শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

হাজার বিঘা জলাশয়ের ইজারামূল্য ৭০ হাজার টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

জলাশয়ের আয়তন ১ হাজার ১৭৫ বিঘা। সরকারি এ জলাশয়টিতে আট বছর ধরে মাছ শিকার করে আসছেন স্থানীয় ৪৬৮ জন জেলে। বিনিময়ে সরকারকে তারা দিচ্ছেন জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে বছরে ৭০ হাজার ২০০ টাকা।

তবে তানোরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিলুফা ইয়াসমিন জানান, ‘এ নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। সরকারিভাবে ইজারামূল্য কত হবে তা নির্ধারণ করা না থাকায় তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর ইজারামূল্য আদায় করা হবে।’

উপজেলা মত্স্য অফিস সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে মত্স্য মন্ত্রণালয়কে বিল ইজারার বিধি হস্তান্তর করে পরিপত্র দেওয়া হয়। পরে পরিপত্রে ‘মা’ মাছ সংরক্ষণের জন্য তানোর উপজেলার বিলকুমারী বিলের বিলজোয়ানী ও ধানতৈড় মৌজার ২ একর মুক্ত জলাশয়ে অভয়াশ্রম স্থাপনের জন্য কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেখানে মাছের অভয়াশ্রম স্থাপনের পর বিলজোয়ানী ও ধানতৈড় মৌজার ১ হাজার ১৭৫ বিঘা অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয় ইজারা প্রদানের জন্য ২০১০ সালে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করা হয়। পরিপত্রে বলা হয়, নিবন্ধনকৃত মত্স্যজীবীকে ১ বিঘা জলাশয়ে মাছ ধরার জন্য ১ হাজার টাকা ইজারামূল্য দিতে হবে। তবেই ওই জলাশয়ে সারা বছর মাছ ধরা যাবে। সেই মোতাবেক উপজেলা মত্স্য অফিস জলাশয় ইজারা কমিটি করে প্রতি বছর শতকরা ১০ ভাগ মূল্য বৃদ্ধি করে ইজারা আহ্বান করবে। ইজারামূল্য পরিশোধের পর নিবন্ধিত মত্স্যজীবীরা মাছ ধরতে পারবেন। এসব বিধিনিষেধ গোপন রেখে উপজেলা মত্স্য অফিস মত্স্যজীবীদের কথিত সমিতির মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে বিলের অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয় ও দুটি অভয়াশ্রমের ‘মা’ মাছ নিধনের জন্য ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর মেলার আয়োজন করে। সেই থেকে প্রতিজন জেলে মাত্র ১৫০ টাকা দিয়ে এই বিলে মাছ শিকারের সুযোগ পাচ্ছেন। ইজারা পাওয়া কথিত মত্স্য সমিতির সভাপতি দর্শনাথ হালদার জানান, বিলটি তাদের কাছে। তারা ছাড়া কেউ ওই বিলের মালিক নয়। মত্স্য কর্মকর্তার নির্দেশে তারা মাছ ধরেছেন। সরকারি ইজারামূল্য পরিশোধের বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে মত্স্য বিভাগ জানিয়েছে, গত আট বছরে সরকার এ বিল থেকে প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে। উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা আরাফাত সিদ্দিকী জানান, বিলকুমারী বিলের অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয় ইজারার পরিপত্র সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন না। এ কারণে বিগত বছরগুলোয় মত্স্যজীবীরা ইজারা ছাড়াই মাছ শিকার করেছেন। ইজারামূল্য আদায়ে তিনি পদক্ষেপ নেবেন।

সর্বশেষ খবর