রবিবার, ২৫ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা
শেষ মুহূর্তেও ব্যস্ততা তরুণীদের

ভিড় টুপি জায়নামাজের দোকানে

মোস্তফা কাজল

ভিড় টুপি জায়নামাজের দোকানে

ঈদের কেনাকাটায় ভিড় বেড়েছে রাজধানীর টুপি, জায়নামাজ ও আতরের দোকানগুলোতে। দেশ-বিদেশের বাহারি টুপি, আতর ও জায়নামাজের পসরা নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে শেষ মুহূর্তের  কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তরুণীরা। রাজধানীর শপিংমল ও বিভিন্ন মার্কেটে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ থেকে শুরু করে প্রসাধনী কিনতে ভিড় করেন তারা। পছন্দের কসমেটিকস কিনতে বেশি ভিড় দেখা গেছে  বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, গাউসিয়া, চাঁদনী চক, মৌচাক ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে।

এদিকে নতুন নতুন ডিজাইন আর কম দামের দেশি ও বিদেশি টুপির চাহিদা বেশি বলে অভিমত বিক্রেতাদের। এ বছর রাজধানীসহ দেশের বাজারে পাকিস্তান ও চীনে তৈরি টুপির চাহিদা বেড়েছে। দেখা গেছে, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট, গুলিস্তান, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, কাঁটাবন মসজিদ মার্কেট, কাকরাইল মসজিদ মার্কেটসহ ফুটপাথের বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে বিদেশি টুপি, জায়নামাজ ও আতর। ডিজাইন, কাপড়ের বৈচিত্র্য ও কম দামের কারণে পাকিস্তান ও চীনের তৈরি টুপির চাহিদা বেশি। এ ছাড়া তুরস্ক, ভারত, সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া থেকে আসা টুপিও বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দামের টুপি বিক্রি হচ্ছে ডিজাইন ভেদে। পাকিস্তানের বুগিজ ও স্টোন টুপি চোখে পড়বে প্রতিটি দোকানে। এসব টুপি পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। চীনা টুপির দাম ১৮০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। তুরস্ক  থেকে আসা টুপি মিলছে ৩০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায়। সৌদি আরবের টুপি পাওয়া যায় ২০০ টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। বাংলাদেশে তৈরি টুপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের আল মোত্তাকিম হাউজের স্বত্ব্বাধিকারী মো. আলামিন বলেন, মানুষ এখন নতুন নতুন ডিজাইনের টুপি পরতে চায়। মূলত এ কারণে চীনা ও পাকিস্তানি টুপির চাহিদা বেশি। এছাড়া তুর্কি টুপি, পাগড়ি টুপি, গোল টুপি, জালি টুপিও বিক্রি হচ্ছে বেশি। কেন বিদেশি টুপি বেশি বিক্রি হয় এমন প্রশ্নের জবাবে ইসলাম টুপি হাউসের বিক্রয়কর্মী জাহিদ হাসান বলেন, আমাদের এখানে পাকিস্তানের বুগিস, স্টোন টুপি, মালয়েশিয়ার বেলবেট মাহতির টুপি, ইন্ডিয়ান বুরি টুপির চাহিদা বেশি। বিদেশি টুপি প্রতি বছর নতুন নতুন ডিজাইনে আসে। ডিজাইনের ভিন্নতা যেমন আছে, তেমনি দাম খুব বেশি না। আর ভালো মানের দেশি টুপি  তো সবই রপ্তানি হয়ে যায়, আমাদের লোকাল মার্কেটে সেসব পণ্য আসে না। শুধু টুপি নয়, জায়নামাজের বাজারও বিদেশি পণ্যের দখলে। নকশা ও কাপড়ের ধরন ভেদে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা দামের জায়নামাজ পাওয়া যায়। পাকিস্তান, তুরস্ক ও সৌদি আরবের জায়নামাজ বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। এছাড়া চীন, ভারত, বেলজিয়াম, সিরিয়ার তৈরি জায়নামাজ পাওয়া যায় বাজারে। জায়নামাজ সিঙ্গেল ও ডাবল এই দুই প্রকারের এবং মান ভেদে দামের ভিন্নতা থাকে। দেশি সুতি কাপড়ের জায়নামাজ ১০০ থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তুরস্কের আইডিন কোম্পানির জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার টাকায়। পাকিস্তানি জায়নামাজ ৫০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়, ভারত ও বেলজিয়ামের তৈরি জায়নামাজ পাওয়া যায় ৫ হাজার টাকার মধ্যে। সিরিয়ার ভেলভেট কাপড়ের তৈরি জায়নামাজ ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের ইসলাম কালেকশন হাউসের বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, নরম ও দেখতে সুন্দর জায়নামাজের প্রতি ক্রেতাদের চাহিদা বেশি।  দেশি সুতির জায়নামাজের চাহিদাও আছে। তবে পাকিস্তান, তুরস্ক ও সৌদি আরবের মখমল ও ভেলভেট কাপড়ের তৈরি জায়নামাজ বেশি চলে।  এদিকে ঈদ উপলক্ষে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সুবাসের আতর বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, আতর যত পুরনো হয় দাম তত বেশি। দুবাই, ফ্রান্স, সৌদি আরব, কম্বোডিয়া, ভারত, বুলগেরিয়া থেকে বেশি আতর আসে। এছাড়া দেশি আল মীম, সুলতান, কেপিপি, স্কয়ার, আলিফ নামের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দেশি আতরও বিক্রি হচ্ছে। আতর ছাড়াও বাহারি ডিজাইনের আতরের দানি (বোতল) পাওয়া যায়। কাচ ছাড়াও বিভিন্ন ধাতুর মিশ্রণে তৈরি এসব আতরদানি বিক্রি হয় ৫০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা জানান, বিভিন্নভাবে প্রস্তুত হয় আতর। এর মধ্যে রাসায়নিকভাবে তৈরি আতরের দাম তুলনামূলকভাবে কম। ১০০ মিলিলিটারের  বোতলে ম্যাডার রোজ আতর ১ হাজার ৬০০ টাকায়, লর্ড ১ হাজার টাকায়, সিলভার ১ হাজার ৭০০ টাকায়, ইগুবস দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কম্বোডিয়ান আগর আতর তোলা প্রতি (১ তোলায় ১১.৬৬ গ্রাম) ৬৪ হাজার টাকায়, ভারতের চন্দনকাঠের তৈরি আতর  তোলাপ্রতি ৪ হাজার টাকায়, গোলাপের আতর তোলাপ্রতি ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। দেশীয় আতর পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। সিলেটের আগর গাছ থেকে তৈরি আতর বিক্রি হয় তোলাপ্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকায়। বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের খুশবু কালেকশনের বিক্রেতা জহুরুল ইসলাম বলেন, আতরবেশি আমদানি করা হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে। স্টাইল উদ, হাটকরা উদ, হোয়াট উদ, আগর, আম্বার, দরবার, জান্নাতুল ফেরদৌস, রোজ আইটেমের চাহিদা বেশি। দুবাইয়ের হোয়াট উদ ৬ হাজার টাকা আর আগর বিক্রি হয় ৩২ হাজার টাকা তোলা। আতরের মান ও ধরন ভেদে দামের ভিন্নতা থাকে।

সর্বশেষ খবর