সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

দেশ দারিদ্র্যমুক্ত করতে শিক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশ দারিদ্র্যমুক্ত  করতে শিক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তার কার্যালয়ে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারদের মধ্যে আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার একমাত্র উপায় হিসেবে সরকার শিক্ষার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আধুনিক শিক্ষিত জাতি গড়ে তুলতে সব শিক্ষার্থীর জন্য সরকারের দেওয়া শিক্ষা সুবিধা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ডের উপদেষ্টা পরিষদের চতুর্থ সভায় সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে গুরুতর আর্থিক সংকট সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর সরকার একটি শিক্ষিত জাতি গঠনে প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এবং নারীদের শিক্ষাকে অবৈতনিক করেন এবং নারীদের শিক্ষাকে সম্পূর্ণ পরিপূরক করেন। তিনি বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার পর সরকারগুলো ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে সাধারণ মানুষকে শিক্ষাসহ তাদের মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত করেছে। সবার জন্য শিক্ষা এবং মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করায় তার সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বছরের প্রথম দিনই সরকার প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করে অভিভাবকদের এই সংক্রান্ত খরচ লাঘব করেছে। তিনি বলেন, স্কুলগুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, বিজ্ঞান গবেষণাগারসহ জ্ঞানভিত্তিক আধুনিক শিক্ষা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি তার সরকার পার্বত্য অঞ্চলে এবং হাওর এলাকায় আবাসিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে। বৈঠকে বলা হয়, সরকার ২০১৫-১৬ শিক্ষা বছরে ১ কোটি ৬৬ লাখ ৪৫ হাজার ৭৭৭ জন শিক্ষার্থীর মাঝে মোট ২ হাজার ৪৬৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি, বৃত্তি ও অন্যান্য বৃত্তি বিতরণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা চালুর পর থেকে দেশে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ভালো হচ্ছে। আগামীতে বাঙালি জাতি একটি সুশিক্ষিত, উচ্চপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে উঠবে। একটা জাতিকে সুস্থভাবে গড়ে তুলতে হলে তার ভিত্তিটাকে মজবুত করে গড়ে দিতে হবে। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণ করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করেছিলেন, নারী শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সময়ে ৩৬ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জাতীয়করণ হয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর আরও ২৬ হাজার স্কুল জাতীয়করণ করি। এর মাঝে আর কেউ কিছু করেনি। কারণ পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তাদের শিক্ষা-দীক্ষার দিকে তেমন নজর ছিল না। অবৈধভাবে দখল করা ক্ষমতাকে কীভাবে কুক্ষিগত করে রাখবে সেদিকেই তারা বেশি নজর দিয়েছে। আর জনগণ সবচেয়ে অবহেলিত ছিল।

খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক অনুদান প্রদান : এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে দুজন বীরশ্রেষ্ঠ এবং ১০ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের মধ্যে আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রত্যেকে তিন লাখ টাকার চেক গ্রহণ করেন। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর