বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাংলার মাটিতে জঙ্গিবাদের ঠাঁই নেই

আওয়ামী লীগের যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলার মাটিতে জঙ্গিবাদের ঠাঁই নেই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, রাজনীতি নিজের জন্য নয়; দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি—দেশের জন্য রাজনীতি।

গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের মুলতবি বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে কোন জায়গায় নেওয়া যায়, তার একটি রূপরেখা তৈরি করতে দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের আলাদা প্রস্তাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উপদেষ্টা পরিষদ ও কার্যনির্বাহী সংসদের অধিকাংশ সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল।

বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন। জনগণের কল্যাণ করাই আমাদের কাজ। এবারের জাতীয় সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছি আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে দরিদ্রতা থাকবে না। একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। এ জন্য মাঠপর্যায়ে তালিকা প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা তৃণমূল থেকে দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। দেশের গ্রামাঞ্চলের চেহারাও আজ পাল্টে গেছে। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমরা সেই অর্জনের পথে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার ভিশন জাতির সামনে তুলে ধরেছি। এই ভিশনও আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব। আজ গোটা বিশ্বই বলছে বাংলাদেশে ঈর্ষণীয় উন্নতি হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশকে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। বাংলাদেশের মাটিতে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের ঠাঁই হবে না। দেশের মানুষ সোচ্চার হলে এসব বন্ধ হবে। ইতিমধ্যে দেশের মানুষকে আমরা সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ করেছি। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। দেশে গণতন্ত্র নেই বলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাতির দুর্ভাগ্য যে দলটির জন্মই অবৈধভাবে, সেই দলের নেতাদের মুখে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়। তারা (বিএনপি নেতারা) এখন গণতন্ত্রের জন্য সোচ্চার হয়েছেন। যে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নির্বাচন ব্যবস্থাকে কুলষিত করেছিলেন। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছিলেন। একটি মানুষ বাসার বাইরে যেতে পারেনি। এমনকি হাসপাতালেও যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। সেই দলের নেতাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়। শেখ হাসিনা প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপি কী জিয়াউর রহমানের মতো প্রতি রাতের কারফিউ গণতন্ত্র চায়? নির্বাচন ঠেকানোর নামে তারা শত শত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। দেশব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। যারা সন্ত্রাস করেছে, তাদের নামে মামলা হয়েছে। এটা মিথ্যা মামলা নয়। যারা খুনি, সন্ত্রাসী তাদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই। কেউ রেহাই পাবে না। তিনি বলেন, যারা গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানসহ ২৪ জনকে হত্যা করেছে, যারা বলেছিল গুলি কর, মরলে শহীদ বাঁচলে গাজী তাদের বিচার হবে। খুনি ও সন্ত্রাসীদের বিচার চলছে—এ বিচার চলবে। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়েছিলেন। যুদ্ধাপরাধীর বিচার যেমন চলছে, সেই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের মদদদাতাদেরও বিচার হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল যার নিজস্ব অর্থনৈতিক পরিকল্পনা রয়েছে। দেশটাকে কীভাবে দেখতে চাই, দলীয়ভাবে পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সরকারে এসে আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করি। ইতিমধ্যে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেগুলো বাস্তবায়ন করছি। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য। আমাদের দলীয় নীতিমালা প্রণয়ন ছিল বলেই বিশ্বমন্দা থাকা সত্ত্বেও প্রবৃদ্ধির হার ৭-এ আনতে পেরেছি। তিনি বলেন, অনেকেই বিস্মিত হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করেন, কীভাবে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি, কীভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর