রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মহারাষ্ট্রে আটক বাংলাদেশি জঙ্গি

কলকাতা প্রতিনিধি

বাংলাদেশে বোমা তৈরি, বিস্ফোরণসহ একাধিক নাশকতার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বাসিরমুল্লা সুকুরমুল্লা শেখ (৪০) নামে এক বাংলাদেশিকে আটক করেছে ভারতীয় পুলিশ। দুই বছর ধরে তিনি পলাতক ছিলেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার মহারাষ্ট্রের থানে জেলার কালবা মনীষানগর গেট থেকে একটি ডাকাতির ঘটনায় তাকে আটক করেন ক্রাইম ব্রাঞ্চের গোয়েন্দারা। ওইদিনই তাকে আদালতে তোলা হয়, ৭ নভেম্বর পর্যন্ত রিমান্ডে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই বাংলাদেশের একাধিক   জায়গায় নাশকতা সংঘটিত করার কথা জানতে পারে ভারতীয় পুলিশ। ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিসিপি পরাগ মানেরে জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরেই নবি মুম্বাইয়ের ঘানশোলি এলাকায় বাস করছিলেন এই বাসিরমুল্লা, সেখানে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। ভারতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে গত মার্চে তাকে আটক করেন মুম্বাই পুলিশের সিআইডি গোয়েন্দারা। সে সময় তার কাছ থেকে একটি পাসপোর্টও উদ্ধার করা হয়। এরপর ভারতীয় পাসপোর্ট আইন ও ফরেনার্স অ্যাক্টে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। যদিও পরে আদালত থেকে জামিন পায় তিনি।’ ক্রাইম ব্রাঞ্চের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ‘বাসিরমুল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় বাংলাদেশে থাকাকালে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর কাছ থেকে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের নড়াইল জেলায় নিজের বাড়িতে বোমাও তৈরি করেছিলেন, পরে বেশকিছু জায়গায় বিস্ফোরণও ঘটিয়েছিলেন; যেখানে বেশকিছু মানুষ নিহত হন। বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে ২০১৪ সালে নড়াইলের কালিয়া থানায় বাসিরমুল্লা ও তার সঙ্গীর বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়। এমনকি এ রকমই একটি বিস্ফোরণে নিজের স্ত্রী সুলতানাও নিহত হন। ওই ঘটনার পরই দেশ থেকে পালিয়ে যান বাসিরমুল্লা।’ ক্রাইম ব্রাঞ্চের ধারণা, ২০১৩ সালের ৪ মার্চ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ঢাকা সফরকালে রাষ্ট্রপতির হোটেলের বাইরে একটি বিস্ফোরণের ঘটনায় এই বাসিরমুল্লা জড়িত থাকতে পারেন। যদিও এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। ভারতীয় রাষ্ট্রপতির ঢাকা সফরকালে মৌলবাদী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশজুড়ে হরতালের ডাক দিয়েছিল। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ফাঁসির নির্দেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশজুড়েই সে সময় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘বাসিরমুল্লার বিরুদ্ধে আমরা যেসব সাক্ষ্য পেয়েছি সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, বাংলাদেশে একাধিক নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।’ বাসিরমুল্লার সঙ্গে কোন কোন জঙ্গি সংগঠনগুলোর যোগসাজশ রয়েছে এখন সেটাই জানার চেষ্টা করছে থানের পুলিশ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গেও সমন্বয় রেখে কাজ করার কথা ভাবছে ভারতীয় পুলিশ। পাশাপাশি ভারতের মাটিতে কোনো নাশকতা সংঘটনের পরিকল্পনা ছিল কিনা, সে বিষয়টিও পরিষ্কার হতে চাইছেন ক্রাইম ব্রাঞ্চের গোয়েন্দারা।

সর্বশেষ খবর