শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

নেপিয়ার ঘাস চাষে কৃষকের মুখে হাসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

নেপিয়ার ঘাস চাষে কৃষকের মুখে হাসি

শুরুতে জেলার চাষিরা রাস্তার পাশে ও আইলের ধারে চাষ করলেও এখন রীতিমতো বিঘার পর বিঘা জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ শুরু হয়েছে। বগুড়ায় বৃদ্ধি পেয়েছে নেপিয়ার জাতের বিদেশি ঘাস চাষ। চাষ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাজারে চাহিদাও বেড়েছে। চাষিরা ঘাস চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। খামারিদের মাঝে সবুজ ঘাসের অভাবও মিটিয়ে দিচ্ছেন নেপিয়ার ঘাস চাষিরা।

জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর আগে বাংলাদেশ সরকার জার্মান থেকে এই ঘাসের চারা আমদানি করে। প্রথমে সাভার ডেইরি ফার্ম থেকে এই ঘাসের চারা বিতরণ করা হতো। পরবর্তীতে প্রায় বিশ বছরে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস কৃষকদের ফ্রি চারা বিতরণ করে। এ ঘাস খেলে গরু মোটাতাজা ও অধিক দুধ দেয় বলে কৃষি কর্মকর্তারা এই ঘাস গরুকে খাওয়ানোর  জন্য খামারিদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। প্রথমে এটি চাষে ততটা আগ্রহী না হলেও চার-পাঁচ বছর ধরে ভালো উৎপাদন ও অধিক দাম পাওয়ায় এ ঘাস চাষে অধিক আগ্রহী হয়েছেন কৃষকরা। এক বিঘা জমিতে বীজ, সার, তেল খরচ ও হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ধান, ভুট্টা বা অন্যান্য ফসল চাষ করে যে আয় হয় সেই একই জমিতে কম খরচে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে প্রায় তিন গুণ বেশি আয় হয়। এই ঘাস জমিতে লাগানোর আড়াই মাস পর বিক্রির উপযোগী হয়। পরবর্তীতে গোড়া থেকে আবার বেড়ে ওঠে। প্রতি মাসে একবার বিক্রির উপযোগী হয়। বাজারে চাহিদাও বেশি। সেচ ও সার খরচ কম। এই ঘাস খেলে গাভী বেশি দুধ দেয়। জেলার ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম, বগুড়া সদর, শিবগঞ্জ, আদমদীঘি, সারিয়াকান্দিসহ কম-বেশি সব উপজেলায় নেপিয়ার ঘাস চাষ দ্বিগুণ বেড়েছে। ঘাসগুলো স্থানীয় হাটে ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। শেরপুর উপজেলার বিশালপুর এলাকার রমজান আলী জানান, কৃষি কর্মকর্তারা অনেক আগেই বলেছেন, এ ঘাস চাষ করে যেমন লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে, তেমনি গাভীকে খাওয়ালে দুধ বেশি পাওয়া যাবে। গরু থাকবে সতেজ এবং স্বাস্থ্য দ্রুত ভালো হবে। শেরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ কে এম আনোয়ারুল হক জানান, উপজেলার প্রায় দেড় হাজার কৃষক ৩৭ একরের বেশি জমিতে এই ঘাস চাষ করছেন। এর মধ্যে ৩৭ জন কৃষক এই ঘাস চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আরও কয়েকশ একর জমিতে চাষের জন্য প্রচুর পরিমাণ চারা মজুদ রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর