শিরোনাম
সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নির্বাচনের প্রস্তুতি রাজশাহীতে

আওয়ামী লীগ ফুরফুরে, বিএনপি মামলায় ভারাক্রান্ত, জাতীয় পার্টি দুর্বল

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

নির্বাচনের প্রস্তুতি রাজশাহীতে

নতুন কমিটি গঠনের পর কিছুটা হতাশ হলেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। আর বিএনপি তাদের দল নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলন ও নির্বাচন দুইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। মাঠপর্যায়ে ইতিমধ্যে দল গোছাতে শুরু করেছে দেশের বড় এ দুটি রাজনৈতিক দল। তবে পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টিও। তারা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিরোধ ও পরবর্তী ঘটনার মামলায় বিপর্যস্ত বিএনপি। সিনিয়র নেতা মিজানুর রহমান মিনু, নাদিম মোস্তফা, শফিকুল হক মিলন, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ এক হাজারের বেশি নেতা মামলা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। এর পরও নির্বাচন-আন্দোলন দুইয়ের প্রস্তুতি চলছে দলটির। নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, মামলা দিয়ে সরকার তাদের নেতা-কর্মীদের ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছে। এর পরও তারা সংগঠিত। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ইচ্ছামতো কাজ করছে। সরকারের এমন আচরণের পরও তারা কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু তাদের মাঠপর্যায়ের কাজে কোনো কমতি নেই। বিএনপির এই নেতা জানান, বিএনপি বড় দল। প্রার্থীও অনেক। কেন্দ্র চাইলে আন্দোলন, কেন্দ্র চাইলে নির্বাচন, দুটির প্রস্তুতিই তাদের আছে। সরকারবিরোধী আন্দোলন, নিরপেক্ষ সরকারের দাবি থেকে বিএনপি সরে আসেনি। বরং বিএনপি ভবিষ্যতে এ দাবি আরও জোরালো করবে। এ জন্য তৃণমূলে দলকে সংগঠিত করতে কাজ চলছে বলে দাবি বিএনপির জেলা সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপুর। তিনি জানান, এভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে সরকার তাদের দাবি উপেক্ষা করতে পারবে না। তৃণমূলে তাদের জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। ফলে তারা নির্বাচন ও আন্দোলন দুইয়ের জন্য প্রস্তুত আছেন। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা পেলেই মাঠে নেমে পড়বেন। এদিকে নতুন কমিটি নিয়ে কিছুটা হতাশ হলেও নির্বাচনের প্রস্তুতি এখনই নিতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির নেতাদের দাবি, স্থানীয় কোনো নেতা গুরুত্বপূর্ণ পদ না পেলেও নতুন কমিটির পর আওয়ামী লীগ আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, দলের প্রধানের নির্দেশে ইতিমধ্যে তারা মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তারা জনগণকে সম্পৃক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। এখন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, বিএনপির আন্দোলনের ফল সাধারণ মানুষ দেখেছে। ফলে এ নিয়ে তারা ভাবছেন না। আগের মতো আন্দোলনে বিএনপি গেলে জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে। আওয়ামী লীগের জনসম্পৃক্ততা আগের চেয়ে বেড়েছে দাবি করে এই নেতা বলেন, ‘কর্মীরা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ঐক্যবব্ধ। ভবিষ্যতেও নির্বাচনের ফল আমাদের ঘরেই আসবে।’ আওয়ামী লীগ-বিএনপির চেয়ে প্রস্তুতিতে কিছু এগিয়ে জাতীয় পার্টি। ইতিমধ্যে দলটি জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে তারা। দল গোছাতে চলছে সম্মেলনও। জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অধ্যাপক আবুল হোসেন জানান, দলের প্রধানের নির্দেশে তারা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এরশাদের কাছে প্রার্থীদের একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছে। সে তালিকা অনুযায়ী প্রার্থীরা এলাকায় গণসংযোগ চালাচ্ছেন। সবগুলো আসনে তাদের ভালো প্রার্থী আছে দাবি করে এই নেতা জানান, এবার জোটবদ্ধভাবে নয়, এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে তাদের। দলের প্রধানও এমনটা চান। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি যখন নির্বাচন নিয়ে ভাবনায়, তখন জামায়াত তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। দলটির শীর্ষ সব নেতা হয় কারাগারে, নয় তো আত্মগোপনে। দুই বছর ধরে রাজশাহীতে এ সংগঠনটির কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। এ নিয়ে জামায়াতের একাধিক নেতার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। সবগুলো ফোনই বন্ধ পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ খবর