বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শাহজালালে ৩০০ কোটির প্রকল্প ব্যয় বেড়ে ১৭০০

রাডার স্থাপন প্রকল্প

নিজামুল হক বিপুল

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক রাডার স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ—পিপিপির মাধ্যমে তিন বছরে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও এখন প্রকল্পের ব্যয় বাড়তে বাড়তে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। অভিযোগ উঠেছে, এ অনিয়মের পেছনে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশ—সিএএবির একটি চক্র জড়িত। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা হয়েছে। এ প্রকল্পের বেশকিছু বিষয় কোয়ারি করার জন্য আমরা সিভিল এভিয়েশনকে দু-তিন দিন আগেই লিখিতভাবে বলেছি। তাদের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রাডার কন্ট্রোল টাওয়ার স্থাপন ও সংশ্লিষ্ট কমিউনিকেশন ইকোভমেন্ট স্থাপনের জন্য সিএএবির কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকার কথা বলে প্রকল্পটি প্রথম থেকেই পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে বাস্তবায়নের চেষ্টা করে সিএএবি। তাদের চেষ্টা সফলও হয়। অভিযোগ উঠেছে, এ প্রকল্পটি থেকে ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম করতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়।

জানা গেছে, ২০১২ সালে হাতে নেওয়া প্রকল্পের প্রথম বছরে ২৫০ কোটি এবং পরবর্তী ১০ বছরে ৪০ থেকে ৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সিএএবির বার্ষিক আয়ের বেশির ভাগ অংশ নিয়ে যাবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। অবশিষ্ট আয় দিয়ে সিএএবি তাদের নয়টি বিমানবন্দর ও কোটি কোটি টাকায় স্থাপিত যন্ত্রপাতি পরিচালনা করবে। অথচ সিএএবির বার্ষিক আয়ের শতকরা ৮০ ভাগ জোগান আসে এখান থেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিএএবি নিজস্ব অর্থায়নে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে বেশি লাভবান হতো। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ প্রকল্পটি নিজেরা বাস্তবায়ন করলে সিভিল এভিয়েশন বা সরকার প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার অপচয় থেকে রক্ষা পেত। কিন্তু পিপিপির মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এখন লোকসান গুনতে হবে সিএএবি ও সরকারকে। সূত্র আরও জানায়, ২০১২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পিপিপি প্রকল্পের প্রস্তাব পর্যায়ে সিএএবি তার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রদর্শন করে এবং মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশনকে বিভ্রান্ত করে প্রকল্পের অনুমোদন আদায় করে অর্থনৈতকি বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছ থেকে। সূত্র জানায়, আগামী ১০ বছরের সম্ভাব্য আয় বাড়িয়ে দেখানোর মাধ্যমে পিপিপি প্রজেক্টকে লাভজনক দেখানো হয়েছে। প্রথমে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে সিএএবি পরবর্তী ১০ বছরের জন্য ৫% প্রবৃদ্ধি দেখায়, তারপর ২০১৩ সালের জুনে তারা ৭% প্রবৃদ্ধি দেখায়। আবার একই বছর সেপ্টেম্বরে মন্ত্রণালয় পরবর্তী ১০ বছরের জন্য ১২% প্রবৃদ্ধি দেখায়। অভিযোগ উঠেছে, পিপিপিকে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক দেখানোর জন্য প্রতিনিয়ত প্রবৃদ্ধি হার পরিবর্তন করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর