শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে যে শহরে

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে যে শহরে

চড়ুই পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে নওগাঁ শহর। পাখির কোলাহলে ভোরে ঘুম ভাঙে শহরের মানুষের। নওগাঁ শহরের লিটন ব্রিজের পাশে অবস্থিত স্বাধীনতা ভাস্কর্য। এ ভাস্কর্যের পাশে একটি কাঁঠাল গাছ, সাতটি আম গাছ এবং রাস্তার বিপরীত পাশে বটতলীতে একটি মাঝারি পাকুড় গাছ রয়েছে। গত দুই মাস থেকে এসব গাছে আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য চড়ুই। এখন এ স্থানটি ‘পাখিবাড়ি’ নামে পরিচিত। প্রতিদিন বিকাল ও ভোরে গাছে গাছে কিচিরমিচির শব্দে জানিয়ে দেয় তাদের সরব উপস্থিতি। এদের সংখ্যা দুই থেকে আড়াই হাজারের মতো। চারপাশের গাছগুলো দখলে নিয়েছে তারা। শুধু গাছের ডালেই নয়, বৈদ্যুতিক ও ডিসের লাইনের তারেও তাদের আশ্রয়। প্রতি বছরের এ সময়ে চড়ুই পাখি ঝাঁক বেঁঁধে এখানে আশ্রয় নেয়। মাস চারেক থাকার পর আবার উধাও হয়ে যায়। ভোরে তারা খাবারের জন্য বেরিয়ে পড়ে। ফিরে আসে বিকালে। যখন ফিরে আসে তখন তাদের কিচিরমিচিরে মুখরিত হয়ে ওঠে চারদিক। পাখিদের কিচিরমিচির শোনার জন্য এবং রাতে গাছের ডালে লেপ্টে থাকা পাখিদের ঘুমিয়ে থাকার মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য স্থানীয়রা ভিড় জমান। আশপাশ থেকে ছুটে আসছেন লোকজন। তবে অনেকে এসব পাখি ছিটকা দিয়ে মারার জন্য এবং তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। পান দোকানি রেজা জানান, এ সময়ে এসব চড়ুই এখানে থাকে। পাঁচ বছর থেকে দেখে আসছেন চড়ুই পাখিদের আসা-যাওয়া। পাখি দেখার জন্য দোকান বন্ধ করে কয়েক দিন বাড়িতে দেরিতে ফিরেছেন। কয়েক দিন আগে চড়ুই পাখি মারার জন্য কয়েকজন ছিটকা নিয়ে এসেছিলেন। মারতে নিষেধ করেছি। ফলের দোকানদার আবদুল বারিক ও কাশেম আলী জানান, ঝাঁক বেঁধে পাখিদের ওড়ার দৃশ্য দেখতে ও কিচিরমিচির শুনতে ভালো লাগে। চোখের সামনে যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ কাউকে মারতে দিতে দিই না। স্থানীয় মিজানুর রহমান জানান, পাখিদের রাতে ঘুমিয়ে থাকার দৃশ্য দেখার জন্য অনেকে বাচ্চাদের নিয়ে আসছেন। পাখিবাড়ির এমন দৃশ্য ক্যামেরায় ও মোবাইল ফোনে ধারণ করে অনেকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোয় ছড়িয়ে দিয়েছেন। এমনই একজন শামীনুর রহমান শামিম। ক্যামেরায় ছবি ধারণ করতে তার খুব ভালো লাগে।

সর্বশেষ খবর