শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভার বৈঠকে খসড়া অনুমোদন

ব্যাংক পরিচালনায় থাকতে পারবেন পরিবারের চারজন

এক ছাতার নিচে বিনিয়োগকারীদের সব সেবা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে একটানা নয় বছর পরিচালক পদে থাকার এবং এক পরিবার থেকে কমপক্ষে চার সদস্যকে পরিচালক পদে রাখার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন ২০১৭-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। একই বৈঠকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এক ছাতার নিচ থেকে সবরকম সেবা নিশ্চিত করতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন ২০১৭-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালকরা তিন বছর করে দুই মেয়াদে টানা ছয় বছর পরিচালক থাকতে পারেন। দুই মেয়াদ শেষে তিন বছর বিরতি দিয়ে আবারও তিন বছরের জন্য পরিচালক হতে পারেন। সংশোধিত আইনটি সংসদে পাস হলে তিন বছর করে একটানা তিন মেয়াদে টানা নয় বছর তারা পরিচালক থাকতে পারবেন। নয় বছর মেয়াদ শেষে তিন বছর বিরতি দিয়ে আবারও তারা নয় বছরের জন্য পরিচালক হওয়ার সুযোগ পাবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তিন বছর বিরতি দিয়ে আমৃত্যু পরিচালক থাকতে আইনে কোনো বাধা নেই। তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের দাবি ছিল, যারা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন, তাদের যেন ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকও সম্মতি দিয়েছে।

প্রস্তাবিত এই আইনের অন্য একটি ধারায় বলা হয়েছে, ব্যাংকে একই পরিবারের চারজন সদস্য পরিচালক থাকতে পারবেন। বিদ্যমান আইনে দুজন পর্যন্ত পরিচালক থাকার বিধান রয়েছে। সংশোধিত আইনটি সংসদে পাস হলে একটি বেসরকারি ব্যাংকে এক পরিবারের চারজন একই সঙ্গে পরিচালক থাকার সুযোগ পাবেন।

এদিকে মন্ত্রিসভা বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় ব্যাংক আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা উদ্যোক্তা তারা যদি চলে যায়, তারপর যারা আসবে তারা তো লুটেপুটে চলে যাবে। তাদের কোনো দায়বদ্ধতা থাকবে না। মমত্ববোধ থাকবে না। যারা এটি প্রতিষ্ঠা করল তারা থাকলে তাদের দায়বদ্ধতা থাকবে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন : বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে এবং বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করার করার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা দিতে এক ছাতার নিচে ১৬ ধরনের সেবা দিতে নতুন আইন করছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম এ আইন সম্পর্কে জানান, ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ‘ডুয়িং বিজনেস ২০১৭’ প্রতিবেদনে ১৮৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬তম। সরকার আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে এই সূচকে এক শর নিচে নামিয়ে আনতে চায়। সেটা করতে গেলে বিনিয়োগ পরিবেশ ভালো করতে হবে, বিনিয়োগবান্ধব করতে হবে, সেজন্য একটা শর্ত ছিল ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন প্রবর্তন করা। তিনি বলেন, এ আইন হলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষ (বেপজা)এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ‘কেন্দ্রীয় ওয়ান স্টপ সার্ভিস কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এই কর্তৃপক্ষ ওয়ান স্টপ সার্ভিস থেকে ১৬ ধরনের সেবা দেবে তারা। যার মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স, জমি রেজিস্ট্রেশন, নামজারি, পরিবেশ ছাড়পত্র, নির্মাণ অনুমোদন, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংযোগ, টেলিফোন-ইন্টারনেট সংযোগ, অগ্নিনির্বাপণ সেবা, বিস্ফোরক লাইসেন্স, বয়লার ১৬ ধরনের সেবা দেওয়া হবে।

এক জায়গায় থেকেই এসব সেবা দেওয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিনিয়োগকারীদের কোন সেবা কত দিনের মধ্যে দিতে হবে তা বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হবে। কেউ বিধি না মানলে তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শফিউল আলম বলেন, বিদেশিদের জন্য ভিসা ও ইমিগ্রেশন ?প্রক্রিয়া সহজ করতেও কিছু সুবিধার কথা থাকছে এ আইনে। ওয়ান স্টপ সার্ভিস বা বিনিয়োগ বোর্ড আগেও ছিল কিন্তু সেটি বেশি কার্যকর হয়নি কারণ আইনি কাঠামো ছিল না। এখন আইনের ফ্রেমওয়ার্কে চলে আসবে। কেউ যদি ফেল করে বা কমপ্লাই না করে, তাহলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর