মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা

টেকনাফ মহেশখালী

কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ ও মহেশখালীতে দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় বাড়িতে ঢুকে সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলামকে (৬৮) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারও গুলিবিদ্ধ হন। রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নতুন পল্লানপাড়ার তিন রাস্তার মাথা এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহতের ছেলে আবদুল ফারুক তার মায়ের বরাত দিয়ে বলেন, রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে মুখোশ পরা কয়েক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাড়িতে ঢুকে প্রথমে বাবাকে (সিরাজুল ইসলাম) গুলি করে। এ সময় মা ইয়াসমিন আক্তার এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকেও গুলি করে। তার (মা) পায়ে গুলি লাগে। গুলির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা ফাঁকাগুলি ছুড়তে ছুড়তে নতুন পল্লানপাড়া গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। ওই সময় বাড়িতে আর কেউ ছিল না। খবর পেয়ে পুলিশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসক সিরাজুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শহীদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে আনার আগে সিরাজুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। তার মাথায় গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। বেশি রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। তার স্ত্রীর ডান হাঁটুতে গুলি লেগেছে। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মজিদ বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করতে পারেনি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর আবদুল গফুর প্রকাশ ‘নাগু মেম্বার’ (৪৮) দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন। রবিবার রাত ১০টার দিকে সোনাদিয়া পূর্বপাড়া মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হওয়ার পথে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি তাকে করা হয়। রাত ১২টার দিকে চিকিৎসক তাকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন। নাগু মেম্বার কুতুবজোম ইউনিয়নের (২ নম্বর ওয়ার্ড, সোনাদিয়া) চারবারের নির্বাচিত মেম্বার এবং তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের কুতুবজোম ইউনিয়ন শাখার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি ওই এলাকার প্রবীণ ব্যবসায়ী আসত আলীর ছেলে। নাগু মেম্বারের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। নাগু মেম্বারের চাচাতো ভাই জাফর আলম জানান, বাড়ি লাগোয়া মসজিদে তারাবির নামাজ আদায়ের পর একটু হাঁটাহাঁটি করে বাড়ি ফিরছিলেন নাগু মেম্বার। এ সময় পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। গুলি খেয়ে মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর উপর্যুপরি কোপানো হয়। এরপর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুলচন্দ্র বণিক জানান, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। নাগু মেম্বার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা হলেও জেলায় ‘জলদস্যু সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, মানব পাচার, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অভিযোগে অর্ধ ডজনের অধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। একক প্রভাবের কারণে এলাকায় কোনো নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। এ কারণে তিনি বার বার ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়’ মেম্বার নির্বাচন হতেন।    

সর্বশেষ খবর