বুধবার, ১১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

পরিত্যক্ত নারিকেলের মালার বিশ্ব জয়

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

পরিত্যক্ত নারিকেলের মালার বিশ্ব জয়

বাগেরহাটে পরিত্যক্ত নারিকেলের মালা বিশ্ব জয় করেছে। দেশ আয় করছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। বাগেরহাটের এক সময়ের পরিত্যক্ত নারিকেলের মালা দিয়ে তৈরি গহনাসহ বিভিন্ন দ্রব্য এখন রপ্তানি হচ্ছে এশিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। হাতে তৈরি এসব পণ্য বিশ্ব বাজার জয়ের পাশাপাশি কর্মস্থান হচ্ছে অনেক নারীর। নারিকেলের উচ্ছিষ্ট মালা দিয়ে তৈরি এসব রপ্তানি পণ্য তৈরিতে নারী উদ্যোক্তারা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে একদিকে দরিদ্র নারীদের পাশাপাশি দেশের আয় হবে আরও বৈদেশিক মুদ্রা। বাগেরহাটের বিসিক শিল্প নগরীতে ২০১১ সালে নুরজাহান এগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী উৎপাদনের পাশাপাশি ‘কোকো সেল বাটন ইউনিট’ নামে পরিত্যক্ত নারিকেলের মালা দিয়ে বোতাম তৈরির কাজ শুরু করে। দেশ-বিদেশে ওই নারিকেলের মালার বোতামের চাহিদা বাড়ায় বোতামের পাশাপাশি নারিকেলের মালা দিয়ে নানান জুয়েলারি সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। দিন দিন চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় জুয়েলারি পণ্য সামগ্রী চুড়ি, কানের দুল, হার, কোমরের বিছা, হ্যান্ডব্যাগ, পার্টসব্যাগ, বোতাম, ওয়ালম্যাট, টেবিলসহ বিভিন্ন সোপিচ তৈরি করছে। এই কারখানায় ২৫ থেকে ৩০ জন নারী শ্রমিক নিজ হাতে তৈরি করছেন এসব পণ্য। প্রতিদিন একজন নারী শ্রমিক দুই থেকে আড়াইশ টাকা পারিশ্রমিক পাচ্ছেন। কোকো সেল বাটন ইউনিটে স্থানীয় অসহায় দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে পণ্য তৈরি করায় যেমন সৃষ্টি হয়েছে কর্মস্থান তেমনি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নারিকেলের মালা দিয়ে তৈরি পণ্য এখন রপ্তানি হচ্ছে আমেরিকা, লন্ডন, কোরিয়ায়সহ বিভিন্ন দেশে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই অপ্রচলিত শিল্প থেকে একদিকে যেমন নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে অন্যদিকে আয় হবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। বাগেরহাট কোকো সেল বাটন ইউনিট ইনচার্জ ও নারী উদ্যোক্তা আনোয়ারা মনজু বলেন, নারিকেলের মালার একটা বিরাট সম্ভাবনার দিক রয়েছে। এই পরিত্যক্ত মালা দিয়ে আমরা দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নানা প্রকার গহনা তৈরি করছি। এতে একদিকে অসহায় নারীদের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের তৈরি জুয়েলারি আমেরিকা, লন্ডন ও উত্তর কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ব্যাপক চাহিদা আছে এবং বাজারজাত করা হচ্ছে। বিশ্ববাজারে এই অপ্রচলিত পণ্যের শিল্প সামগ্রীর বিপুল চাহিদা থাকায় ভবিষ্যতে অন্যদেশগুলোতে আমরা বাজারজাত করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

সর্বশেষ খবর