বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান, তার স্ত্রী নাসরিন খান ও ছেলে ফয়সাল মোরশেদ খানকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে এ মামলা পুনঃতদন্ত করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া হংকংয়ের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে মোরশেদ খানের অর্থ আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত জব্দ রাখার আদেশ দিয়েছে আদালত। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আত্মসমর্পণ করলে বিচাররিক আদালত তাদের জামিন দিতে পারবেন। এর আগে মোরশেদ খানসহ তার পরিবারের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে করা মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে দুদকের করা আবেদনের ওপর ১ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষ হয়। এরপর রায়ের জন্য ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর মোরশেদ খান, তার স্ত্রী ও ছেলেসহ তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। এতে অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ ছিল। এরপর এ মামলায় গত বছর দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে বিচারিক আদালত তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।
হংকংয়ের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের হিসাবটি ২০০৮ সাল থেকে প্রশাসনিক আদেশে জব্দ রাখে দেশটির পুলিশ। পরে তারা বাংলাদেশে চিঠি দিয়ে জানায়, নতুন কোনো পদক্ষেপ না থাকলে ওই অ্যাকাউন্ট তারা খুলে দেবে। এই প্রেক্ষাপটে দুদক মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেয় এবং পুনঃতদন্তের জন্য বিচারিক আদালতের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ২ জুন এ বিষয়ে দুদকের দুটি আবেদনই খারিজ করে দেয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে। ৫ জুন হাইকোর্ট হংকংয়ে তাদের অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি বিচারিক আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না এবং কেন মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত। ওই রুলেরই নিষ্পত্তি করে গতকাল আদেশ দেওয়া হয়।
