শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

কারও কাছে নেই সেই মুছার খবর

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

কারও কাছে নেই সেই মুছার খবর

এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী কামরুল ইসলাম ওরফে মুছা সিকদারের খবর নেই কারও কাছে। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের পর দেড় মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও সুনির্দিষ্টভাবে কেউই খোঁজ দিতে পারছেন না সেই মুছার। এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে মুছাকে পুলিশ আটক করেছে— এমন দাবি করা হলেও পুলিশ তা বার বার অস্বীকার করছে। এমনকি মুছার বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো কথাও বলছেন না পুলিশের কেউ। এমন পরিস্থিতিতে মুছাকে নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। মুছার স্ত্রী পান্না আকতার বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে দাবি করেন, ‘মুছা বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। ২২ জুন বন্দর থানার ওসি মহিউদ্দিন সেলিমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল মুছাকে আটক করে। পরে এ কথা অস্বীকার করছে পুলিশ। কিন্তু এখন শুনছি পুলিশ তাকে গুম করেছে। আমি এ কথা বিশ্বাস করতে চাই না। মুছা যদি খুনের সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে প্রচলিত আইনের মাধ্যমে তাকে শাস্তি দেওয়া হোক।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মুছার মধ্যেই লুকিত আছে এ হত্যার আসল রহস্য। তাকে গ্রেফতার করা গেলেই উন্মোচিত হবে এ হত্যার রহস্যজট। তাই গ্রেফতারের জন্য তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্যে জানা গেছে, মিতু কিলিং মিশনের জন্য খুনি ভাড়া করা, কিলিং মিশনের তদারকি এবং অন্যতম পরিকল্পনাকারী এ মুছা সিকদার। আনোয়ার হোসেন এবং ওয়াসিমের আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবাবন্দিতেও খুনি ভাড়া করা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে মুছাকে। গ্রেফতার হওয়া অন্য আসামিরাও জিজ্ঞাসাবাদে অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে মুছার নাম উল্লেখ করেন। ঘটনার অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাও অস্ত্র ভাড়াকারী হিসেবে মুছার নাম উল্লেখ করেন। শুধু খুনের পরিকল্পনা নয়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্বে দেন মুছা। খুনের পর মুছা অন্য দুই খুনিকে নিয়ে মোটরসাইকেল করে পালিয়ে যান। পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, মুছা নিজেই মোটরসাইকেল চালান। তার সঙ্গে থাকা অন্য দুজন হলেন ওয়াসিম ও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আবদুল নবী। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন মুছা। পুলিশের এ দাবি অস্বীকার করে মুছার স্ত্রী পান্না আকতার বলেন, ‘আটকের পর তিন দিন পর্যন্ত অন্য আসামিদের সঙ্গে মুছাকে দামপাড়া পুলিশ লাইনে রাখা হয়। এরপর তাদের মধ্যে থেকে মুছা, নবী এবং রাশেদকে কঠোর গোপনীয়তায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তিনজনকে চোখ বন্ধ করে বাবুল আক্তারের মুখোমুখি করা হয়। পরে নবী ও রাশেদকে চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হলেও মুছাকে ঢাকায় রেখে দেওয়া হয়। এরপর থেকে তার কোনো খবর নেই।’

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ এ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে গত ৫ জুলাই পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন রাশেদ ও নবী। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া মুছা ও কালু পলাতক রয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর