শিরোনাম
সোমবার, ১২ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজধানী থেকে ১২২ রুটে থাকছে ১৪ হাজার বাস

আজ থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি

মোস্তফা কাজল

এবারের ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের সেবায় থাকছে ১৪ হাজার বাস। রাজধানী থেকে এসব বাস দেশের ১২২ রুটে চলাচল করবে। এ ছাড়া আজ থেকে শুরু হচ্ছে ঈদ সার্ভিসের দূরপাল্লার বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে ১৫ জুন থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি পরিবহন মালিকদের নিয়মিত ১০ হাজার বাসের পাশাপাশি বিশেষ প্রয়োজন মেটাতে আরও তিন হাজার বাস মজুদ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) নিয়মিত যানবাহনগুলোর পাশাপাশি থাকছে আরও এক হাজার বিশেষ সার্ভিস। যাত্রী হয়রানি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অতিরিক্ত দাম ঠেকাতে প্রশাসন, যাত্রী প্রতিনিধি, শ্রমিক ও মালিকদের সমন্বয়ে বিশেষ একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এবারের ঈদে স্বল্প দূরত্বের বাসগুলো দৈনিক দুই থেকে তিনবার যাতায়াত করবে। আর দূরপাল্লার বাসগুলো একটি করে ট্রিপ দেবে। সব মিলিয়ে বর্তমানে ঢাকা থেকে ১০ হাজার ভালো বাস প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যাবে। ঈদের জন্য আরও তিন হাজার বাসের ব্যবস্থা রয়েছে। যদি প্রয়োজন মনে হয় সেই বাসগুলোও সড়ক ও মহাসড়কে নামানো হবে। এ বছর যে কোনো হয়রানি রোধেও নেওয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা। বাস মালিক সমিতি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিন আগে থেকে এই কমিটি নগরীর বাস টার্মিনালগুলোতে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম চালাতে শুরু করেছে। ঈদ যাত্রা শুরু হলে পুরোদমে মাঠে থাকবে এই কমিটি। এনায়েত উল্লাহ আরও বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরও আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। পুলিশ,  র‌্যাব, মালিক, শ্রমিক ও যাত্রী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে কাজ করবে। এখন থেকে প্রতিটি টার্মিনাল বা বাস কাউন্টারে বিশেষ সচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ করা হবে। এই কমিটি সবখানে বিশেষ মনিটরিং করবে। এ ছাড়া বিআরটিসির জিএম বাবুল কান্তি শীল জানান, এই ঈদে প্রাথমিক বৈঠকে বিআরটিসির ৯০০ স্পেশাল বাস সার্ভিস নামানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বাইরে আরও ১০০টি বাস রিজার্ভ থাকবে। যদি কোনো রুটে কোনো বাসের সমস্যা হয় তাহলে রিজার্ভ বাসগুলো সেগুলোর পরিবর্তে যাত্রা করবে। প্রতিবছরের মতো এ বছরও বিআরটিসির সাতটি ডিপো থেকে বিআরটিএর স্পেশাল সার্ভিসগুলো ছেড়ে যাবে। এসব ডিপো থেকে পাওয়া যাবে বিআরটিএর অগ্রিম টিকিটও। ডিপোগুলো হচ্ছে— মতিঝিল, গাজীপুর, জোয়ারসাহারা, উথলী, নারায়ণগঞ্জ, কল্যাণপুর এবং মহাখালী দ্বিতল বাস ডিপো। আজ থেকে বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে। ঈদযাত্রায় বাসের টিকিটের দাম না বাড়ানোর নির্দেশ থাকলেও প্রতিবছর ঈদের সময় এই টিকিট দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি করেন বাস মালিকরা। এ ঈদেও এমনটা হবে কিনা জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, টিকিটের কোনো দাম বাড়ছে না। যদি কেউ এর দাম বাড়ায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো যাত্রী যদি অতিরিক্ত দামের টিকিট আমাদের কাছে জমা দেন আইন ও সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সোহেল তালুকদার ফারুক বলেন, আজ ঢাকা থেকে সারা দেশের বিভিন্ন রুটের বেসরকারি বাসের টিকিটও বিক্রি শুরু হবে।

জানা গেছে, টিকিটে ভাড়া আদায়কারী যে কোনো বাসেই নারী, প্রতিবন্ধী ও শিশুদের জন্য কোনো সংরক্ষিত আসন থাকছে না। বিআরটিএর পক্ষ থেকে বাসে কমপক্ষে ছয়টি আসন সংরক্ষিত ঘোষণা করলেও স্বল্প দূর বা দূরপাল্লা কোনো বাসই তা মানছে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনায়েত উল্লাহ বলেন, আসলে দূরপাল্লার বাসে এ সুযোগ নেই। সবাই তো টিকিট কিনেই বাসে ওঠেন। কেউ দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন না। এখানে সবার জন্য আসন সমান।

লঞ্চের অগ্রিম টিকিট ১৫ জুন থেকে : ঈদ উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১৫ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে। গতকাল ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল মিলনায়তনে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগ আয়োজিত সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় জানানো হয়, আগামী ১৫ জুন সকাল থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের কাউন্টার থেকে ভিআইপি এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিনের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। সভায় আরও বলা হয়, লঞ্চের অগ্রিম টিকিটের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হবে এবং ঈদ উপলক্ষে ২০ জুন থেকে নিয়মিত লঞ্চের বাইরে বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু করবে। নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক আবু জাফর হাওলাদারের সভাপতিত্বে সভায় বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর এম. মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর