বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

আলো জ্বালিয়ে পোকা শনাক্ত

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

আলো জ্বালিয়ে পোকা শনাক্ত

কুমিল্লায় ফসল রক্ষায় ক্ষতিকর পোকামাকড়ের সন্ধানে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে। জেলার প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে এ কার্যক্রম চলছে। এ পর্যন্ত জেলায় দুই সহস্রাধিক আলোক ফাঁদ বসিয়ে পোকা শনাক্ত করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার সূত্র জানায়, ধানের জমির পাশে তিনটি খুঁটির মাঝে একটি চার্জলাইট ঝুলানো হয়। নিচে একটি গামলায় সাবান মেশানো পানি রাখা হয়। পোকা পানিতে পড়ে মারা যায়। এ পোকা দেখে ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এতে কীটনাশকের ব্যবহার কম হয়। চলতি মৌসুমে এ জেলায় ১ লাখ ৭ হাজার ২১৩ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে ওই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। এদিকে কৃষকদের উৎপাদিত এসব ফসলে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপদ্রব দেখতে জেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আলোক ফাঁদ ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। গত অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এ কার্যক্রম শুরু হয়। চলতি নভেম্বরে এ কর্মসূচি শেষ করা হবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্যোগে মাসব্যাপী এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রজেক্টরের মাধ্যমে পোকার পরিচিতি এবং ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় সম্পর্কে কৃষকদের বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার দুতিয়াপুর গ্রামের কৃষক মো. সুমন জানান, এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পোকা শনাক্ত করার কারণে জমিতে কীটনাশক বেশি ব্যবহার করতে হয় না। জমিতে কঞ্চি পুঁতে দিলেও পাখি বসে অনেক পোকা খেয়ে ফেলে। এতে অনেকটা বিষমুক্ত ফসল পাওয়া যায়। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, কুমিল্লায় এ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকার মধ্যে মাজরা, পাতা মোড়ানো, চুঙ্গি, সবুজ পাতা ফড়িং ও নলিমাছি শনাক্ত করা গেছে। এদের মধ্যে সবুজপাতা ফড়িংয়ের উপদ্রব বেশি পাওয়া গেছে। এসব পোকামাকড় দমনে আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. আসাদুল্লাহ জানান, ক্ষতিকর পোকামাকড় সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার জন্য আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে। জেলার প্রতিটি ব্লকেই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এ কার্যক্রম মনিটরিং করছেন এবং কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর