রবিবার, ৫ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঈদসেবায় বিআরটিসির ৪৫০ বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন রুটে বিআরটিসির ৪৫০টি ঈদসেবা বাস চালু করা হবে। একই সঙ্গে নিয়মিত রুটগুলোতে বিআরটিসির ৫৫০টি বাস চলাচল করবে। গতকাল দুপুরে বিআরটিসির জোয়ারসাহারা বাস ডিপোতে শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিআরটিসির গাড়ি পরিষ্কার দেখতে চাই। দাদার আমলের পর্দা সরিয়ে নতুন পর্দা লাগান। এ রকম শুভঙ্করের ফাঁকি দিলে চলবে না। বিআরটিসির বাস লিজ নিয়ে কোথা থেকে কোথায় চলে আমি এর খোঁজ রাখছি। গাড়িতে উঠে একজন যাত্রীও পেলাম না যে বাসের পক্ষে বলছেন। গাড়িগুলো এত নোংরা, এসি নষ্ট, পর্দা পুরনো, ফ্যান ঠিক নেই। এখানে বোঝা যায় কমিটমেন্টের অভাব। এ জন্য প্রতিষ্ঠানকে সৎ করতে হবে।’ এদিকে শ্রমিক লীগের মিছিলের কারণে বিরক্ত বক্তৃতার শুরুতেই ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা কি আমার দলীয় সভা, না বিআরটিসির?’ হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করি। কিন্তু আপনারা আমার চেয়ে বড় আওয়ামী লীগার হতে যাবেন না। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হতে পারি। কিন্তু এখানে এসেছি মন্ত্রী হয়ে। প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়ে নয়।’ ক্ষুব্ধ মন্ত্রী সবার উদ্দেশে বলেন, সরকারের আড়াই বছর পার হয়ে গেছে। এখন জনগণ স্লোগান আর প্রতিশ্রুতি নয়, কাজ দেখতে চায়। এখন ডেলিভারির সময়। তিনি বলেন, ভাষণ দিয়ে আর স্লোগানে প্রকম্পিত করে সমস্যার সমাধান হয় না। দল আর সরকার আলাদা রাখতে হবে। মঞ্চে তার পাশেই বসা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিআরটিসির চেয়ারম্যানকে দেখিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি ছাড়া মঞ্চে বসা এই দুজন কোনো দল করেন না। তাহলে স্লোগান দিয়ে বাতাস গরম করছেন কেন? বিআরটিসির যারা শ্রমিক লীগ করেন, তারা দলীয় মিটিং ডাকলেই পারেন। সেখানে মনের মাধুরী মিশিয়ে স্লোগান-বক্তৃতা দেন, কোনো অসুবিধা নেই। আমাকে বললে আমিও যাব প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে।’ কথায় কথা এসে গেছে জানিয়ে নিজ দলের এমপি ও নেতা-কর্মীদের ইঙ্গিত দিয়ে আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, সরকারের শেষ দিকে দলের কিছু নেতা বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন। এটা ভালো লক্ষণ নয়। তাদের তালিকা হচ্ছে। নির্বাচনটা শেষ হোক। তাদের খারাপ পরিণতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। অনেক এমপিও পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান দিয়ে এমপি হওয়া যাবে না। দুই বছর পরে চেয়ারম্যানের জনপ্রিয়তা কোথায় যাবে, সেটা তো এখনই বলা যায় না। সভায় সড়ক ও সেতু সচিব এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, বিআরটিসির কেনাকাটায় অস্বচ্ছতা দূর করতে হবে। গাড়ি পরিষ্কার রাখার জন্য ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করতে হবে। আর নতুন ৫০০ ট্রাক ও ৬০০ বাস কেনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিআরটিসির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ১১০০ নতুন গাড়ি নামানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন মন্ত্রী। নতুন গাড়ির পাশাপাশি পুরনো গাড়ির যত্ন নিতে হবে। ইতিমধ্যে বিআরটিসি বাসের লাইট-ফ্যান শতভাগ লাগানো হয়েছে। গ্লাস শতভাগ লাগানো না হলেও প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান মিজানুর রহমান। সভায় সংস্থাটির বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ১ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর