বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

তিতাসে নৌকাবাইচ

প্রতিদিন ডেস্ক

তিতাসে নৌকাবাইচ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদী ও হবিগঞ্জের বাগহাটা হাওরে নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নৌকাবাইচ আমাদের লোকজ ঐতিহ্যের অন্যতম একটি। যুগ যুগ ধরে তা মানুষকে আনন্দ দিয়ে আসছে। এ-সংক্রান্ত প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট—

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ভাটি অঞ্চল খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নানান লোকজ ক্রীড়ার মধ্যে বেশির ভাগই তিতাস নদী ঘিরে। এর মধ্যে একটি নৌকাবাইচ। ঐতিহ্যবাহী তিতাস নদীতে এমনই একটি আয়োজনে উৎসবে মেতে উঠেছিল শহর ও এর আশপাশ এলাকার প্রায় লাখো মানুষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহায়তায় তিতাসে হয়ে গেল এ নৌকাবাইচ। গতকাল বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকার ১৩টি দল সুসজ্জিত নৌকা আর রংবেরঙের বাহারি পোশাক পরে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মাঝিদের ভাটিয়ালি গান আর পানিতে বৈঠার শব্দ যেন একাকার হয়ে গিয়েছিল তিতাস। নীরব নিস্তব্ধ তিতাস পাড় হয়ে ওঠে হাজারো মানুষের কোলাহলে মুখরিত। এ আয়োজন দর্শক যেমন উৎসব আমেজে উপভোগ করেছে তেমন প্রতিযোগীরাও খুশি। তাদের মতে পুরস্কার মুখ্য বিষয় নয়, ঐতিহ্যবাহী এ নৌকাবাইচ যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এ এলাকায়। এ নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে দুুপুরের পর শহরে দু-একটি অটোরিকশা ছাড়া আর কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। শহরের পুবপাশে অবস্থিত তিতাস পাড়ে মানুষ জমায়েত হয় নৌকাবাইচ দেখার জন্য। অনেকে ছোট ছোট নৌকা ভাড়া করে পরিবার-পরিজন নিয়ে নদীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী। পুরস্কার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, পৌর মেয়র নায়ার কবির, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনির কামাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহরিয়ার আল মামুন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু। প্রতিযোগিতায় জেলার সরাইল উপজেলার খেমতাপুরের শাপলা বয়েজ ক্লাব প্রথম, নাসিরনগর উপজেলার হবিপুরের ফারুক মিয়ার দল দ্বিতীয় ও বিজয়নগর উপজেলার বুল্লাগ্রামের মফিজ মিয়ার দল তৃতীয় স্থান অধিকার করে।

হবিগঞ্জ : বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ অমূল্য কুমার চৌধুরী গতকাল বলেছেন, গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপ ফিরিয়ে আনতে নৌকাবাইচের বিকল্প নেই। তিনি বাগহাটা হাওরে আয়োজিত নৌকাবাইচ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। কাগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদ আলীর পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিশিষ্ট বাউলশিল্পী প্রাণকৃষ্ণ। নৌকাবাইচে ঝিলুয়া, আড়িয়ামুগুর ও বাগাহাতা গ্রামের নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে প্রথম স্থান দখল করে নেয় বাগাহাতা গ্রামের দৌড়ের নৌকা। ১০ সহস্রাধিক দর্শক এ প্রতিযোগিতাটি উপভোগ করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর