শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চাল নিয়ে চালবাজি চলছেই

দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ১০ টাকা কেজির চাল নিচ্ছেন প্রভাবশালীরা

প্রতিদিন ডেস্ক

চাল নিয়ে চালবাজি চলছেই

গরিবদের জন্য সরকারের ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে বিভিন্ন স্থানে চালবাজি শুরু হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, গরিবের এ চাল সচ্ছলরা লুটপাট করে নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে বাদ যাচ্ছেন না জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে দলীয় নেতা-কর্মীরাও। যে যার মতো হরিলুট করছেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে জানা গেছে, সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা আত্মীয়স্বজন, কর্মী-সমর্থক ও বিত্তবানদের নাম দিয়েছেন। যেমন আওলাই ইউনিয়নের ভারাহুত গ্রামের ধনাঢ্য জামায়াত নেতা আবদুল মালেকের স্ত্রী সখিনা বেগমের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। এ ছাড়া সদরের বম্বু ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা খোরশেদ আলম নামে এক সেনা সদস্য এবং পুরানাপৈল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৮ বিঘা জমির মালিক শ্যামল কুমার মণ্ডলকে এ তালিকায় দেখানো হয়েছে। এসব ঘটনায় এরই মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্দেশনা পেয়ে পাঁচবিবি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তৌহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করলে ইউপি সদস্য আবদুল খালেককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পাঁচবিবি থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, এ মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া গতকাল দুপুরে পাঁচবিবি উপজেলার আটাপুর ইউনিয়নের উচাই বাজার থেকে ১০ টাকা কেজি চাল কেনাবেচার সময় ১২ মণ চালসহ চার ক্রেতা-বিক্রেতাকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন আটাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সোহেল রানা, জুয়েল হোসেন, আমিনুর হোসেন ও আমেনা বেগম। এ বিষয়ে জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘অনিয়মের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক ছাড় দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে একটি মনিটরিং কমিটিও গঠন করা হয়েছে।’ উল্লেখ্য, জয়পুরহাটে দরিদ্রদের তালিকায় বিত্তবানদের নাম, কার্ড প্রদানে অর্থ গ্রহণ, ওজনে চাল কম দেওয়া, ডিলার কর্তৃক কার্ড কিনে বেশি মূল্যে চাল বিক্রিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। এ অনিয়মের বিরুদ্ধে পাঁচবিবির আওলাই ইউনিয়নে হতদরিদ্ররা বিক্ষোভ মিছিলসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

রাজশাহী : মোহনপুর উপজেলায় ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ হচ্ছে সম্পদশালীদের মাঝে। বৃহস্পতিবার চাল না পেয়ে উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের কয়েকজন হতদরিদ্র নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই চাল বিতরণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় মোহনপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের মধ্যে ১০ টাকা কেজি মূল্যে চাল বিক্রির জন্য যে তালিকা করা হয়েছে, তা অনেকটাই ভুয়া। তালিকায় হতদরিদ্রদের নাম বাদ দিয়ে প্রভাবশালী ও ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বাকশিমইল ইউনিয়নে গাঙ্গোপাড়া গ্রামের মৃত দিলবর মৃধার ছেলে ডিলার রবিউল ইসলাম মৃধার মোহনপুর বাজার সদরে চাল বিতরণের জন্য স্থান নির্ধারিত ছিল। তিনি ওই স্থানে চাল বিতরণ না করে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে বিতরণ করেন। এরপর জাতীয় পার্টি কার্যালয় ছেড়ে উপজেলা সদর থেকে ১ কিলোমিটার দূরে যুবদল সভাপতির রাইস মিল ও চাতালের মালিকের চেম্বারে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় চাল বিতরণ শুরু করেন। গত মাসে কার্ডধারী যারা চাল উত্তোলন করেননি তারা চাল উত্তোলন করতে ডিলারের কাছে গেলে ডিলার ৩৮৪ নম্বর সুবিধাভোগী শহিদুল ইসলাম, ৪০৫ নম্বর সুবিধাভোগী আহসান, ১২০ নম্বর কার্ডের হাসান আলী, ৪১৯ নম্বর সোহেল, জাফর, রুবেল, আসাদসহ আরও অনেকের নামে আগেই চাল বিতরণ দেখিয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলার করিশা গ্রামের মহাসিন আলীর ছেলে মাসুদ রানা সরকারি নির্দেশ অনুয়ারী নিজস্ব অথবা চুক্তিনামা ঘরে চাল বিতরণ করেননি। সুবিধাভোগী রণজিৎ কুমার প্রামাণিক, অজিৎ কুমার, শাহাবুল, হাসান-৫৭২, কামাল কারিগর-৫৯৯, মোজাফফর হোসেন-৫৩৫, জব্বার আলী-৫৩৭, মোসলেম-৫০৩, রুমালী বেগম-৭৭৯, রইচ উদ্দিন-৫৬৫, নিখিল সরকার, সুনীল সরকার, বিশ্বনাথসহ শতাধিক ব্যক্তিকে দুই মাসের চাল দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, ধূরইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের ছেলে ডিলার মশিউর রহমান জুয়েল শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে উত্তোলনকৃত চাল রাখেন। সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ না করে গোপনে কালোবাজারে তা বিক্রি করে দেন। বুধবার সকাল ৯টায় চাল বিতরণ হবে জেনে শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭৬ জন সুবিধাভোগী উপস্থিত হন। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও চাল না পেয়ে তারা বিক্ষোভ করেন। এ ছাড়া রায়ঘাটি ইউনিয়নে লালইচ গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে শহিদুল ইসলাম সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে চাল উত্তোলন করে সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করেন। সেখানেও ৩০ কেজির বদলে দেওয়া হয় ২৭ কেজি। জনগণের চাপের মুখে তিনি হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে সে যাত্রা বেঁচে যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির গতকাল জানান, অনিয়ম বন্ধে এরই মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের এজন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

নেত্রকোনা : অসৎ নেতাদের কারণে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ কর্মসূচি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এ চাল যাচ্ছে ধনীদের পেটে। নামে মাত্র রয়েছে গরিবের কিছু অংশ। জানা গেছে, সব উপজেলাতেই দলীয় নেতা-কর্মী ও তাদের ছত্রচ্ছায়ায় ডিলার নিয়োগ করা হয়। আর তারা এ সুযোগে নিজেদের পছন্দমতো মা, বোন, স্ত্রী, ভাইসহ আত্মীয়দের নামের তালিকা করে চাল বিতরণ শুরু করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলমাকান্দার কৈলাটী ইউনিয়নে তদন্তও শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ডিলার নিয়োগ কমিটি দিয়ে তদন্ত চলছে। জরুরি ভিত্তিতে আমি নিজেও তদন্তে গিয়েছি।’ এদিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ জয়নাল আবেদীন জানান, কৈলাটী ইউনিয়নে দুজন ডিলার নিয়োগ করা হয়। তারা হলেন কৈলাটী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ক্ষুদ্র সিধলী গ্রামের হায়দার আলী খান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির বড় ভাই হাফানীয়া গ্রামের মজিবুর রহমান।

গাইবান্ধা : সাদুল্যাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের ইদিলপুর গ্রামের আতোয়ার রহমান ১৫ বিঘা জমির মালিক। কৃষিমজুর ও দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড পেয়েছেন তিনি। অথচ কার্ড পাননি ওই গ্রামের হতদরিদ্র কৃষিমজুর ইউনুস আলী আকন্দ; যার দুটি সন্তানের একটি প্রতিবন্ধী। ইদিলপুর ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের জন্য দেওয়া ১০ টাকার কার্ড নিয়ে চলছে এ রকম চালবাজি। এ নিয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ, সচ্ছল পরিবারকে কার্ড দেওয়াসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক নাগরিক স্বাক্ষরিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, ইদিলপুর ইউনিয়নের মোট ১৩০০ দরিদ্র ও কৃষিমজুরের বিপরীতে কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দের অর্ধেকের বেশি পেয়েছেন যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো। কার্ডপ্রতি এক থেকে দুই হাজার টাকা যারা দিতে পারেননি এ রকম তালিকাভুক্ত ২৫ ভাগ কার্ড এখনো বিতরণ করা হয়নি। ’

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে ফেয়ার প্রাইস প্রকল্পের চাল নিয়ে চলছে চালবাজি। সরকারিভাবে নিয়োগকৃত ডিলাররা নয়ছয় করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। বেলকুচি থেকে কালোবাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় ৬৫ বস্তাসহ তিনজনকে আটক করাও হয়েছে। এ ছাড়া কতিপয় ইউনিয়নে ডিলাররা দরিদ্রদের সময়মতো চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেয়ার প্রাইস প্রকল্পের আওতায় জেলার ৮৩টি ইউনিয়নে ১৬৫ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়। প্রতি জন ডিলার ৫০০ কার্ডধারী দরিদ্র মানুষের মাঝে সপ্তাহে শুক্র, শনি ও মঙ্গলবারে ১০ টাকা করে মাসে ৩০ কেজি চাল বিক্রি করবেন। কিন্তু অনেক স্থানে এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। রায়গঞ্জ উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নে দুজন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে।

ফরিদপুর : ১০ টাকা দরে চাল বিতরণে নগরকান্দা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যাপক অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে। অতিদরিদ্রদের কার্ড না দিয়ে অবস্থাপন্ন ব্যক্তিদের কার্ড দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চাল নিয়ে জালিয়াতির কারণে নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের পুরাতন তালিকা বাদ দিয়ে নতুন তালিকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খাদ্য বিভাগ থেকে। ফলে রামনগর উপজেলায় চাল বিতরণ কর্মসূচি বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া ডাংগী, চরযশোরদি, পুরাপাড়া, লস্করদিয়া, তালমা, কাইচাইল ইউনিয়নে চাল বিতরণ ও কার্ড নির্ধারণ নিয়ে চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিলার নির্ধারণের ক্ষেত্রে দলীয় প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। নগরকান্দা ও সালথা উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের বেশির ভাগ ডিলারই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা পেয়েছেন। তা ছাড়া চাল বিতরণের কার্ড নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্ব হয়েছে বলে জানা গেছে।

দিনাজপুর : দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা প্রণয়ন ও চাল বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পার্বতীপুরে নিয়ম অনুসরণ না করায় অনেক সচ্ছল পরিবার এ চাল পাচ্ছে। এ ছাড়া পার্বতীপুরের ১০ ইউনিয়নে ডিলারদের বেশির ভাগই সরকারি দলের নেতা-কর্মী বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল জলিল ব্যাপারী বলেন, ‘সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রকৃত হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা প্রণয়নের দায়িত্ব ইউপি চেয়ারম্যান ও একজন সরকারি কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত ইউনিয়ন কমিটির। এর পরও তালিকায় ত্রুটি হলে কী করার আছে? অভিযোগের কারণে তিনজন ডিলারকে কারণ দর্শানো নোটিস দেওয়া হয়েছে। দুজন জবাব দিয়েছেন এবং একজন এখনো দেননি।’

বাউফল (পটুয়াখালী) : অনিয়মের অভিযোগে গতকাল দুপুরে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির ডিলার মো. হাবিবুর রহমান সবুজকে আটক করা হয়েছে। বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আযম খান ফারুকী বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে তাকে আটক করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। ইউএনও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, ‘ওই ডিলার সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে ৫৯৫ জনের অনুকূলে ৩০ কেজি করে মোট ১৭ দশমিক ৮৫ মেট্রিক টন চাল ছাড়িয়ে নিয়ে তার নিজস্ব গুদামে সংরক্ষণ করেন। তার গুদাম থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ৫৭২ জনের প্রত্যেকের কাছে ১০ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল বিক্রি করা হয়। এরপর চাল শেষ হয়ে যায়। এর মানে বাকি ২৩ জনের ৬৯০ কেজি আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এদিকে ১০ টাকা মূল্যের চাল আত্মসাতের অভিযোগে হাবিবুর রহমান সবুজের ডিলারশিপ বাতিলসহ অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে কালাইয়া ইউনিয়নে এ ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে কালাইয়া ডিলার পয়েন্টে ১০ টাকা মূল্যের চাল বিতরণ করছিলেন। এ সময় ২৩ জন ফেয়ার কার্ডের সদস্যের চাল নিতে এলে ডিলার সবুজ চাল দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফেয়ার কার্ডের সদস্যরা চাল না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান। পুলিশসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডিলার পয়েন্ট পরিদর্শন করেন এবং ডিলার পয়েন্টে ২৩ জন সদস্যের চাল দেখতে চাইলে ডিলার সবুজ দেখাতে পারেননি।

ওই সময় সবুজকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টায় বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ফেয়ার কার্ড নীতিমালার শর্তাবলি অনুসারে প্রতি টন চালের ৩৭ হাজার টাকা মূল্য অনুসারে ৬৯০ কেজি চালের দ্বিগুণ মূল্য ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা ও ডিলারশিপ বাতিল করেন এবং ২৩ জন ফেয়ার কার্ডের সদস্যের চাল কিনে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর