রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
প্রাণেরমেলা প্রতিদিন

দর্শক আছে নেই ক্রেতা

মোস্তফা মতিহার

দর্শক আছে নেই ক্রেতা

ভিড় বাড়তে শুরু করেছে প্রাণের বইমেলায় —জয়ীতা রায়

মেলার চতুর্থ দিনে দর্শনার্থীর তুলনায় ক্রেতা ছিল খুবই কম। তবে বিভিন্ন স্টল ঘুরে অনেককে ক্যাটালগ সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। তাতে মনে হচ্ছিল হয়তো পরে কোনো একদিন এসে তারা পছন্দের বইগুলো কিনবেন। ক্যাটালগ সংগ্রহের পাশাপাশি মেলাপ্রাঙ্গণে যুগল আর সপরিবারে সেলফি তোলা ছাড়া দর্শনার্থীদের হাতে বই খুব একটা দেখা যায়নি। গতকাল ছিল মেলার দ্বিতীয় ছুটির দিনের দ্বিতীয় শিশুপ্রহর। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ছোট্ট সোনামণিরা হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। বাবা-মায়ের হাত ধরে শিশু কর্নারের স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে পছন্দের বই কেনে। বই কেনায় গতকালও বড়দের চেয়ে এগিয়ে ছিল শিশুরা।

নতুন বই : অমর একুশে গ্রন্থমেলার তথ্যকেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গতকাল ১৩৯টি নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে গল্প ২৯, উপন্যাস ১৮, প্রবন্ধ ৭, কবিতা ২৮, গবেষণা ২, ছড়া ৩, শিশুসাহিত্য ৪, জীবনী ১, রচনাবলি ২, মুক্তিযুদ্ধ ৬, নাটক ২, বিজ্ঞান ১, ভ্রমণ ৬, ইতিহাস ১, রাজনীতি ২, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য ১, কম্পিউটার ১, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ২ এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর এসেছে ২৩টি বই। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক মোস্তফা কামালের ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস ‘অগ্নিকন্যা’ এনেছে পার্ল পাবলিকেশন্স, অনিন্দ্য প্রকাশ এনেছে মোহিত কামালের ‘দুখু দ্বিতীয় খণ্ড’, অন্যপ্রকাশ এনেছে আনিসুল হকের ‘সেরা দশ গল্প’, হুমায়ূন আহমেদের ‘মিসির আলী দশ’, অনন্যা এনেছে মনজুরে মাওলার ‘শিখিয়েছিলাম’, নির্ণায়ক প্রকাশনী এনেছে অসীম সাহার ‘রাজনৈতিক কবিতা’।

শেষ হলো আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন : আলোচনা সভা ও বাংলা কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে গতকাল বাংলা একাডেমিতে শেষ হয়েছে চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন। সকাল ১০টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে অনুবাদ সাহিত্য বিষয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাপনী দিনের কার্যক্রম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অনুবাদক অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস। আলোচনায় অংশ নেন আবদুস সেলিম। সভাপতিত্ব করেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। বিকাল ৩টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে শিশু-কিশোর সাহিত্য বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিশুসাহিত্যিক রাশেদ রউফ। আলোচনায় অংশ নেন আলী ইমাম, রফিকুর রশীদ ও লুত্ফর রহমান রিটন। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ। বিকাল ৫টায় মূলমঞ্চে বাংলা নাট্যসাহিত্য বিষয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাজেদুল আউয়াল। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর সভাপতিত্বে এ পর্বের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাট্যজন চন্দন সেন ও সুদীপ চক্রবর্তী। সন্ধ্যায় অমর মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বরচিত কবিতা পাঠ। জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে বাংলাদেশের কবিদের পাশাপাশি কবিতা পাঠ করেন আমন্ত্রিত সুইডিশ কবি ক্রিস্টিয়ান কার্লসন।

শহীদুল্লা কায়সারের বই নিয়ে দুই প্রকাশকের টানাহেঁচড়া : শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের ‘সংশপ্তক’, সারেং বৌ’ ও ‘রাজবন্দীর রোজনামচা’ নামের তিনটি বই নিয়ে দুই প্রকাশকের মধ্যে টানাহেঁচড়া শুরু হয়েছে। চারুলিপি প্রকাশনের হুমায়ূন কবির ও জোনাকী প্রকাশনীর মঞ্জুর হোসেন দুজনই দাবি করছেন দুটি বইয়ের স্বত্ব তাদের রয়েছে। বিষয়টি প্রসঙ্গে শহীদুল্লা কায়সারপত্নী অধ্যাপিকা পান্না কায়সার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘চারুলিপি আমার কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে বইগুলো প্রকাশ করে কিন্তু জোনাকী আমার এবং আমাদের পরিবারের অনুমতি ছাড়াই প্রকাশ করেছে। আর এ নিয়ে ২০০০ সালে আমি রমনা থানায় মামলাও করি। জোনাকী প্রকাশনীর মালিক আমাদের টাকা দেওয়া দূরের কথা অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি। ফোন করলে তিনি আমার ফোন পর্যন্ত রিসিভ করেন না।’ ৩ মার্চ আদালতে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বলেও জানান পান্না কায়সার। অভিযোগ সম্পর্কে জোনাকীর মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘পান্না কায়সারের ফোন রিসিভ না করার ধৃষ্টতা আমার নেই। আমার কাছে চুক্তিপত্র আছে। এত বড় একজন সম্মানিত মানুষ আমার বিরুদ্ধে কেন মামলা করলেন তা আমার জ্ঞানের বাইরে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে আশা করি আদালতেই তার সুরাহা হবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর