মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

সেনানিবাসে শৃঙ্খলা ভঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের যে কোনো ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় রাস্তাঘাটে মলমূত্র ত্যাগ, মাতলামি, ভিক্ষাবৃত্তি বা জুয়া খেলার শাস্তি হিসেবে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে সেনানিবাস আইন-২০১৭ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ১৯২৪ সালের ‘ক্যান্টনমেন্টস অ্যাক্ট’কে পুনর্বিন্যস্ত করে নতুন এই আইন করা হচ্ছে। আগের আইনের ২৯২টি ধারা থেকে অনেক বাদ দিয়ে এবং নতুন কিছু সংযোজন করে মোট ২১৮টি ধারা রাখা হয়েছে এই খসড়ায়। বিভিন্ন অপরাধের জন্য ৯০ বছর আগে যে জরিমানা নির্ধারণ করা ছিল সেগুলোর পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। আর্থিক জরিমানার বিধান বাড়ানো হয়েছে ৪৩টি বিষয়ে। প্রস্তাবিত আইনে সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেনানিবাস এলাকায় অবৈধ নির্মাণের জন্য আগে ৫০০ টাকা জরিমানা থাকলেও প্রস্তাবিত আইনে তা কমপক্ষে ২০ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সড়কের সরকারি ভূমি খনন করলে জরিমানা ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ২ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত খসড়ায়। জনগণের দৃষ্টির সামনে খোলা অবস্থায় মাংস বহন, বিকলাঙ্গতা ও ব্যাধি অনাবৃত করে প্রদর্শন, মাতলামি, ভিক্ষাবৃত্তি, জুয়া খেললে, রাস্তাঘাটে মলমূত্র ত্যাগ করলে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। আগের আইনে এই জরিমানার পরিমাণ ছিল এক টাকা। তিনি বলেন, সেনানিবাস এলাকায় বেসরকারি বাজার বা কসাইখানা স্থাপন করলে শাস্তি ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর লাইসেন্স ছাড়া বাজার বা কসাইখানা খুললে জরিমানা ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করলে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার কথা বলা হয়েছে। আগে এই অপরাধের শাস্তি ছিল ২০০ টাকা। তথ্য দিতে অবহেলা করলে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে নতুন খসড়ায়। আগে এ জরিমানা ছিল ১০০ টাকা। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ট্রাফিক নিয়ম অমান্য করলে কমপক্ষে দুই হাজার এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগে এ জরিমানা ছিল ৫০ টাকা। আতশবাজি ফোটালে বা গুলি ছুড়লে কমপক্ষে ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে প্রস্তাবিত খসড়ায়। আগে এর শাস্তি ছিল মাত্র ৫০ টাকা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, বসত বাড়ি জরাজীর্ণ থাকলে জরিমানার সর্বনিম্ন ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা। আগে এর পরিমাণ ছিল ৫০ টাকা। পশুকে আবর্জনা খাওয়ালে জরিমানার পরিমাণ ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অবৈধভাবে পানি ব্যবহার করলে আগের ৫০ টাকা জরিমানা বদলে এখন গুনতে হবে কমপক্ষে ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা। ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সরকারি কাজে বাধা দিলে জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে কমপক্ষে ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আগে এই জরিমানার পরিমাণ ছিল ১০০ টাকা।

ভবনের কাজ শেষ করার ক্ষেত্রে বিলম্বে আগে জরিমানার কোনো বিধান না থাকলেও প্রস্তাবিত আইনে সময়সীমা বর্ধিতকরণের আবেদন তিনবারের বেশি হলে ২০ হাজার টাকা এবং পাঁচবারের বেশি বাড়ানোর ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার কথা বলা হয়েছে। অনুচিত উদ্দেশ্যে পতিত জমিতে ঘের দিলে এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগে এ ক্ষেত্রে জরিমানার বিধান ছিল না। সিনেমা প্রদর্শনীর জন্য প্রস্তাবিত আইনে জরিমানার বিধান রাখা হয়নি। আগের আইনে ২০০ টাকা জরিমানার বিধান ছিল।

সর্বশেষ খবর