রবিবার, ২৫ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঈদ ঘিরে প্রস্তুত বিনোদন কেন্দ্র

জয়শ্রী ভাদুড়ী

ঈদ আনন্দ বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত রাজধানী এবং দেশের দর্শনীয় স্থান ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানুষ ভিড় জমায় চিড়িয়াখানা, শিশু পার্ক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, নন্দন পার্ক, ফ্যান্টাসি কিংডম এবং সিলেট, কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে। তাই মানুষের ঈদ আনন্দকে পূর্ণ মাত্রা দিতে শেষ মুহূর্তের পরিষ্কার-পরিড়বছন্নতা কার্যক্রম চলছে বিনোদন কেন্দ্রগুলোয়। রং করার পাশাপাশি পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা হড়েবছ রাইডগুলো। ফাঁকা ঢাকায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগটা এবারও কাজে লাগাবে রাজধানীবাসী। ঢাকা থেকে দূরে হলেও, প্রধান প্রধান থিম পার্কগুলো নিয়ে রেখেছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এসব থিম পার্কে আনন্দঘন সময় কাটাবেন শহুরে মানুষ। সব বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠবে বিনোদন কেন্দ্রগুলা। রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত শিশু পার্কটি অনেক পুরনো। শহরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় প্রতি ঈদেই শিশুদের কোলাহলে মুখরিত হয় বিনোদন কেন্দ্রটি। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শিশু পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে সব রাইড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। কোনো সমস্যা থাকলে তা ঠিক করা হয়েছে। রং নষ্ট হয়ে যাওয়া কোনো কোনো

রাইডে নতুন রং করা হয়েছে। এ ছাড়া শিশু পার্কে ব্যবস্থা করা হয়েছে বাড়তি আলোকসজ্জার। এর পাশাপাশি পার্কের পরিবেশ পরিড়বছন্ন করা হয়েছে। পার্কের দায়িত্বপঊাপ্ত কর্মকর্তা জানান, শিশু পার্কে বর্তমানে ১০টি রাইড রয়েছে। ঈদের প্রথম চার দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পার্ক। ঈদে প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার দর্শনার্থী আসেন এই পার্কে। ঈদের ছুটিতে বহু মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে চিড়িয়াখানায় আনন্দঘন সময় কাটান। প্রতিদিনের মতোই সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার দর্শনার্থী চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করেন। তাদের সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে কয়েকটি কমিটি। চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার-পরিড়বছন্নতার কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া র‍্যাব-পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি আইনশৃঙ্খলা জোরদারে কাজ করবে বলে তিনি জানান। থিম পার্কগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় ফ্যান্টাসি কিংডম। প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে এখানে ঢল নামে দর্শনার্থীর। পার্কের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ফ্যান্টাসি কিংডম। ঈদের ছুটিতে নন্দন পার্কে ভিড় জমায় আনন্দপ্রিয় মানুষ। পার্ক কর্তৃপক্ষ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ঈদের দিন সকাল থেকেই খোলা থাকবে পার্ক। এ ছাড়া ঈদ আনন্দ বাড়িয়ে দিতে বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। এই বিনোদন কেন্দ্র ছাড়াও ঈদের ছুটিকে আরও মধুর করে তুলতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিনোদনপ্রিয় মানুষ ভিড় জমায় পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে। আমাদের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, পর্যটকবরণে প্রস্তুত কক্সবাজার। ইতিমধ্যে সাগরপাড়ের তারকা হোটেলগুলোয় আগাম রুম বুকিংও নিয়েছেন পর্যটকরা। তবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’সহ তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড়ধসের ধাক্কা লেগেছে কক্সবাজারেও। তবে বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে পর্যটনে যোগ হয়েছে দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক। কক্সবাজারের কলাতলি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভ সড়ক মাত্র সোয়া ১ ঘণ্টায় পাড়ি দেওয়া যায়। একপাশে সাগরের নীল ঢেউ আর অন্যপাশে পাহাড়ের সবুজ হাতছানিতে মেরিন ড্রাইভ সড়ক এখন পর্যটকদের কাছে নতুন আকর্ষণ। ঈদে ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম পছন্দের জায়গা কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। আমাদের কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, পর্যটকদের ঈদ আনন্দ পরিপূর্ণ করতে সার্বিক ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছেন হোটেল মালিকরা। ট্যুরিস্ট বোর্ড মালিক সমিতির পরিচালক হোসাইন আমির জানান, ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের নেঙঊপথে ভ্রমণের জন্য নেঙঊকাগুলো তৈরি রাখা হয়েছে। পাহাড় আর ঝরনার হাতছানি দেয় পর্যটকদের জনপ্রিয় স্থান সিলেট। আমাদের সিলেট প্রতিনিধি জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও পর্যটকদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত সিলেট। তবে খানাখন্দে ভরা রাস্তা ভোগান্তি ডেকে আনে পর্যটকদের জন্য। কিন্তু ঈদের আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি আর বান্দরবানের পাহাড়ধস। আমাদের রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, ঈদ মেঙঊসুমে পর্যটকশূন্য রাঙামাটি শহর। জীবনযাত্রা এখানে স্থবির। পাহাড়জুড়ে শোকের নিস্তব্ধতা, নেই ঈদের কোনো আমেজ। আমাদের মেঙঊলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত।

সর্বশেষ খবর