শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

শীত আসার আগেই ব্যস্ত সবজি চাষিরা

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

শীত আসার আগেই ব্যস্ত সবজি চাষিরা

শীতের আগমনী বার্তা জেনেছে প্রকৃতি। তবে এখনো দিনে বেশ গরম অনুভূত হচ্ছে। পুরো শীত না পড়লেও কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে বগুড়ার গ্রামাঞ্চলে। এই শীতকে সামনে রেখে বগুড়ায় শুরু হয়েছে শীতকালীন সবজি চাষ। জেলায় মোট সবজি উৎপাদিত হবে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের তথ্য ও সেবা দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। কৃষি অফিস বলছে, আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকায় জেলায় এবারও বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মাঝে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চাষিরা শীত সবজি হিসেবে সিম, বাঁধা কপি, ফুল কপি, শীতকালীন বেগুন, বরবটি, মুলা চাষাবাদ শুরু করেছেন। সবুজে সবুজে শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে খেতের পর খেত। এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মূলা, করলা, পটোল, পালং ও লাল শাকসহ শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজি। বগুড়া জেলায় গত মৌসুমে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে শবজি চাষ করা হয়। আর ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টন। এ বছর প্রাথমিকভাবে সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। এ পরিমাণ জমিতে সবজির ফলন পাওয়া যাবে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন। বগুড়ায় শীতকালে সবজি ও ফসল মিলিয়ে প্রায় ৪৫ প্রকার সবজি চাষবাস হয়ে থাকে। এরই মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। কৃষকরা কিছু কিছু সবজি উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন।

বগুড়ার শহরের ফতেহ আলী বাজারের সবজি বিক্রেতা আলমাস হোসেন জানান, শীত আসার আগেই আগাম জাতের বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলা, বরবটি, পাওয়া যাচ্ছে। যদিও বাজারে আগাম জাতের শীত সবজির দাম বেশি। বর্তমান বাজারে ফুল কপি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি। শাজাহানপুর উপজেলার খরনা গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, বিভিন্ন গ্রামে চাষকৃত সবজি জমা হয় উপজেলার নয়মাইল নামক স্থানে। সেখানে বড় সবজির হাট বসে। সেই হাটে উৎপাদিত সবজি বিক্রি করা হয়। সে হাট থেকে বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা সবজি নিয়ে যায় ট্রাকে করে। হাটবার নয় প্রায় প্রতিদিনই সবজি কেনাবেচা হয়। সদর উপজেলার কাজীনুরইল গ্রামের আবুল কালাম জানান, আগামজাতের মুলা বা বাঁধাকপি আকারে ছোট হয়। এই ছোট সবজির বাজারে দাম ভালো পাওয়া যায়। এ কারণে অনেক কৃষক আগাম জাতের সবজি চাষ করে থাকেন। এখন পর্যন্ত সবজির চাষ ভালো হয়েছে। পুরোদমে শীত সবজি এখনো চাষ হয়নি। আগাম জাতের শীত সবজি চাষ হয়েছে। তবে কিছু কিছু খেতে বাধা কপির পরিচর্যা চলছে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, বগুড়ার শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর, শেরপুর, গাবতলী, বগুড়া সদর, কাহালু উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে সবজির চাষ হয়ে থাকে। গত বছর সবজির ভালো ফলন পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। প্রায় আইড়াই লাখ মেট্রিক টন ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে সবজি চাষে পুরো ঝুঁকে পড়বেন চাষিরা। এবারও ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

সর্বশেষ খবর