রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

গাইবান্ধায় নিখোঁজ আরও দুজন ফিরলেন

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের নিখোঁজ চার নেতার অপর দুই নেতা নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইদুল ইসলাম প্রিন্স এবং নলডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম শাপলা এবার নিখোঁজের ১১ দিন পর গতকাল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ি ফিরেছেন। এর আগে ১০ দিন পর বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ি ফেরেন নিখোঁজ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ সহ-সভাপতি ও দামোদরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনোয়ারুল হাসান জিম মণ্ডল এবং দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদেক। এই চার নেতা নিখোঁজ হওয়ার পর সাদুল্যাপুর থানায় অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি করে নিখোঁজদের পরিবার। এ ছাড়া তাদের সন্ধান দাবিতে উপজেলা শহর ও নলডাঙ্গায় মিছিল, মিটিং, হরতাল-অবরোধ, মানববন্ধন, থানা ঘেরাও কর্মসূচি ও সংবাদ সম্মেলন করেন এলাকাবাসী ও স্বজনরা। তাদের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু জেলা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের কোনো সন্ধান দিতে পারেননি। নিখোঁজ মাইদুল ইসলাম প্রিন্সের বড় ভাই নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তার ভাই প্রিন্স মোবাইল ফোনে জানান, তারা দুজন এখন দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার খোলাহাটির ট্যাক্সের হাট এলাকায় অবস্থান করছেন। এরপর সাদুল্যাপুর থেকে মাইক্রোবাস নিয়ে গিয়ে তাদের বাড়িতে আনা হয়। মাইদুল ইসলাম প্রিন্স জানান, কয়েকজন সাদা পোশাক পরা লোক শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে তাদের চোখ বাঁধা অবস্থায় মাইক্রোবাসযোগে একটি ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে রেখে যায়। তারপর তারা বলে, ‘সামনের সড়কে তোমার মোটরসাইকেল রাখা আছে। ওটি নিয়ে সোজা বাড়ি চলে যাও।’ তিনি জানান, তারা দুজন ওই মোটরসাইকেলযোগে সামনের দিকে কিছুদূর যাওয়ার পর দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার খোলাহাটির ট্যাক্সের হাট এলাকায় পৌঁছান। সেখান থেকে বড় ভাই চেয়ারম্যান নয়নকে ফোন করেন। পরে নয়ন মাইক্রোবাসযোগে রাত ৩টার দিকে তাদের বাড়ি নিয়ে আসেন। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত নলডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম শাপলা জানান, কারা তাদের ধরে নিয়ে গেছে এবং ১১ দিন তারা কোথায় ছিলেন তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তবে এক জায়গায় তাদের পাশাপাশি কক্ষে চোখ বাঁধা অবস্থায় এ কয়েক দিন রাখা হয়েছিল। তিনি জানান, তাদের কোনো জিনিস খোয়া যায়নি। এ ছাড়া এর মধ্যে তিনি অসুস্থ হলে ডাক্তার ডেকে এনে তার চিকিৎসাও করানো হয়েছে। সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরহাদ ইমরুল কায়েস জানান, তাদের ফিরে আসার কথা তিনি শুনেছেন। তবে কীভাবে তারা ফিরে এলেন তা তিনি এখনো জানতে পারেননি। প্রসঙ্গত, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের এমপি লিটন হত্যার পর জেলায় অতিরিক্ত পুলিশসহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্তকাজে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় ১১ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাদুল্যাপুরের নলডাঙ্গা রেলগেট থেকে প্রিন্সকে এবং কাচারীবাজার এলাকা থেকে শাপলাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর