সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

উচ্ছেদ ঠেকাতে ‘শেখ জামাল’ ক্লাব প্রতিষ্ঠা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

উচ্ছেদ ঠেকাতে ‘শেখ জামাল’ ক্লাব প্রতিষ্ঠা

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) সন্দ্বীপ উপজেলার শিবেরহাট এলাকার ভিএইচএফ পিসিও স্টেশন। পিসিওর প্রতি মানুষের আগ্রহ হারিয়ে যাওয়ায় প্রায় ১০ বছর আগে বন্ধ হয়ে যায় বিটিসিএলের এই ‘পিসিও’ স্টেশনটি। বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ‘পিসিও’ স্টেশনের প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মূল্যের ১.৫২ একরের এ ভূমির ওপর দৃষ্টি পড়ে মাইটভাঙা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা  যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ও তার ভাই উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক মাকসুদুর রহমানের। তারা সরকারি জায়গাটি দখল করে গড়ে তুলেন খামার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এমনকি অবৈধ উচ্ছেদ থেকে রক্ষা পেতে শেখ জামালের নাম ব্যবহার করে ক্লাব ঘর নির্মাণ করা হয়েছে ওই জায়গায়। বিটিসিএল চট্টগ্রামের জিএম তমাল কান্তি নন্দী বলেন, ‘স্থানীয় একটি চক্র বিসিটিএলের জায়গা অবৈধ দখল নিয়েছে এ অভিযোগ পাওয়ার পর বিটিসিএল সন্দ্বীপের উপ-সহকারী পরিচালককে তা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তে তিনি অবৈধ দখলের সত্যতা পান। পরে বিটিসিএলের জায়গাটি দখলমুক্ত করতে সন্দ্বীপের ইউএনওকে অনুরোধ করা হয়েছে।’ সন্দ্বীপ উপজেলার ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বিটিসিএলের ওই জায়গার অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয়দের অভিযোগ, শিবেরহাট ‘পিসিও’ স্টেশনের ১.৫২ একরের ভূমি অবৈধ দখলে নিয়েই বিটিসিএলের রোপণ করা বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক লাখ টাকার গাছ কেটে বিক্রি করে দেয় মিজান ও মাসুদ। পরে ওই জায়গায় শুরু করেন মাছ চাষ ও চাষাবাদ। এমনকি টিনশেডের ঘর তৈরি করে দোকান ও  গাড়ির গ্যারেজ। উচ্ছেদ থেকে রক্ষা পেতে সেমিপাকা ঘর করে শেখ জামালের নাম ব্যবহার করে ক্লাব ঘর নির্মাণ করে। বিটিসিএলের জায়গা অবৈধ দখল বিষয়ে ৪ আগস্ট একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেন সন্দ্বীপ টেলিফোন এক্সেচেঞ্জের উপ-সহকারী পরিচালক ইরাদাত খান। তিনি ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, স্থানীয় মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও তার ভাই মাকসুদুর রহমান ৭ বছর আগে বিটিসিএলের দেড় একর জায়গা অবৈধ দখলে নিয়েছে। তারা ওই জায়গায় মত্স্য চাষ এবং চাষাবাদ করছে। তারা ওই জায়গায় দোকান, গ্যারেজ ও ক্লাব নির্মাণ করেছে। অবৈধ দখল অপসারণ বিষয়ে তাদের জানানো হলে, তারা বিটিসিএল কর্মকর্তাদের হুমকি প্রদান করেন। ওই জায়গায় থাকা প্রচুর গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন সন্দ্বীপ টেলিফোন এক্সেচেঞ্জের উপ-সহকারী পরিচালক। আমাদের সন্দ্বীপ প্রতিনিধি এম এ হাশেম জানান, বিটিসিএলের জায়গা অবৈধ দখলে নেওয়ার পর ওই জায়গায় খামার বাড়ির তৈরির পাশাপাশি কয়েকটি দোকান ও গ্যারেজ তৈরি করেন মিজান ও মাসুদ। সরকারি জায়গায় তৈরি করা দোকান ও গ্যারেজ বিভিন্ন জনের কাছে তারা ভাড়া দিয়েছেন। এ ছাড়া রাতে ওই জায়গায় বসে মদ ও জুয়ার আসর। অবৈধ দখলদার মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘অবৈধ দখল নয়, সরকারি জায়গা দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তাই মদ, গাঁজা, জুয়ার আড্ডা যাতে না হয় তাই বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর