রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

আড়িয়াল খাঁ নদে ট্রলার ডুবে শিশুসহ ১২ জনের মৃত্যু

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর আড়িয়াল-খাঁ নদে ট্রলার ডুবে পাঁচ শিশুসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রায়পুরা উপজেলার জংলী শিবপুর বাজার ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলো— বারৈচা গ্রামের মিলন মিয়ার মেয়ে মার্জিয়া (৩), একই গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রাকিব (১৩), আক্তার হোসেনের ছেলে সম্রাট (৪), রবিউল আক্তারের মেয়ে সুমাইয়া (৫), সুন্দর আলীর মেয়ে জেরিন (৮) ও রবিউল্লার স্ত্রী মালা বেগম (৭০), চর মরজাল গ্রামের মৃত মিয়া বক্সের মেয়ে ফুলেসা বেগম (৫০), দেওয়ানের চর গ্রামের মৃত ফজর আলীর মেয়ে বিবি মালদারের নেছা (৮০), একই গ্রামের কুদ্দুছ মিয়ার ছেলে ইয়াছিন মিয়া (৭)। বাকি তিনজনের পরিচয় জানা যায়নি। হতাহতের খবরে শোকে মুহ্যমান হয় সব মানুষ। স্বজনদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠে এলাকার পরিবেশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ১১টার দিকে রায়পুরা উপজেলার বারৈচা, দেওয়ানেরচরসহ আশপাশ এলাকার নারী, পুরুষ ও শিশুসহ প্রায় শতাধিক লোক জংলী শিবপুর বাজার ঘাট থেকে ট্রলারযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার গনিশাহর মাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ট্রলারটি চালু করার সঙ্গে সঙ্গে ঘাটের কিনারায় একটি গাছের ডালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে ডুবে যায়। এ সময় অনেকে সাঁতার দিয়ে তীরে উঠতে পারলেও চার শিশুসহ পাঁচজন মারা যায়। খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে একে একে আরও চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দমকল বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। বারৈচা, দেওয়ানের চর ও চর বেলাবসহ তিনটি গ্রামের নয়জনের মধ্যে বারৈচা গ্রামের চয়জন নিহত হয়। এত মৃতের ঘটনায় শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। স্বজনদের আর্তনাদে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।  এদিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক জেনারেল খন্দকার নূরুল হক, রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন, বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা, রায়পুরা থানার ওসি আজাহারুল ইসলাম, ওসি তদন্ত মাজহারুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রত্যক্ষদর্শী অলি মিয়া জানান, প্রায় তিনগুণ যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি রওনা দেয়। ট্রলারের ইঞ্জিন চালুর সঙ্গে সঙ্গে হেলে পড়ে। লোকজন নড়াচড়া করতে থাকলে ট্রলারটি উল্টে ডুবে যায়। মৃত জেরিনের পিতা ট্রলারের যাত্রী সুন্দর আলী বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার কারণে আমার সোনা মানিককে বাঁচাতে পারিনি। অপর প্রত্যক্ষদর্শী রফিক মিয়া বলেন, প্রতিবছর লোকজন গনিশাহর মাজার জিয়ারতের উদ্দেশে নবীনগর যায়। এবারও যাচ্ছিল। জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধার কর্মকাণ্ডের সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়। দাফনের জন্য নয় পরিবারের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার করে টাকা ও ২০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে এবং পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর