শনিবার, ১৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

রূপগঞ্জে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর অস্ত্রের মহড়ায় আতঙ্ক

রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

রূপগঞ্জে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর অস্ত্রের মহড়ায় আতঙ্ক

বাদল - মোশারফ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী শফিকুর রহমান বাদল ও মোশারফ হোসেন মোশার নেতৃত্বে অস্ত্রের মহড়ায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল আউয়াল জানান, শনিবার (আজ) দুপুরে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের তালাশকুট এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা শমসের মিয়ার বাড়িতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে তিনিসহ রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শাহজাহান ভূইয়া, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ রফিকুল ইসলাম রফিক, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ আবুল বাশার টুকু, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মো. ইয়ার হোসেনসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

এ বিয়ের আনুষ্ঠানকে ভণ্ডুল করতে রূপগঞ্জের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী ২১ মামলার আসামি কায়েতপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সফিকুর রহমান বাদল ও ৪ হত্যাসহ ৩৩ মামলার আসামি কায়েতপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মোশা বাহিনীর সদস্য ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এতে বিয়েবাড়ির লোকজনসহ সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী জানায়, র‌্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়া আসামি সফিকুর রহমান বাদল ও মোশারেফ হোসেন মোশা যুবলীগের পদ পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী মিলে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ অস্ত্র মজুদ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে কায়েতপাড়ার তালাশকুট এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালানোর পাঁয়তারা করছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শাহজাহান ভূইয়া বলেন, রূপগঞ্জে যুবলীগের কমিটিতে এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসীদের রাখায় বিয়ের অনুষ্ঠান করতেও মানুষ ভয় পায়। এ কারণে রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছে।   

কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, এই দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর কারণে কায়েতপাড়ার মানুষ অতিষ্ঠ। তাদের গ্রেফতার করা না হলে রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না। রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ আবুল বাশার টুকু বলেন, সন্ত্রাসীদের নেতৃত্ব দিয়ে জনগণের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল আউয়াল বলেন, যুবলীগের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে শীর্ষ দুই পদে এ দুই সন্ত্রাসীকে রাখায় এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কে আছে। তারাব পৌর যুবলীগের সভাপতি আবদুল আউয়াল বলেন, রূপগঞ্জের ত্যাগী নেতাদের যুবলীগের কমিটি থেকে বাদ দিয়ে সন্ত্রাসীদের যুবলীগের কমিটিতে রাখা হয়েছে এতে আমরা শঙ্কিত।

রূপগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী সফিকুর রহমান বাদলকে দেড় বছর আগে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ র‌্যাব গ্রেফতার করে। র‌্যাবের মামলায় বেশ কিছু দিন জেল খেটেছেন তিনি। মোশা বাহিনীপ্রধান মোশাররফ হোসেন মোশা আট মাস ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেফতারের ভয়ে পলাতক ছিলেন। বর্তমানে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর এলাকায় অস্ত্রসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন।

সূত্র জানায়, উপজেলার নাওড়া এলাকায় গত কয়েক বছরে জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় এক সময়ের ছিঁচকে চোর মোশাররফ নিরীহ মানুষের জমি দখল শুরু করেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি যুবলীগ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। অবৈধ উপায়ে জমি দখল করে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হন তিনি। এর পরই গঠন করেন বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। বর্তমানে ৩০০ অস্ত্রধারীর একটি বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই মোশাররফ।

সর্বশেষ খবর