শিরোনাম
শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

উপচে পড়া ভিড় বাণিজ্য মেলায়

শেষ হচ্ছে আজ

আকতারুজ্জামান

উপচে পড়া ভিড় বাণিজ্য মেলায়

মাঘের শেষে শীতের প্রকোপ কমে যাওয়ায় গতকাল সকাল থেকেই ক্রেতা সমাগম ছিল বাণিজ্য মেলায়। দুপুরের পর থেকে এ জনসমাগম অনেকটা জনস্রোতে রূপ নেয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা গতকাল মুখরিত ছিল দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের আনাগোনায়। মেলার শেষদিকে এসে স্টলে স্টলে নানা বাহারি অফার আর ছাড় পেয়ে ক্রেতারাও যেমন স্বাচ্ছন্দ্যেই কেনাকাটা করেছেন তেমনি তৃপ্তির হাসি ছিল বিক্রেতাদের মুখেও। দীর্ঘ এক মাস চার দিনের বাণিজ্য মেলা শেষ হবে আজ। ছুটির দিনে গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাণিজ্য মেলায় ছিল নানা শ্রেণি পেশার মানুষের উপচে পড়া ভিড়। মিষ্টি রোদের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীও। গতকাল লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ছিল মেলায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে স্টলগুলো। হাঁড়ি-পাতিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্রোকারিজ পণ্য, ইলেকট্রনিক দ্রব্য, প্লাস্টিক পণ্য, খেলনা, তৈরি পোশাক, জুয়েলারি ও ফ্যাশনেবল বিভিন্ন পোশাকের সমাহার লক্ষ্য করা গেছে মেলায়। মেলায় মোট ৫৭০টি স্টল থাকলেও ব্লেজার ও শীতের চাদর বা শালের স্টল বেশি লক্ষ্য করা গেছে। শেষভাগে এসে স্টলে স্টলে ক্রেতাদের জন্য দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন অফার ও ছাড়। ‘আখেরি অফারে’ রুচিশীল বিভিন্ন ব্লেজার পাওয়া গেছে মাত্র এক হাজার থেকে এক হাজার ৩০০ টাকার মধ্যেই। অথচ কয়েকদিন আগেও এর দাম ছিল দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার। মাত্র ২০০ থেকে শুরু করে আড়াই হাজার টাকায় মিলবে হাতের কারুকাজসহ দেশি-বিদেশি শাল ও চাদর। গতকাল কক্সবাজার থেকে মেলায় কেনাকাটা করতে এসেছিলেন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত মনিরুজ্জামান। ব্লেজারে আকর্ষণীয় ছাড় পেয়ে তিন হাজার টাকায় তিনটি ব্লেজার কিনেছেন। তার স্ত্রী রুমা জানান, ৮০০ টাকায় তিনি কাশ্মীরি শাল কিনেছেন। প্লাস্টিক পণ্য সামগ্রীসহ ক্রোকারিজ পণ্যের কালেকশন ছিল চোখে পড়ার মতো। নামকরা ব্র্যান্ডের প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা ক্রেতাদের তুলনামূলক বেশি বলে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। আরএফএল, বেঙ্গল, তানিন, পার্টেক্স ও হ্যামকো ব্র্যান্ডের বিশাল প্যাভিলিয়ন রয়েছে মেলায়। এ ছাড়া অন্য নিত্যপণ্যের সঙ্গে মেলায় আসা প্রতিষ্ঠানগুলো প্লাস্টিক পণ্যও বিক্রি করছে। মেলা উপলক্ষে প্রতিটি প্যাভিলিয়নে চলছে নির্দিষ্ট আইটেমের ওপর নানা অঙ্কের ছাড়। বিভিন্ন কোম্পানির ফার্নিচার সামগ্রীতেও ছিল ছাড়। আগ্রহীরা পছন্দের আসবাবপত্র ক্রয়ের পাশাপাশি বুকিংও দিয়েছেন। হাতিল ফার্নিচারের সেলস্ এক্সিকিউটিভ হাসান জানান, মেলায় প্রতিটি পণ্যেই দেওয়া হচ্ছে ৫ শতাংশ ছাড়। দেশি-বিদেশি কসমেটিকস ও জুয়েলারি পণ্যেরও সমাহার রয়েছে মেলায়। ৫১ নম্বর স্টল সাজানো হয়েছে কোরিয়ান কসমেটিক দিয়ে। ৫৮ নম্বর স্টলে ভ্যারাইটি খাদ্যপণ্যের সমাহার রয়েছে। মূল্যছাড়ে প্যাকেজ ভিত্তিক খাদ্যপণ্য বিক্রি করছে প্রাণ, বিডিফুড, বঙ্গজসহ বিভিন্ন কোম্পানি। রাজধানীর মালিবাগ থেকে সপরিবারে কেনাকাটা করতে মেলায় এসেছিলেন সাজেদুর রহমান। তিনি জানান, মেলায় মানসম্মত পোশাকপণ্য মিলছে সাধ্যের মধ্যেই। আকর্ষণীয় ডিজাইনের থ্রি-পিস, টপস্, লেহেঙ্গা মিলছে ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে। দেশি-বিদেশি শাড়ি পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে। শীত উপলক্ষে নকশি কাঁথার কালেকশনও ছিল চোখে পড়ার মতো। বিদেশি বিভিন্ন বোরকা, নেকাব মিলবে ইরানি পণ্য সমাহার প্যাভিলিয়নে। ৫৭ নম্বর স্টলের এফজি ও ৫০ নম্বর স্টলের কে জেড স্টলে মিলবে বাহারি আর মনকাড়া ডিজাইনের ঘড়ি আর জুয়েলারি পণ্য। মাত্র ৪৫০ থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকায় এই ঘড়ি পাওয়া যাবে। মেয়েদের হ্যান্ডব্যাগ, ট্রলিব্যাগসহ বিভিন্ন ব্যাগের সমাহার বসেছে মেলায়। ৫২ নম্বর স্টলে সুরভি গিফট কর্নারসহ অন্তত দশটি স্টলে মিলবে মনোলোভা ডিজাইনের ব্যাগগুলো। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান প্রমোট করতে স্টল বসিয়েছে। একইসঙ্গে দর্শনীয় স্থানগুলোর ছবি সংবলিত রং-বেরঙের ফেস্টুন ও ক্যালেন্ডারও বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। টিকিট বিক্রির ইজারাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক মীর শহীদুল আলম বলেন, শেষ দশ দিনে মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। গতকাল (শুক্রবার) লক্ষাধিক মানুষের জনসমাগম ঘটেছিল মেলায়।

 

সর্বশেষ খবর