সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

চারুকলায় বনসাই প্রদর্শনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

চারুকলায় বনসাই প্রদর্শনী

সব মিলিয়ে ২০০ প্রজাতির গাছ। দেখে মনে হয় কোনো বন বা বাগান। একটি মাত্র গ্যালারিতে সাজানো রয়েছে ২০০ প্রজাতির গাছ। ১৬ বছর ধরে এসব বনসাই নিয়ে কাজ করেছেন লায়লা আহমেদ। তার সংগ্রহে রয়েছে ২০০ প্রজাতির চার শতাধিক নান্দনিক বনসাই। এর মধ্যে তিন শতাধিক বনসাই নিয়ে গত শনিবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ২ নম্বর জয়নুল গ্যালারিতে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনী।

‘মায়াবী বনসাই’ শিরোনামে শুরু হওয়া লায়লা আহমেদের একক এই বনসাই প্রদর্শনী এদিন দুপুরে উদ্বোধন করেন প্রকৃতিবিদ অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা। প্রদর্শনী ২২ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রেডিয়েন্ট বনসাই সোসাইটির সভাপতি গুলশান নাসরীন চৌধুরী। এ ছাড়াও অতিথি ছিলেন কথাশিল্পী বিপ্রদাশ বড়ুয়া। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন ‘তরুপল্লব’-এর সাধারণ সম্পাদক মোকাররম হোসেন। প্রদর্শনীতে রাখা বনসাইগুলো যেমন চোখ জুড়ানো, তেমনি এগুলোর নামও মনোহরা। কোনোটার নাম কানাই ডিঙ্গা আবার কোনোটার নীলকণ্ঠ, জিলাপি ইত্যাদি। প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে বটগাছের সব ধরনের প্রজাতি। এ ছাড়াও রয়েছে নজরকাড়া রাধাচূড়া, তেঁতুল, ডুমুর, নিশিন্দা, কতবেল, কেওড়া, অর্জুন, তমাল, বইচি, কাঁটা মেহেন্দি, বিলেতি মেহেন্দি, টগর, কাঁঠালচাঁপা, বাগানবিলাস, শেওড়া, কামিনী, কৃষ্ণচূড়া, রঙ্গন, চেরি ইত্যাদি গাছের বনসাই। বিদেশি জাতের মধ্যে রয়েছে চায়নিজ বট, ল্যান্টিনা, ফোকেনট্রি, বাওবাব, জেটপ্লান্ট, ইপিল-ইপিল, জুপিটাস ইত্যাদি। প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পাশাপাশি ইচ্ছে করলে কেনা যাবে বনসাই। দাম পড়বে ৫০০ থেকে শুরু করে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রায় ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী বট-পাকুড় প্রজাতির বনসাইয়ের দাম ৭০ হাজার টাকা। এক থেকে দেড় বছর বয়সী বিভিন্ন প্রজাতির বনসাইয়ের দাম পড়বে ৫০০ টাকা। অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা বলেন, বনসাই নান্দনিক শিল্প। দিন দিন এর কদর বাড়ছেই। গাছের বামনত্ব করা হচ্ছে বলে বনসাইয়ের যে সমালোচনা হয়, তার কোনো প্রকৃতিগত ভিত্তি নেই। বনসাই সারাক্ষণ পরিচর্যার মধ্যে থাকে। অথচ একই গাছ প্রকৃতিতে অনাদরে বেড়ে ওঠে। আদরে গড়ে ওঠা গাছটি টেবিলে সাজিয়ে রাখা যায়। প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা গাছটি বাইরের সৌন্দর্য বাড়ায়, ঘরের ভিতর নয়। বিপ্রদাশ বড়ুয়া বলেন, বনসাই হচ্ছে বিন্দু থেকে সিন্ধুকে দেখার এক অনন্য মাধ্যম। ঘরের সৌন্দর্য যেমন বাড়ায় এটি, তেমনি মানুষকে মাটির কাছে নিয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর