শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বসুন্ধরায় পোলট্রি মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বসুন্ধরায় পোলট্রি মেলা

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, প্রাণিজ আমিষে অন্যতম উৎস পোলট্রিশিল্পের জন্য সরকার আন্তরিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন দেশের পোলট্রিশিল্পে বিপ্লব চলছে। এখন পোলট্রিতে কোনো খামারি নেই, সব কোম্পানিতে রূপ নিয়েছে। এ শিল্পে এখন বিনিয়োগের পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি টাকা। গতকাল রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা—আইসিসিবিতে তিন দিনব্যাপী দশম আন্তর্জাতিক পোলট্রিমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ আয়োজিত মেলায় দেশি-বিদেশি প্রায় ৫০০ প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, ছোট্ট পরিসরে কীভাবে পোলট্রিশিল্প গড়ে তোলা যায়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় তা তুলে ধরা হয়েছে। সারা দেশ থেকে এসেছেন উদ্যোক্তারা। তাদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রকৌশলীরা। শুধু পোলট্রিশিল্প নয়, এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত খাদ্য উৎপাদনের মেশিনারিজ প্রদর্শন  করা হচ্ছে। মাত্র একজন অপারেটরের সাহায্যে চলবে মেশিন। এখানে উদ্যোক্তা নিজেদের নাম-ঠিকানা দিয়ে দিলেও প্রকৌশলীরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে স্থাপন করে দেবেন কারখানা। অল্প বিনিয়োগেই হওয়া যাবে শিল্পপতি। এখানে পরিদর্শনে আসা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এত সুন্দর একটি আয়োজন সত্যিই দেশের শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য একটি মাইলফলক। জানা গেছে, এ মেলায় বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যাড, কোরিয়া, তাইওয়ান, চীন, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, জাপান, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ ১৮টি দেশের শতাধিক প্রতিষ্ঠান পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে। মেলায় প্রদর্শনী ছাড়াও কারিগরি সেশনে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা অংশ নিয়ে তুলে ধরছেন পরিবেশবান্ধব কৃষিভিত্তিক শিল্পের সম্ভাবনা। দেশে কৃষিজাত পণ্যের সঙ্গে পোলট্রিশিল্পের বিশাল এই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হচ্ছে মেশিনারিজ, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর নানা শিল্পপণ্য। প্রযুক্তিগত ধারণা দিতেই এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে। এখানে ভোক্তা থেকে শুরু করে সারা দেশের উদ্যোক্তারাও এসেছেন। ঘুরে ঘুরে দেখছেন, কথা বলছেন। মেলার আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু উদ্যোক্তরা নয়, সাধারণ গ্রাহকদের কাছে উৎপাদিত মাংস, ডিম প্রক্রিয়াজাতকরণ, পণ্যের মান কীভাবে রক্ষা করা হয়, পণ্য প্যাকেটজাত করা হয়, দেশে পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা মেলা পরিদর্শন করতে পারবেন। মেলা চলবে আগামীকাল পর্যন্ত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন পোলট্রিশিল্প উন্নতির দিকে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই হানা দেয় অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা। আমরা এর প্রতিষেধক নিয়ে আসি। এরপর শুরু হয় পোলট্রিশিল্পের বিপ্লব।’ মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৭ সালে দেশে পোলট্রিশিল্পের আবির্ভাব হলেও অল্প দিনেই উন্নতি সাধন করে। বাংলাদেশে যখন এই রোগ ছড়ায়, তখন ২০০৭ সালের সরকারে অনেক শিক্ষিত লোক থাকলেও এর প্রতিষেধক নিয়ে কেউ ভাবেননি। ২০০৯ সালে আমাদের সরকার এসে ওই ভাইরাসজনিত রোগের প্রতিষেধক নিয়ে আসে। আর এতেই পোলট্রিশিল্পে বিপ্লব শুরু হয়।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান সামছুল আরিফিন খালেদ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর