, ‘সরকারের উচিত হবে এসব উদ্ভাবনীর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া। আমি নিজে ই-বাইকটি দেখেছি। এই প্রযুক্তি সাশ্রয়ী। যুগান্তকারী একটি আবিষ্কার। এটি শব্দবিহীন যান। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে জাতীয় অর্থনীতিতে এটি ভূমিকা রাখবে।’ উদ্ভাবক মো. আতিকুর রহমান শরীফ জানান, তার নিজের আবিষ্কৃত ই-বাইকটি পরিবেশবান্ধব, জ্বালানিবিহীন, শব্দবিহীন। এটি তৈরি করতে ৬০-৬৫ হাজার টাকা খরচ পড়বে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটিকে তিনি বাণিজ্যিকীকরণ করতে আগ্রহী। ইতিমধ্যে শরীফ জেলা পর্যায়ে উদ্ভাবনী মেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। আগামীকাল ১২ ও আগামী ১৩ তারিখে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন তিনি। নেত্রকোনা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের চিফ ইনস্ট্রাক্টর এ এস এম নাইম বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে সরকারি সহযোগিতায় বাণিজ্যিকভাবে এই ই-বাইক উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এতে জ্বালানি সংকট দূর হবে।  দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর