বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
ট্রাফিক সার্জেন্টকে মারধর

জবি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বাংলামোটরে উল্টোপথে চলাচলে বাধা দেওয়ায় রমনা বিভাগের ট্রাফিক সার্জেন্ট কায়সার হামিদকে মারধরের ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল দুপুরে সার্জেন্ট কাওসার হামিদ বাদী হয়ে রমনা থানায় তিনটি দোতলা বাসের চালক এবং জবির ৩০-৪০ জন অজ্ঞাত ছাত্রকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহারে তিনি মারধর, ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলা এবং প্রাণনাশের হুমকির কথা উল্লেখ করেন। এ ছাড়া তাকে ‘হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে মারধর’ করা হয়েছে বলে দাবি করেন। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দায়িত্বরত সার্জেন্ট বাসটিকে উল্টোপথে না গিয়ে সঠিক পথে যাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু বাস তিনটি উল্টোপথে দাঁড়িয়ে গাড়ি চলাচলের পথ আটকে রাখে। গাড়ির চালককে দ্রুত গাড়ি সরিয়ে সঠিক পথে যাওয়ার জন্য বলতে না বলতে অজ্ঞাতনামা ৩০-৪০ জন ছাত্র ডাকচিৎকার দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে সার্জেন্টের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং উল্টোপথেই তাদের যেতে দিতে হবে বলে জোরজবরদস্তি করতে থাকেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বাসগুলো থেমে থাকার কারণে ফার্মগেট পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট কমাতে তখন সার্জেন্ট বাস তিনটি সঠিক পথে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। উল্টোপথে তাদের যেতে না দেওয়ায় জবির অজ্ঞাতনামা ৩০-৪০ জন ছাত্র সার্জেন্টকে ঘিরে ধরে প্রাণনাশের হুমকি দেয়, এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে এবং পরিহিত ইউনিফর্মের বিভিন্ন অংশ ছিঁড়ে ফেলে। সার্জেন্টের তাত্ক্ষণিক চিৎকারে কর্তব্যরত টিআই দেলোয়ার হোসেন ও সার্জেন্ট আনিসুল হক ছাত্রদের হাত থেকে কায়সার হামিদকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠান। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে অনুরোধ করেন সার্জেন্ট কায়সার হামিদ। সরকারি কর্মচারীর সরকারি কার্য সম্পাদনে বাধাদানের অভিযোগে কায়সার হামিদ মামলায় দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারা, সরকারি কর্মচারীকে কর্তব্য থেকে বিরত রাখার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করায় ৩৩২ ধারা, সরকারি কর্মচারীকে তার কর্তব্য পালনে বাধাদানের নিমিত্তে আক্রমণ ও অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ করায় ৩৫৩ ধারা এবং তাকে প্রাণনাশের উদ্যোগ নেওয়ায় ৩০৭ ধারার কথা উল্লেখ করেন। এগুলোর মধ্যে দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারার অভিযুক্ত আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এ বিষয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার জানান, সার্জেন্ট কায়সার হামিদকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় কারা কীভাবে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, সোমবার জবির তিনটি দোতলা বাস উল্টোপথে গেলে বাধা দেন কায়সার হামিদ। এ সময় জবি শিক্ষার্থীরা টেনেহিঁচড়ে তার ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেন। এমনকি তাকে তারা প্রাণনাশের হুমকিও দেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর